পাহাড় কাটা বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক( ডিসি) পুলিশ সুপারসহ (এসপি) সংশ্লিষ্ট ৯ জনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ কেন আনা হবে না তা জনতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
Advertisement
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ফারহিনা আহমেদ, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) আবদুল হামিদ, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক (ভিসি) মো. মামুনুর রশিদ, কক্সবাজারের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. হাসানুজ্জামান, উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরান হোসেন সজিব, কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ জাকারিয়া, উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি), কক্সবাজার সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি), পরিবেশ বিভাগের কক্সবাজার জেলার সহকারী পরিচালক মো. সাইফুল আশরাফের বিরুদ্ধে এই রুল জারি করা হয়েছে।
এক রিট আবেদনের শুনানি শেষে মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে এদিন রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ ও অ্যাডভোকেট রিপন বারৈ।
Advertisement
মনজিল মোরসেদ বলেন, পাহাড় সংরক্ষণ, পাহাড় কাটা বন্ধ ও পরিবেশ রক্ষায় ২০১২ সালের ১৯ জুলাই হাইকোর্ট এক যুগান্তকারী রায় দিয়েছেন।
ওই রায়ে কক্সবাজার জেলায় পাহাড় কাটার কার্যক্রম বন্ধ করে পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়নে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশনা দেন আদালত। কিন্তু কক্সবাজারের উখিয়া ও সদর উপজেলায় পাহাড় কেটে ঘরবাড়ি ও বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে।
এসব বেআইনি কর্মকাণ্ড বন্ধে হিউম্যান রাইটস পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে সংশ্লিষ্টদের লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়। লিগ্যাল নোটিশের জবাব না পেয়ে হাইকোর্টে আদালত অবমাননার রিট দায়ের করা হয়। শুনানি শেষে আদালত সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেছেন। ২০১২ সালে ১৯ জুলাই এইচআরপিবি বনাম বাংলাদেশ সরকার মামলায় হাইকোর্টের রায়ের আলোকে এই রুল দেওয়া হয়।
রুলে বলা হয়েছে, আদালতের নির্দেশনা অমান্য করায় কেন বিবাদীদের আদালত অবমাননার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। এর আগে গত ১০ আগস্ট হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করা হয়।
Advertisement
রিটে ২০১২ সালের ১৯ জুলাই হাইকোর্টের বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি মোহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক বেঞ্চের দেওয়া ‘হিউম্যান রাইটস পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) বনাম বাংলাদেশ সরকার’ এর রায় যুক্ত করে আবেদন করা হয়।
ওই রায়ে আদালত বলেন, কক্সবাজার জেলার উখিয়া, টেকনাফসহ অন্যান্য উপজেলায় পাহাড় কাটার অননুমোদিত কার্যক্রম বন্ধ করে পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়নে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশনা দেওয়া হলো।
এরপরও হাইকোর্টের নির্দেশনা অমান্য করে কক্সবাজারের উখিয়া ও সদর উপজেলায় পাহাড় কেটে ঘরবাড়িসহ অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণ অব্যাহত থাকায় এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি লিগ্যাল (আইনি)নোটিশ পাঠানো হয়। এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে গত ১০ আগস্ট হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট দায়ের করা হয়।
মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিসফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে আইনজীবী সারোয়ার আহাদ চৌধুরী এই রিট দায়ের করেন। মঙ্গলবার ওই রিটের শুনানি শেষে আদালত সংশ্লিষ্ট ৯ জনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেন।
এফএইচ/ইএ/এএসএম