জাতীয়

ড্যাপ অনুমোদন দেওয়ায় সরকারকে ধন্যবাদ: আইপিডি

ঢাকা মহানগরীর টেকসই নগরায়ন নিশ্চিত করতে ও বাসযোগ্য ঢাকা গড়তে বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ ২০১৬-৩৫) অনুমোদন করায় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছে ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি)। সংগঠনটি মনে করে, রাষ্ট্র ও সরকারের সংশ্লিষ্ট সবার সদিচ্ছা ও প্রত্যয় এবং প্রায়োগিক ক্ষেত্রে অনমনীয় থাকলে এ পরিকল্পনার যথাযথ বাস্তবায়নের মাধ্যমে ঢাকাকে বাসযোগ্য করে তোলা সম্ভব হবে।

Advertisement

বুধবার (২৪ আগস্ট) এক বিবৃতিতে এই ধন্যবাদ জানান ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং এন্ড ডেভেলপমেন্টের (আইপিডি) নির্বাহী পরিচালক পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান।

বিবৃতিতে বলা হয়, ঢাকা শহরের পরিবর্তিত নগর বাস্তবতায় নতুন ড্যাপ প্রণয়ন করা জরুরি হয়ে পড়েছিল। কিছুটা বিলম্বে হলেও ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের জন্য অনুমোদিত এই বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা সঠিকভাবে প্রয়োগ ও বাস্তবায়ন করা হলে ঢাকার নগরায়ন এবং নগর উন্নয়ন পরিকল্পনাকে সঠিক গতিপথে চালিত হতে পারে বলে আইপিডি মনে করে।

এতে আরও বলা হয়, যে কোনো পরিকল্পনার সফলতা কিংবা ব্যর্থতা নির্ভর করে পরিকল্পনা বাস্তবায়নে রাষ্ট্র ও সরকারের সংশ্লিষ্ট সবার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আন্তরিক সদিচ্ছা, যথাযথ প্রয়োগ, প্রয়োজনীয় অর্থায়ন, উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ, আইনের শাসন ও জনস্বার্থ-জনকল্যাণ রক্ষায় পরিকল্পনা এবং নীতি-নির্দেশনার নির্মোহ ও যথাযথ বাস্তবায়নের ওপর। আগে ঢাকা মহানগরীর জন্য কাঠামোগত পরিকল্পনা, মহাপরিকল্পনা কিংবা ড্যাপ দলিলগুলো সঠিক ও পূর্ণ বাস্তবায়নের অভাবেই ঢাকা ক্রমান্বয়ে বাসযোগ্যতা হারিয়েছে।

Advertisement

‘এবারের বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় আধুনিক নগর–পরিকল্পনার বেশকিছু কৌশল প্রয়োগ করা হয়েছে। এর মধ্যে ব্লক ডেভেলপমেন্ট, কমিউনিটিভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনা ও সেবার বিকেন্দ্রীকরণ, মেট্রো স্টেশনভিত্তিক ট্রানজিট ওরিয়েন্টেড ডেভেলপমেন্ট (টিওডি), জনঘনত্ব জোনিং, ট্রান্সফার অব ডেভেলপমেন্ট রাইট (টিডিআর), ওয়ার্ডভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা এবং মানসম্পন্ন সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিনোদনকেন্দ্র সৃষ্টি ইত্যাদি বিষয়ের পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন শহরের মানুষের জীবনযাত্রাকে সহজ করবে। পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় আঞ্চলিক পার্ক, জলকেন্দ্রিক পার্ক, ইকোপার্ক তৈরি, পথচারীবান্ধব অবকাঠামো তৈরি ও বাইসাইকেল লেনকে উৎসাহিত করা এবং অযান্ত্রিক পরিবহনকে সামগ্রিক পরিকল্পনার সঙ্গে সমন্বয় করা— এসব বিষয় ড্যাপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’

আইপিডির বিবৃতিতে বলা হয়, ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ২০০৬ সালে প্রণীত হওয়ার সময় এলাকাভিত্তিক ফ্লোর এরিয়া রেশিও (এফএআর) প্রণয়ন করার কথা বলা হয়েছিল, যা এবারের ড্যাপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

আইপিডি মনে করে, এলাকাভিত্তিক ‘এফএআর’ এর সঠিক প্রয়োগের মাধ্যমে জনঘনত্ব ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি ভবন ও কমিউনিটিতে আলো-বাতাসের প্রবেশগম্যতার পাশাপাশি নগরের উষ্ণায়ন রোধে সহায়ক হবে। আবার নগর পরিকল্পনা একটি পরিবর্তনশীল প্রক্রিয়া হওয়াতে সামনের দিনগুলোতে ড্যাপ বাস্তবায়নে পর্যায়ে প্রাপ্ত অভিজ্ঞতা ও জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনাকে নির্দিষ্ট সময় পরপর পুনর্মূল্যায়ন করে এই পরিকল্পনাকে আরও সমৃদ্ধ করা হবে বলে আইপিডি আশা করে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাস্তবিক অর্থে ড্যাপে প্রস্তাবিত সব পরিকল্পনা নির্ভর করবে তার যথাযথ প্রয়োগ ও বাস্তবায়নের ওপর। এজন্য ঢাকা মহানগর এলাকায় কার্যরত স্থানীয় সরকারের সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ প্রভৃতি সংস্থাগুলোকে বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা অনুযায়ী এলাকাভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনা দ্রুত প্রণয়ন করবার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। প্রকৃত অর্থে নগর উন্নয়ন পরিকল্পনার সফল বাস্তবায়নের সঙ্গে রাষ্ট্রের বিভিন্ন সংস্থাগুলোর আন্তরিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে এই পরিকল্পনা দলিলের যথাযথ অনুসরণ করবার ক্ষেত্র তৈরি করাটা প্রয়োজন। পাশাপাশি এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থায়ন পরিকল্পনা ও কার্য পরিকল্পনাসমূহ প্রণয়ন করবার উদ্যোগ এখনই নিতে হবে।

এমএমএ/আরএডি/এমএস

Advertisement