ধর্ম

মসজিদে নববির যে স্থানগুলো মর্যাদাপূর্ণ

মসজিদে নববি। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মসজিদ। মদিনার এ মসজিদ বিশ্ব মুসলিমের হৃদেয়র সর্বোচ্চ আবেগ-অনুভূতির কেন্দ্রস্থল। মক্কার নিষ্ঠুর আচরণের বিপরীতে মদিনার কোমল পরিবেশ নবিজিকে প্রশান্তি ও নিরাপত্তা দান করেছিল। মদিনা আজও মুমিন মুসলমানের সর্বোচ্চ প্রশান্তির স্থান। মদিনার মসজিদে নববির ভেতরের মর্যাদাপূর্ণ স্থানগুলোতে বিচরণ মুমিন মুসলমানের জন্য তুলনাহীন প্রশান্তি ও আরামদায়ক। মসজিদে নববির মর্যাদাপূর্ণ সে স্থানগুলো কী?

Advertisement

সারাবিশ্ব থেকে মুসলিম উম্মাহ জেয়ারতের উদ্দেশ্যে দয়াল নবিজির রওজা মোবারকে উপস্থিত হন। মর্যাদাপূর্ণ স্থানগুলোতে অবস্থান করে হৃদয় ও মন জুড়িয়ে নেন। মর্যাদাপূর্ণ স্থানগুলো হলো-

১. রিয়াজুল জান্নাহ

নবিজির পবিত্র হুজরা মোবারক। মিম্বারের পাশের জায়গাটিই রিয়াজুল জান্নাহ বা বেহেশতের বাগান হিসেবে পরিচিত। এ স্থানে নামাজ আদায়ের বিশেষ ফজিলত রয়েছে। মসজদে নববি কার্পেট লাল রংয়ের হলেও রিয়াজুল জান্নাহ অংশের কার্পেটের রং সাদা।

Advertisement

২. ওস্তুওয়ানা হান্নানা

নবিজির মিম্বারের ডান পাশের খেজুর গাছের খুঁটির স্থানে নির্মিত স্তম্ভ এটি। এ খেজুর গাছের খুঁটির পাশ থেকে নবিজির মিম্বার স্থানান্তর করার সময় এটি উঁচ্চ আওয়াজে কেঁদেছিল।

৩. ওস্তুওয়ানা সারির

নবিজি যে স্থানে ইতেকাফ করতেন এবং রাতের বেলায় যেখানে বিশ্রাম গ্রহণ করতেন। এটি রওজা শরিফ সংলগ্ন পশ্চিম পার্শ্বে অবস্থিত।

Advertisement

৪. ওস্তুওয়ানা ওফুদ

নবিজির বৈঠকখানা। বিভিন্ন স্থান থেকে আগত প্রতিনিধি দলের সঙ্গে যে স্থানে বসে নবিজি বৈঠক করতেন এবং আগত লোকজন যেখানে বসে নবিজির কথা শুনতেন এবং ইসলাম গ্রহণ করতেন।

৫. ওস্তুওয়ানা আয়েশা

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আমার মসজিদে একটি ফজিলতপূর্ণ স্থান রয়েছে, এ স্থানে নামাজ আদায়ের ফজিলত জানলে লোকজন এ স্থানের সন্ধান পাওয়ার জন্য প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতো। স্থানটি চিহ্নিত করতে সাহাবাগণ অনেক চেষ্টা করতেন। অবশেষে নবিজির ইন্তেকালের পর হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা তাঁর ভাগ্নে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে যুবাইরকে সে জায়গাটির সন্ধান দিয়ে বলেন, ‘এটিই সেই স্তম্ভ। এই স্তম্ভটি ওস্তুওয়ানা ওফুদের পশ্চিম পাশে রওজায়ে জান্নাতের ভেতরে অবস্থিত।

৬. ওস্তুওয়ানা আবু লুবাবা

তাওবার স্তম্ভ। হজরত আবু লুবাবা রাদিয়াল্লাহু আনহুর একটি ভুলের জন্য তিনি নিজেকে এই স্তম্ভের সঙ্গে বেঁধে বলেছিলেন, ‘যতক্ষণ না পর্যন্ত বিশ্বনবি নিজ হাতে বাঁধন খুলে দেবেন; ততক্ষণ পর্যন্ত আমি এর সঙ্গে বাঁধা থাকব। আর নবিজি বলেছিলেন, ‘আল্লাহ তাআলার নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত এ বাঁধন খুলব না।’ এভাবে দীর্ঘ ৫০ দিন অতিবাহিত হয়ে যায়। পরে হজরত আবু লুবাবার তওবা কবুল হলে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজ হাতে তাঁর বাঁধন খুলে দেন। এ স্থানটি ওস্তুওয়ানা ওফুদের পশ্চিম পাশে রওজায়ে জান্নাতের ভেতর অবস্থিত।

৭. ওস্তুওয়ানা জিবরিল

হজরত দাহিয়াতুল কালবি রাদিয়াল্লাহু আনহুর আকৃতিতে হজরত জিবরিল আলাইহিস সালাম যখন ওহি নিয়ে আসতেন; তখন অধিকাংশ সময় তিনি এ স্থানে বসা থাকতেন।

৮. নবিজির মিহরাব

কাউকে কষ্ট না দিয়ে নিষিদ্ধ সময় ছাড়া এ স্থানে নফল নামাজ পড়া উত্তম। এ মিহরাবের ডান পাশে দাঁড়িয়েই নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাজ পড়তেন।

আল্লাহ তাআলা সব জেয়ারতকারীদের মর্যাদাপূর্ণ এ স্থানসমূহে ইবাদাত-বন্দেগি করার তাওফিক দান করুন। সমগ্র মুসলিম উম্মাহকে এ সব স্থান জেয়ারত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/জেআইএম