তিনি মাদ্রাসার শিক্ষক। পরিশ্রমী ও মেধাবী। কিন্তু করোনাকালে প্রাইভেট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আর্থিকভাবে ভেঙে পড়ে। সবাই অন্য পেশা খোঁজা শুরু করেন। কে কী করবেন, তা নিয়ে সবাই চিন্তামগ্ন। তখন তিনি ভাবতে থাকেন, কীভাবে নিজে স্বাবলম্বী হবেন এবং অন্য আলেমদেরও স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলবেন। এরপরই সিদ্ধান্ত নেন একটি জুতার কারখানা করার। যার নাম দেন ‘এস কে এম’।
Advertisement
এ উদ্যোক্তা আলেমের নাম মুফতি সাইফুল ইসলাম। তিনি ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার আলগীর শুখনী গ্রামের মরহুম সোহরাব মাতুব্বরের ছেলে। গোপালগঞ্জের জামিয়া ইসলামিয়া ইসলামপুর মাদ্রাসা থেকে দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স) এবং ইফতা সম্পন্ন করেন। এরপর মানিকগঞ্জ জামিয়া আরাবিয়া সিদ্দিকিয়া মাদ্রাসায় ৩ বছর শিক্ষকতা করেন।
মুফতি সাইফুল ইসলাম প্রথমে সহকর্মীদের নিয়ে অনলাইনে বিভিন্ন কোম্পানির পণ্য নিয়ে কমিশনের ভিত্তিতে বিক্রি করা শুরু করেন। পণ্যগুলো অনলাইনে যখন ভালোই বিক্রি হচ্ছিল; তখন সিদ্ধান্ত নেন নিজেই পণ্য বানিয়ে বিক্রি করবেন। তার ছোটভাই জুতা তৈরির কাজ করতেন। তার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়েই পরে বড় পরিসরে জুতা তৈরির কাজ শুরু করেন। তাদের এ কোম্পানির নাম দেওয়া হয় এস কে এম।
মুফতি সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘যখন জুতা তৈরির কারখানা করার সিদ্ধান্ত নিলাম; তখন আমার কাছে কোনো পুঁজি ছিল না। আমার মা, ছোট ভাই এবং অনেকেই তখন আমাকে সহযোগিতা করেন।’
Advertisement
তিনি বলেন, ‘২০১৯ সালে মাত্র ৮ হাজার টাকা বিনিয়োগে আমাদের পথচলা শুরু। বর্তমানে আমাদের বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ৭০ লাখ টাকা। কারখানায় ৩০ জন শ্রমিক কাজ করেন। এ ছাড়াও আমাদের পণ্য নিয়ে কাজ করছেন শতাধিক আলেম।’ সাইফুল বলেন, ‘প্রত্যেক মাসে ২০-৩০ লাখ টাকার জুতা বিক্রি হয় কারখানা থেকে। প্রত্যেক জেলা-উপজেলায় ডিলার নিয়োগ চলছে। তবে আমরা আলেম ছাড়া ডিলার নিয়োগ দেই না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জুতা বিক্রির পর থেকে আজ পর্যন্ত গ্রাহকদের কাছ থেকে নেতিবাচক কোনো মন্তব্য পাইনি। প্রসিদ্ধ আলেম শায়েখ আহমাদুল্লাহ, মাওলানা উবাইদুর রহমান খান নদভী, মাওলানা সাইফুল্লাহসহ অনেক আলেম আমাদের এগিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। আশা করছি, একদিন এই জুতার কোম্পানি শীর্ষ কোম্পানিগুলোর মধ্যে জায়গা করে নেবে।’
এসইউ/এমএস
Advertisement