পেশায় তারা দু`জনই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। ডা. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন, জাতীয় ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের ক্যান্সার ইপিডেমিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও অপরজন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক মনোচিকিৎসক ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ। গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে একটি ব্যতিক্রমধর্মী উদ্যোগের কথা জানাতে বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে হাজির হয়েছিলেন তারা।আগামীকাল ( ৪ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার) বিশ্ব ক্যান্সার দিবস। এ দিবসকে সামনে রেখে সেন্টার ফর ক্যান্সার প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ (সিসিপিআর) এর পক্ষে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে ‘ক্যান্সার কাউন্সিলিং সার্ভিস’ কর্মসূচি শুরু করার ঘোষণা দেন তারা। সেবাটি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জাগো নিউজকে তারা জানান, বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে ক্যান্সার সম্পর্কে সঠিক ধারণা নেই। অনেকেই অস্বচ্ছ ধারণা নিয়ে থাকেন। এ জন্য সঠিক তথ্যের উৎস হিসেবে একটি প্লাটফরম দরকার।পত্র পত্রিকাসহ অন্যান্য মাধ্যম থেকে খন্ডিত তথ্য পেয়ে অনেকে আতঙ্কিত থাকেন। অনেক সময় ক্যান্সার পরীক্ষার রিপোর্ট নিয়ে কোথায় যাবেন, কী চিকিৎসা পরিকল্পনা করবেন তা বুঝতে পারেন না। সঠিক পরামর্শেও অভাবে অনেকে বিভ্রান্ত ও দিশেহারা হয়ে বিদেশে পাড়ি জমান। ক্যান্সারের চিকিৎসা ব্যয়বহুল হওয়ায় চিকিৎসা শেষ না করেন দেশে ফিরে আসেন।শুধু শারিরিক চিকিৎসাই নয়, ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী ও তাদের স্বজনরা তীব্র মানসিক চাপের মুখে পড়েন। তাদের মনোবল অক্ষুণ্ন রাখতে মানসিক কাউন্সিলিংও করা হয় না বলে জানান তারা।ডা. রাসকিন জানান, এ সেবার আওতায় একটি নির্দিষ্ট ইমেইল ঠিকানা, ফেসবুক পেইজ, মোবাইল নম্বর ও সরাসরি সাক্ষাতের মাধ্যমে ক্যান্সার বিষয়ক তথ্য ও পরামর্শ গ্রহণ করতে পারবেন। শুক্র ও শনিবার এ দুদিন ০১৯৭৭ ৫৯১৯০৭ এই মোবাইল নম্বরে যে কোনো ক্যান্সার রোগী কিংবা যে কেউ এ রোগ সম্পর্কে জানতে পারবেন। ইমেইলে ২৪ ঘণ্টায় যে কোনো ইমেইলে পাঠানোর প্রশ্নের জবাব দেয়া হবে। ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ক্যান্সারে কেউ আক্রান্ত হলে আক্রান্ত রোগী ও তাদের স্বজনরা প্রথমে বিশ্বাসই করতে চান না। এ ছাড়াও ওই সময়টাতে তারা তীব্র মানসিক চাপের শিকার হন।এক্ষেত্রে মনোচিকিৎসা কথা কাউন্সিলিং এর মাধ্যমে তাদেরকে বাস্তবতা মেনে চিকিৎসা গ্রহণে উদ্ধুদ্ধ করার কাজটি করবেন বলে তিনি প্রতিশ্রুতি দেন।ক্যান্সার রোগী সম্পর্কে গবেষণালব্দ কোনো জাতীয় হিসাব না থাকলেও ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি অন ক্যান্সার রিসার্চ ২০১২-এর হিসাব অনুসারে দেশে প্রতি বছর ১ লাখ ১০ হাজার ব্যক্তি ক্যান্সারে আক্রান্ত ও ৯০ হাজার জন মারা যায়।এছাড়া দেশে প্রধানত চার ধরনের ক্যান্সার রয়েছে। এগুলো হলো- ফুসফুস, স্তন, জরায়ু মুখ গহ্বর প্রভৃতি। পুরুষদের মধ্যে ফুসফুস ও মেয়েদের মধ্যে স্তন ক্যান্সার বেশি হয়ে থাকে। ধোয়া ও ধোয়াবিহীন তামাক ও তামাকজাত দ্রব্যের কারণে ফুসফুসের ক্যান্সার হয়। তবে নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও সচেতনতার মাধ্যমে বাকি তিনটি ক্যান্সার থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব বলে জানান তারা।এমইউ/আরএস/আরআইপি
Advertisement