প্রথমবারের মতো যুবাদের সবচেয়ে বড় আসর অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে সেমিফাইনালের ওঠার হাতছানি। মুশফিক, সাকিব, তামিম, নাফিস, আশরাফুলদের মত তারকা ক্রিকেটাররা যা পারেননি তাই করে দেখানোর সুযোগ মিরাজদের সামনে। শেষ আটে প্রতিপক্ষ নেপাল। গ্রুপ পর্বে আয়ারল্যান্ড, নিউজিল্যান্ডের মতো শক্তিধর দলকে হারিয়েই কোয়ার্টারের টিকিট পেয়েছে তারা। তারপরও শক্তির বিচারে অনেকটাই পিছিয়ে আইসিসির সহযোগী দেশটি। তাই আগামীকাল (শুক্রবার) স্বপ্নপূরণের অনেকটাই কাছাকাছি ক্ষুদে টাইগাররা।তবে ইতিহাস কিন্তু বাংলাদেশি যুবাদের পক্ষে কথা বলছে না। কারণ এর আগে একবার নেপালের মোকাবেলা করেছিল বাংলাদেশের যুব টাইগাররা এবং ওইবারই হেরেছিল তারা। মোহাম্মদ আশরাফুল, আফতাব আহমেদ, নাফিস ইকবাল ও সৈয়দ রাসেলের মতো তখনকার উঠতি তারকা ক্রিকেটারদের নিয়েও সেদিন নেপালের কাছে ভূপাতিত হয় টাইগাররা। ১৮০ রানের জবাব দিতে গিয়ে তাসের ঘরের মতো ভেঙ্গে পড়েছিল বাংলাদেশের যুবারা। শেষ পর্যন্ত সে ম্যাচ হারে ২৩ রানে।তবে ইতিহাস যাই বলুক, গত একযুগে অনেক বদলেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট। বড়দের সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে ছোটরাও নিয়মিত সাফল্য পাচ্ছে। বর্তমান দলটি নিয়ে দারুণ আশাবাদী অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। জয়ের আশাবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এর আগে কখনো সেমিফাইনাল খেলেনি, যদি নেপালের সঙ্গে জিততে পারি, সেটি অনেক বড় অর্জন হবে। আগের চেয়ে মনোযোগ আরও বেশি থাকবে। এখানে কাউকে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। যেহেতু দেশের প্রতিনিধিত্ব করছি, সবাই প্রত্যাশা করছে সে অনুযায়ী খেলতে হবে।’দল নিয়ে আশাবাদী কোচ মিজানুর রহামান বাবুলও। প্রতিপক্ষ নিয়ে না ভেবে নিজেদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করায় বিশ্বাসী তিনি। এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘কোন কিছু নিয়ে আমরা চিন্তিত নই। তাদের কি আছে না আছে এইসব আমরা ভাবছি না। আমরা আমাদের পরিকল্পনাগুলো নিয়ে ভাবছি, কিভাবে সেগুলো মাঠে বাস্তবায়ন করা যায়। ওরা ছোট টিম কিংবা বড় টিম এইরকম কোন চিন্তা আমরা করতে চাচ্ছি না। ছেলেরা খুব ভালো অবস্থায় আছে। সেরাটা দিতে পারলে সহজ জয়ই পাবো।’গ্রুপ পর্বের সব ম্যাচেই দারুণ খেলেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। প্রথম দুই ম্যাচে অর্ধশতক ও শতক করে দলকে জেতানোর পর শেষ ম্যাচেও দলকে জিতিয়ে অপরাজিত ছিলেন। আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে থাকা এই ব্যাটসম্যানের উপর তাই আলাদা করেই নজর থাকবে সবার। সঙ্গে পিনাক, সাইফ, মিরাজরা জ্বলে উঠলে ঝলসে যেতে পারে যে কোন দল। আর বরাবরই বাংলাদেশের শক্তির প্রধান দিক থাকে বোলিং। সালেহ আহমেদ শাওন, সাঈদ সরকার, আরিফুল ইসলাম ও অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে রয়েছেন সঞ্জিতের পরিবর্তে দলে ঢোকা মোসাব্বেক হোসেন শান। বল হাতে তুরুপের তাস হয়ে উঠতে পারেন যে কেউই।অপরদিকে প্রতিপক্ষ নেপালের চোখও রয়েছে সেমিফাইনালে। গ্রুপ পর্বে আয়ারল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দাপট দেখিয়েই জিতেছে তারা। অধিনায়ক রাজু রিজাল, সন্দীপ সুনার, আরিফ শেখ, কার্কি সিংরা নিজদের ব্যাটিং দক্ষতা দেখিয়েছে টুর্নামেন্টের শুরু থেকে। ম্যাচের প্রথম থেকেই আগ্রাসী ব্যাটিং করতে পারেন তারা। আর বোলিংয়ে দারুণ ছন্দে রয়েছেন লেগস্পিনার সন্দীপ লামিছানি। এছাড়াও অফস্পিনার প্রেম থামাংয়ের সঙ্গে পেয়ার দিপেন্দ্র সিং আইরিও কার্যকরী হয়ে উঠতে পারেন।নেপাল কোচ জগত বাহাদুর তামাতা বাংলাদেশকে ফেভারিট মেনেই মাঠে নামছেন। তবে বাংলাদেশকে ছাড় দেবেন না বলেও জানান তিনি। এ প্রসঙ্গে নেপাল কোচ বলেন, ‘বাংলাদেশ খুবই ভালো। তারা বিশ্বকাপের শুরু থেকেই ভালো খেলছে। তবে আমরাও এই ম্যাচ ভালো খেলার চেষ্টা করবো। আমাদের একাদশও ভালো। ছেলেরা গত কয়েক মাস ধরেই ভালো ক্রিকেট খেলছে। তার ফলাফল আমরা ইতোমধ্যে গ্রুপ পর্বেই পেয়েছি। আমাদের দলে ভাল স্পিন ও ব্যাটিং অ্যাটাক আছে। কোয়ার্টার ফাইানাল, তাই আমরা আমাদের সেরা খেলাটিই খেলতে চেস্টা করবো।’আরটি/আইএইচএস/পিআর
Advertisement