সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিশুতে একটি হোটেলে হামলা চালিয়েছে সশস্ত্র জঙ্গিরা। এতে এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত ও অন্তত ৪০ জন আহত হওয়ার খবর জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ। শুক্রবার (১৯ আগস্ট) রাতে স্থানীয় একটি হোটেলে ঢুকে বেশ কয়েকজনকে জিম্মি করে জঙ্গিরা। এরপর ২০ ঘণ্টা পার হলেও তাদের মুক্ত করতে পারেনি নিরাপত্তা বাহিনী।
Advertisement
জানা যায়, মোগাদিশুর জনপ্রিয় হায়াত হোটেলে ঢুকে প্রথমে বিস্ফোরণ ঘটায় জঙ্গিরা। এরপর চলে এলোপাথাড়ি গুলি। এর আগে দুটি বিস্ফোরকবোঝাই গাড়ি নিয়ে হামলা চালায় তারা।
আল-কায়েদা ঘনিষ্ঠ আল শাবাব গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তা মোহাম্মদ স্থানীয় সময় শনিবার সকালে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা ১২ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করতে পেরেছি। তারা সবাই সাধারণ মানুষ৷
পরে আরও একজনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ৷ মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। জঙ্গিরা হোটেলের তিনতলায় বেশ কয়েকজনকে জিম্মি করে রেখেছিল। তবে তাদের সংখ্যা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
Advertisement
আল শাবাবের জঙ্গিরা হোটেলের সিঁড়ির একাধিক অংশ বোমার আঘাতে উড়িয়ে দেয়। এর ফলে সেখান থেকে বন্দিদের উদ্ধার আরও কঠিন হয়ে যায়। এসময় গোটা হোটেল ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টার সময়ও হোটেলের ভেতর গুলির শব্দ শোনা গেছে। শক্তিশালী বিস্ফোরণের কারণে পাশের রাস্তায়ও ফাটল তৈরি হয়েছে।
পুলিশ এবং নিরাপত্তা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে। গ্রেনেড ছুড়ে হোটেল থেকে বন্দিদের উদ্ধারের চেষ্টা করে তারা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সেনাবাহিনীর সঙ্গে সন্ত্রাসীদের সংঘর্ষে হোটেলের বড় একটি অংশ ধ্বংস হয়ে গেছে। ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ভিডিওতে হোটেল থেকে কালো ধোঁয়া বেরোতে দেখা যায়।
গত মে মাসে হাসান শেখ মোহাম্মদস সোমালিয়ান প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দেশটিতে এটিই সবচেয়ে বড় হামলা।
Advertisement
গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে সোমালি সরকারের পতনের জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে আল শাবাব। সরকার উৎখাত করে দেশটিতে তথাকথিত শরিয়া আইন প্রতিষ্ঠা করতে চায় তারা।
সোমালিয়ার আইনপ্রণেতা, সরকারি কর্মকর্তা এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের কাছে জনপ্রিয় ও নিরাপদ জায়গা হিসেবে পরিচিত ছিল হায়াত হোটেল। তাদের মধ্যে কেউ হোটেলটিতে জিম্মি ছিলেন কি না, তা এখনো পরিষ্কার নয়।
সূত্র: ডয়েচে ভেলে, রয়টার্স, ব্লুমবার্গ
কেএএ/জেআইএম