সমুদ্রসৈকতের নির্ধারিত সীমানা থেকে অবৈধ দখল ও স্থাপনা উচ্ছেদ সংক্রান্ত উচ্চ আদালতের আদেশ পালন না করায় কক্সবাজারের জেলা প্রশাসকসহ (ডিসি) সংশ্লিষ্টদের প্রতি রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
Advertisement
যে ৫ জনের বিরুদ্ধে রুল জারি করেছেন তারা হলেন, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমেদ, উপ-পরিচালক, টাউন প্লানার তানভির হাসান, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মামুনর রশিদ, পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান ও কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মজিবর রহমান।
একই সঙ্গে কক্সবাজারের ডিসি তলব করেছেন আদালত। আগামী ১৯ অক্টোবর তাকে সশরীরে আদালতে উপস্থিত হতে বলা হয়েছে। বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন সিনিয়র আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
আদালত অবমানার অভিযোগের এক আবেদনের শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুলসহ আদেশ দেন।
Advertisement
আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, কক্সবাজার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে আদালতের নির্দেশনা পর সেটা উচ্ছেদও করা হয়েছিল। কিন্তু ইদানিং প্রায় একশোটির মতো দোকান স্থাপন করা হয়েছে। এ ঘটনায় চার মাস আগে আমরা আদালত অবমাননার অভিযোগ দায়ের করেছিলাম। এরপর দীর্ঘ শুনানির পর বারবার সময় নেওয়ার পরও জেলা প্রশাসক সেসব স্থাপনা উচ্ছেদ করেননি। যে কারণে আজকে জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্টদের ওপর আদালত অবমনানর অভিযোগে একটা রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। আর কক্সবাজারের জেলা প্রশাসককে আগামী ১৯ অক্টোবর সশরীরে আদালতে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
এর আগে গত ৭ ফেব্রুয়ারি উচ্ছেদের বিষয়ে লিগ্যাল (আইনি) নোটিশ দেওয়া হয়েছিলো। হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) সভাপতি জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ সোমবার এ লিগ্যাল নোটিশ পাঠান।
নোটিশে বলা হয়েছিল, কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত এলাকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য অক্ষুণ্ন রাখতে সেখান থেকে সব অবৈধ দখল ও স্থাপনা উচ্ছেদ করার আবেদন জানিয়ে জনস্বার্থে এইচআরপিবি আদালতে রিট মামলা দায়ের করলে আদালত রায় দেন। রায়ে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত এলাকার অবৈধ দখল ও স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য নির্দেশনা দেন। জনস্বার্থ বিবেচনা করে হাইকোর্ট ২০১১ সালের ৭ জুন বিবাদীদের কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত এলাকার অবৈধ দখল ও স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ দিলেও তা সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন করা হয়নি।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়, কয়েকদিন আগে এইচআরপিবির প্রতিনিধি সমুদ্রসৈকত এলাকায় পর্যবেক্ষণে গেলে সৈকত এলাকায় অনেক অবৈধ দখল ও স্থাপনা দেখতে পান। যদিও এর আগে রায় হওয়ার পরে আদালতের নির্দেশে সব স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছিল। বর্তমানে ওই দখল ও স্থাপনা ভাড়া দিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। কিন্তু প্রশাসন এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না, যা আদালত অবমাননার সামিল।
Advertisement
এরই পরিপ্রেক্ষিতে সমুদ্রসৈকত এলাকার অবৈধ দখল ও স্থাপনা উচ্ছেদ সংক্রান্ত উচ্চ আদালতের নির্দেশনা না মানার অভিযোগে কক্সবাজার জেলা প্রশাসককে তলব করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ডিসিসহ পাঁচজনের বিষয়ে আদালত অবমাননার রুল জারি করা হয়েছে।
এফএইচ/বিএ/জেআইএম/এমকেআর