টানা দরপতনের পর গেলো সপ্তাহজুড়ে দেশের শেয়ারবাজারে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখীতার দেখা মিলেছে। সপ্তাহজুড়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে মূল্যসূচক। এতে এক সপ্তাহে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা বেড়ে গেছে।
Advertisement
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত সপ্তাহে দেশের শেয়ারবাজারে তিন কার্যদিবস লেনদেন হয়। এর প্রতি কার্যদিবসই ঊর্ধ্বমুখী ছিল বাজার। অবশ্য আগের সপ্তাহে লেনদেন হওয়া চার কার্যদিবসেই বাজার পতনের মধ্যে ছিল। এতে ডিএসইর বাজার মূলধন ১০ হাজার ২১১ কোটি টাকা কমে যায়।
এ বড় দরপতনের পর শেয়ারবাজারে গত সপ্তাহ শুরু হয় ঊর্ধ্বমুখীতা দিয়ে। পরের দুই কার্যদিবসও ঊর্ধ্বমুখী থাকে শেয়ারবাজার। এতে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৮ হাজার ১০৯ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৫ লাখ ৩ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ গেলো সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ৪ হাজার ৮৪৩ কোটি টাকা।
বাজার মূলধন বাড়ার পাশাপাশি গেল সপ্তাহে ডিএসইতে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৫৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪২টির। আর ৮৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
Advertisement
এতে গত সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স বেড়ছে ৯২ দশমিক ৬৭ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৫১ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ১৬৩ দশমিক ৪৮ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৫৯ শতাংশ।
আর বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক গত সপ্তাহে বেড়েছে ২৫ দশমিক ৬৬ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ১৭ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৭০ দশমিক ৮১ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক ১৩ শতাংশ।
প্রধান ও ডিএসই-৩০ মূল্যসূচকের পাশাপাশি বেড়েছে ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক। গত সপ্তাহে এ সূচকটি বেড়েছে ২০ দশমিক ৬৭ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৫৪ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ২৯ দশমিক ৪৭ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ১৪ শতাংশ।
সবকটি সূচকের উত্থানের পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৯৪৬ কোটি ২৩ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৮৯৬ কোটি ১ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়ছে ৫০ কোটি ২২ লাখ টাকা বা ৫ দশমিক ৬১ শতাংশ।
Advertisement
আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৮৩৮ কোটি ৭০ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ৩ হাজার ৫৮৪ কোটি ৫ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন কমেছে ৭৪৫ কোটি ৩৫ লাখ টাকা বা ২০ দশমিক ৮০ শতাংশ। মোট লেনদেন কমার কারণ গত সপ্তাহে মাত্র তিন কার্যদিবস লেনদেন হয়।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২১০ কোটি ১২ লাখ ৬৪ হাজার টাকা, যা মোট লেনদেনের ৭ দশমিক ৪০ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা মালেক স্পিনিংয়ের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৮৬ কোটি ৬১ লাখ ২৬ হাজার টাকা। ৮৫ কোটি ৮৭ লাখ ২৬ হাজার টাকা লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে আইপিডিসি ফাইন্যান্স।
এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ফরচুন সুজ, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, সোনালী পেপার, ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন, কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ এবং কেডিএস এক্সসরিজ।
এমএএস/এমএএইচ/জিকেএস