জাতীয়

‘রাষ্ট্রদ্রোহিতা’র অভিযোগে মাহফুজ আনামের বিচার চান জয়

জনপ্রিয় ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ এনে তার বিচার চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়।শুক্রবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আনেন তিনি। এরআগে ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি দেয়া এক স্ট্যাটাসেও একই ধরনের অভিযোগ এনেছিলেন জয়। প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা জয় তার স্ট্যাটাসের শুরুতেই লিখেছেন, ‘মাহফুজ আনাম, দ্যা ডেইলি স্টার সম্পাদক, স্বীকার করেছেন যে তিনি আমার মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অপবাদ আরোপ করতেই তার বিরুদ্ধে মিথ্যা দুর্নীতির গল্প ছাপিয়েছিলেন। তিনি সামরিক স্বৈরশাসনের সমর্থনে আমার মাকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দিতে এই কাজ করেছিলেন।’ এরপর দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি নিউজপোর্টালে গতকাল প্রকাশিত একটি সংবাদের লিংক দিয়েছেন জয়। ইংরেজি ও বাংলা দু’ভাষাতেই লেখা স্ট্যাটাসের দ্বিতীয় অংশে বলা হয়েছে, ‘একটি প্রধান সংবাদপত্রের সম্পাদক সামরিক বিদ্রোহে উস্কানি দিতে যে মিথ্যা সাজানো প্রচারণা চালায় তা রাষ্ট্রদ্রোহিতা।’এরপর জয় লিখেছেন, ‘তিনি অব্যাহতভাবে রাজনীতিকদের বিরুদ্ধে তাদের অনৈতিকতা এবং দুর্নীতিগ্রস্থ হবার কথা লিখেন। তার নিজের স্বীকারোক্তি মতে তিনি নিজেই পুরোপুরি অনৈতিক এবং একজন মিথ্যাবাদী। তার অবশ্যই একজন সাংবাদিক হিসেবে থাকার কোন অধিকার নাই, সম্পাদক তো অনেক দূরের বিষয়। তার কার্যক্রম দুর্নীতিকেও ছাড়িয়ে গিয়েছে; যা দেশপ্রেমহীন এবং বাংলাদেশ বিরোধী।’স্ট্যাটাসের একদম শেষ অংশে লেখা হয়েছে, ‘আমার ব্যক্তিগত মত, তার মিথ্যা গল্পের উস্কানি আমার মাকে গ্রেফতার করিয়েছে এবং ১১ মাস তিনি জেলে কাটিয়েছেন। আমি বিচার চাই। আমি চাই মাহফুজ আনাম আটক হোক এবং তার রাষ্ট্রদ্রোহিতার বিচার হোক।’ শুক্রবার সকাল ১০টা ১৭ মিনিট পর্যন্ত ওই স্ট্যাটাসে ৩ হাজার ১শ ৭৬ জন লাইক দিয়েছেন; যার মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকও রয়েছেন। ২৪৪ জন মন্তব্যও করেছেন ওই স্ট্যাটাসের নিচে। এছাড়া স্ট্যাটাসটি শেয়ারও করেছেন ৩৩৮ জন। এরআগে ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারির স্ট্যাটাসে জয় লিখেছিলেন,  ‘সুশীল সমাজ এর নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না একটি ফোনালাপে বিরোধী পক্ষকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে মানুষ হত্যা করার পরামর্শ দিয়েছেন যাতে সরকার অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে।’ সেদিন তিনি আরো লেখেন, ‘ডেইলিস্টার পত্রিকা নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হিজবুত তাহরীর-এর একটি পোস্টার অর্ধ পৃষ্টা জুড়ে ছাপিয়েছে যেখানে সরকার উৎখাত এবং ক্ষমতা দখল করতে সেনাবাহিনীর সদস্যদের প্রতি আহবান জানানো হয়েছে।এই সবই হচ্ছে আমাদের তথাকথিত `সুশীল সমাজ` এর ক্ষমতা দখলের আরেকটি ষড়যন্ত্র। মান্না তার ফোনালাপে চক্রান্তের অংশ হিসাবে কামাল হোসেনের নামও উল্লেখ করেছেন। মান্না, কামাল হোসেন এবং ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনামরা হচ্ছেন সেই ব্যাক্তি যারা ১/১১এর পর সামরিক শক্তিকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্ষমতায় থাকতে আহবান জানিয়েছিলেন।এই লোকগুলো আমাকে বিরক্ত করছে। এরা ক্ষমতা চায় কিন্তু বড় রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থন ছাড়া একটা আসনেও কখনো জয়লাভ করতে পারেনি। গত দুই মাস ধরে সাধারণ মানুষের উপর বিএনপি জামায়াতের অগ্নিসংযোগ আক্রমনের সুযোগ নিয়ে এই লোকগুলো সম্পূর্ণ অসত্যভাবে দুই দলকেই দায়ী করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ছাত্রলীগ সদস্যদের ভুয়া বোমা হামলাকারী বানিয়ে ডেইলি স্টার পত্রিকা একের পর এক গল্প ছাপিয়ে যাচ্ছে যেগুলো মিথ্যা প্রমানিত হয়েছে। কিন্তু তাদের কেউই বিএনপি জামায়াতের কাছে সহিংসতা বন্ধের দাবী জানাচ্ছে না।এখন আমরা জানি যে তারা চায় এই সহিংসতা চলুক এবং তারা আসলে আরো মানুষ হত্যায় বিএনপি জামায়াতকে সহযোগিতা করতে চায়। ব্যাপার যা-ই হোক তারা আওয়ামী লীগ সরকারকে দোষ দেয় যাতে করে তারা ১/১১এর মতো আবারও সেনাবাহিনীর পিঠে চড়ে ক্ষমতায় আরোহন করতে পারে। এটা রাষ্ট্রদোহিতা। তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করা উচিত।’ এনএফ/পিআর

Advertisement