বিতর্কিত বক্তব্য দিয়ে সমালোচনার মধ্যে থাকা পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন মন্ত্রিসভা বৈঠকে যোগ দিয়েছেন। সোমবার (২২ আগস্ট) বেলা ১১টা ৩৮ মিনিটে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে এসে উপস্থিত হন তিনি।
Advertisement
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি মন্ত্রিসভা বৈঠক শুরু হয় দুপুর ১২টায়। মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা সচিবালয় থেকে এবং প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়েছেন।
এছাড়া বৈঠকে উপস্থিত রয়েছেন- মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমদ, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
সম্প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনের দেওয়া বক্তব্য নিয়ে দেশে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। এ অবস্থায় রোববার (২১ আগস্ট) বক্তব্যের বিষয়ে মন্ত্রীকে পাঠানো হয়েছে লিগ্যাল নোটিশ। নোটিশ পাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাকে পদত্যাগ করতে বলা হয়েছে। অন্যথায় আইনি প্রতিকার চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হবে বলে জানানো হয়।
Advertisement
গত ১৮ আগস্ট সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম শহরের জে এম সেন হলে এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দুই দেশেরই রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রয়োজন। এটি সম্ভব যদি শেখ হাসিনার সরকারকে সমর্থন দেয় ভারত।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকারকে টিকিয়ে রাখার জন্য যা যা করা দরকার, আমি ভারতবর্ষের সরকারকে সেটা করতে অনুরোধ করেছি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ বক্তব্যে দেশজুড়ে আলোচনার ঝড় ওঠে। খোদ আওয়ামী লীগও এ বক্তব্যে বিব্রত। রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও কূটনীতিকরা বলছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী যা বলেছেন তা দেশের জন্য অসম্মানজনক।
অন্যদিকে বিএনপি লুফে নিয়েছে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ বক্তব্য। দলটির নেতারা এর তীব্র সমালোচনা করেছেন।
Advertisement
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, সেটি তার ব্যক্তিগত অভিমত হতে পারে। এটি আমাদের সরকারের বক্তব্য না, দলেরও না। এই ধরনের অনুরোধ আওয়ামী লীগ করে না। শেখ হাসিনা সরকারের পক্ষ থেকেও কাউকে এমন দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।
এদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বক্তব্য প্রত্যাহার না করে জানান, তার বক্তব্য ভিন্নভাবে গণমাধ্যমে এসেছে।
তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তিনি আমাকে বলেছেন, তোমাদের সরকারের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির কারণে আমাদের এখানে সন্ত্রাস বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে বিদেশি বিনিয়োগ আসছে। আমি দিল্লিতে মিটিং করার সময় বলেছি, তোমাদের একজন মুখ্যমন্ত্রী এসব কথা আমাকে বলেছে। তখন আমি বলেছি, দুই দেশেরই উন্নয়নের জন্য স্থিতিশীলতা প্রয়োজন আর সেই স্থিতিশীলতার জন্য শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় থাকতে হবে।
এর আগে গত ১২ আগস্ট সিলেটে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বৈশ্বিক মন্দার মধ্যে অন্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের মানুষ বেহেশতে আছে।
এ বক্তব্য দিয়েও তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন।
আরএমএম/জেএইচ/জিকেএস