কেয়ামতের দিন নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সবচেয়ে কাছের হবেন কে? কোন আমলের বিনিময়ে ওই ব্যক্তি নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সবচেয়ে আপন হবেন? এ সম্পর্কে হাদিসে কী এসেছে?
Advertisement
মহান আল্লাহর নির্দেশ হচ্ছে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি দরূদ পড়া। তাঁর জন্য রহমত কামনা করে দোয়া করা। কেননা ফেরেশতারাসহ তিনি নিজেও নবিজির প্রতি রহমত পাঠান। ফেরেশেতারা রহমত কামনা করেন আর এ নির্দেশ সব মুমিনের প্রতিও। মহান আল্লাহ এ মর্মে নির্দেশ দেন-
إِنَّ اللَّهَ وَمَلَائِكَتَهُ يُصَلُّونَ عَلَى النَّبِيِّ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا صَلُّوا عَلَيْهِ وَسَلِّمُوا تَسْلِيمًا
‘আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতাগণ নবির প্রতি রহমত প্রেরণ করেন। হে মুমিনগণ! তোমরা নবির জন্য রহমতের দোয়া কর এবং তাঁর প্রতি সালাম পাঠাও।’ (সুরা আহজাব : আয়াত ৫৬)
Advertisement
আয়াতে আল্লাহর সালাত পাঠানোর মর্মার্থ হলো- রহমত। অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা নবিজির প্রতি অবিরত রহমত বর্ষণ করেন। ফেরেশতাদের সালাত পাঠানোর মর্মার্থ হলো- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর রহমত বর্ষণের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করেন। এই দোয়াই হচ্ছে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি দরূদ। সুতরাং হে ঈমানদাররা, তোমরাও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি দরূদ পড়।
সবচেয়ে আপন ব্যক্তির পরিচয়
১. নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কেয়ামতের দিন ওই ব্যক্তিই আমার সবচেয়ে কাছাকাছি হবে যে আমার প্রতি বেশি বেশি দরূদ পাঠ করে। (তিরমিজি)
২. নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মাতকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, যে ব্যক্তির উপস্থিতিতে আমার নাম উচ্চারিত হবে, কিন্তু ওই ব্যক্তি আমার প্রতি দরূদ পড়বে না, সে বড় কৃপণ।’ (তিরমিজি)
Advertisement
দরূদের ফজিলত
১. হজরত আবু তালহা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, একদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এলেন। তখন তার চেহারায় আনন্দের আভা দেখা যাচ্ছিল। এসেই তিনি বললেন, জিবরাঈল আলাইহিস সালাম আমার কাছে এসেছিল এবং বলে গেল-
> হে মুহাম্মদ! আল্লাহ তাআলা বলেছেন, আপনি কি এতে সন্তুষ্ট হবেন না যে, আপনার উম্মতের কেউ আপনার ওপর একবার দরুদ পড়লে আমি তার ওপর ১০ বার রহমত বর্ষণ করবো।
> কেউ একবার সালাম পেশ করলে তার প্রতি সালাম ১০ বার পেশ করবো। আল্লাহ আমাদের বেশি বেশি দরুদ পাঠের তওফিক দিন। (নাসাঈ)
২. অপর বর্ণনায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি আমার প্রতি একবার দরূদ পড়বে। আল্লাহ তার প্রতি দশবার রহমত নাজিল করেন, এবং তার দশটি গুনাহ (ছগিরা) মাফ করা হয়, ও তার দশটি মর্যাদা বৃদ্ধি করা হয়।’ (নাসাঈ)
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নাম শোনার সঙ্গে সঙ্গে তার প্রতি সালাম ও দরূদ পড়া। কেননা এ দরূদ পড়ার মাধ্যমেই কেয়ামতের দিন উম্মতে মুহাম্মাদি তাঁর সবচেয়ে কাছাকাছি থাকবেন।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি বেশি বেশি দরূদ পড়ার তাওফিক দান করুন। দুনিয়া ও পরকালের কল্যাণ ও নেয়ামত পেয়ে ধন্য হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জিকেএস