আন্তর্জাতিক

ক্ষুধার্ত থাকছে লঙ্কান শিশুরা, প্রতিবেশীদেরও সতর্ক করলো জাতিসংঘ

চরম অর্থসংকটের মুখে ক্ষুধার্ত অবস্থায় ঘুমাতে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কার শিশুরা। একই পরিস্থিতি দক্ষিণ এশিয়ার বাকি দেশগুলোতেও হতে পারে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। খবর এএফপির।

Advertisement

স্বাধীনতার-উত্তর সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছে শ্রীলঙ্কা। দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রায় শূন্যে পৌঁছেছে। ফলে খাদ্য, ওষুধ, জ্বালানির মতো অতিজরুরি পণ্য আমদানি করতে পারছে না লঙ্কান সরকার। অভূতপূর্ব এই অর্থনৈতিক সংকট দ্বীপরাষ্ট্রটিতে রাজনৈতিক সংকটও তৈরি করেছে।

শুক্রবার (২৬ আগস্ট) জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের দক্ষিণ এশিয়া পরিচালক জর্জ লারিয়া-আদজেই বলেছেন, রান্নার উপকরণগুলোর দাম ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাওয়ায় নিয়মিত খাবার বাদ দিয়েছে শ্রীলঙ্কার অনেক পরিবার। তারাই এই সংকট তীব্রভাবে অনুভব করেছে।

তিনি বলেন, শিশুরা ক্ষুধা নিয়ে ঘুমাতে যাচ্ছে। তারা জানে না, পরবর্তী খাবার কোথা থেকে আসবে।

Advertisement

৫ হাজার ১০০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে না পেরে গত এপ্রিলে নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করে শ্রীলঙ্কা। অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে দেশটি বর্তমানে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ঋণ পেতে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।

লারিয়া-আদজেই বলেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পরিপ্রেক্ষিতে জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়া প্রতিবেশী দেশগুলোকেও ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। শ্রীলঙ্কার মতো এ অঞ্চলের অন্য দেশগুলোতেও পুষ্টি সংকট তৈরি হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন তিনি।

ইউনিসেফ কর্মকর্তা বলেন, তীব্র অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে মূল্যস্ফীতি শিশুদের জীবনকে আরও হুমকির মুখে ফেলতে চলেছে। আমি শ্রীলঙ্কায় যা দেখেছি, তা দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর জন্য সতর্কবার্তা।

শ্রীলঙ্কায় শিশুদের জনসংখ্যার অন্তত অর্ধেকের জরুরি চাহিদা মেটাতে ২ কোটি ৫০ লাখ ডলার সহায়তার আবেদন জানিয়েছে ইউনিসেফ।শিশুদের মধ্যে দ্রুত ছড়িয়ে পড়া অপুষ্টি মোকাবিলায় চলতি মাসে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে লঙ্কান সরকারও।

Advertisement

২০২১ সালের সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, শ্রীলঙ্কায় ৫ লাখ ৭০ হাজার প্রাক-স্কুল শিক্ষার্থীর মধ্যে ১ লাখ ২৭ হাজার জনই অপুষ্টিতে ভুগছিলো। কর্মকর্তাদের বিশ্বাস, এরপর থেকে ব্যাপক খাদ্য ঘাটতি ও ক্রমাগত মূল্যস্ফীতির জেরে অপুষ্টিতে ভোগা শিশুর সংখ্যা আকাশচুম্বী হয়েছে।

সূত্র: এনডিটিভি

কেএএ/এমএস