নিজেদের ইতিহাসে বিগত ৫০০ বছরের মধ্যে এমন ভয়ংকর খরার মুখে আর পড়েনি ইউরোপ। মহাদেশটির দুই-তৃতীয়াংশ এলাকা এখন কোনো না কোনো ধরনের সতর্কতার আওতায় রয়েছে। কমে গেছে অভ্যন্তরীণ নৌযান চলাচল, বিদ্যুৎ ও ফসল উৎপাদন। মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) ইউরোপীয় কমিশনের ইউরোপিয়ান ড্রট অবজারভেটরি (ইডিও) এসব কথা জানিয়েছে। খবর রয়টার্সের।
Advertisement
ইডিও’র আগস্ট মাসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খরার কারণে ইউরোপের ৪৭ শতাংশ এলাকা সতর্কতামূলক পরিস্থিতিতে রয়েছে, যেখানে মাটির আর্দ্রতা স্পষ্টত কমে গেছে। আরও ১৭ শতাংশ এলাকা সতর্ক অবস্থায় রয়েছে, যেখানে গাছপালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইডিও বলেছে, বছরের শুরু থেকে ইউরোপের বহু অঞ্চলকে ক্ষতিগ্রস্ত করা মারাত্মক খরা আগস্টের শুরুর দিকে আরও প্রসারিত ও খারাপ হয়েছে। পশ্চিম ইউরোপ-ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলগুলোতে অন্তত আগামী নভেম্বর মাস পর্যন্ত স্বাভাবিকের তুলনায় উষ্ণ ও শুষ্ক আবহাওয়া থাকার আশঙ্কা রয়েছে।
এবারের গ্রীষ্মে ইউরোপের বেশিরভাগ অংশে কয়েক সপ্তাহ ধরে উত্তপ্ত তাপমাত্রা ছিল, যা খরা পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করেছে। এতে দাবানল সৃষ্টি হয়েছে, বিভিন্ন অঞ্চলে স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি করা হয়েছে এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় আরও পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
Advertisement
জার্মানির রেমাগেনে রাইন নদীর পানি কমে যাওয়ায় আটকে গেছে নৌকাটি। ছবি সংগৃহীত
ইউরোপীয় কমিশন এক বিবৃতিতে বলেছে, বর্তমান খরা অন্তত ৫০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ হিসেবে দেখা যাচ্ছে। মৌসুমের শেষে চূড়ান্ত তথ্যের প্রাথমিক মূল্যায়ন বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
খরায় গ্রীষ্মকালীন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ২০২২ সালে ভুট্টার ফলন আগের পাঁচ বছরের গড় থেকে ১৬ শতাংশ কম এবং সয়াবিন ও সূর্যমুখীর ফলন যথাক্রমে ১৫ শতাংশ ও ১২ শতাংশ কম হবে।
উষ্ণ আবহাওয়ায় ইউরোপের জলবিদ্যুৎ উৎপাদন যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তেমনি শীতলীকরণ ব্যবস্থায় পানির ঘাটতির কারণে অন্যান্য বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীদের ওপরও প্রভাব পড়েছে।
Advertisement
পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় অভ্যন্তরীণ জাহাজ চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। যেমন- রাইন নদীতে চলাচলকারী জাহাজগুলোর লোড কমাতে হওয়ায় তেল ও কয়লা পরিবহনে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
ইডিও বলেছে, আগস্টের মাঝামাঝি বৃষ্টিপাত হলে পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। তবে কিছু ক্ষেত্রে এমন আবহাওয়ার সঙ্গে বজ্রঝড়ও দেখা দেয়, যার কারণে আরও ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।
কেএএ/জেআইএম