ধর্ম

নবিজির (সা.) সাক্ষাৎ পাওয়ার আমল

নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাক্ষাৎ চায় না এমন মুসলমান খুঁজে পাওয়া যাবে না। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাক্ষাৎ পাওয়ার অনেক আমল আছে তবে ছোট্ট ও সহজ একটি আমল আছে নবিজিকে দেখার। কিন্তু কী সেই আমল; যে আমলে পাওয়া যাবে নবিজির সাক্ষাৎ?

Advertisement

নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বিশ্ববাসীর জন্য রহমত স্বরূপ পাঠিয়েছেন স্বয়ং আল্লাহ তাআলা। তিনি তাঁকে কেন্দ্র করেই সমগ্র পৃথিবীর সৃষ্টি করেছেন। মানুষের প্রতি মহান আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ যে, তিনি মানুষকে নবিজির প্রতি দরূদ পাঠের জন্য নির্দেশ প্রদান করেছেন।

ছোট-বড় একাধিক দরূদ আছে। দরূদ পাঠেই পাওয়া যাবে নজিবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাক্ষাৎ। এ দরূদ পাঠেই মানুষের ঈমানি শক্তি বৃদ্ধি পায়। বেশি বেশি দরূদ পাঠকারীর সঙ্গে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাক্ষাৎ নসিব হয়ে যায়। সবার জন্য ছোট্ট একটি দরূদ হলো এমন-

صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّم

Advertisement

উচ্চারণ : ‘সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।’

দরূদ শরিফের মধ্যে সর্বোত্তম দরূদ হলো ‘দরূদে ইবরাহিম’। যেটি মুসলিম উম্মাহ নামাজের তাশাহহুদে পড়ে। কিন্তু নবিজির জিয়ারতে ধন্য হতে উল্লেখিত ছোট্ট দরূদটিও কার্যকরী। যা পড়েই নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জিয়ারত বা দিদার লাভের চেষ্টা সাধনায় আত্মনিয়োগ করা যায়।

মানুষ যখন নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পবিত্র নাম শুনে তখন ছোট্ট দরূদটিই বেশি পড়ে। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তিন শ্রেণির ব্যক্তিকে আল্লাহ তাআলা ধ্বংসের অভিশাপ দিয়েছেন। তাদের মধ্যে একশ্রেণি হলো- যারা নবিজির পবিত্র নাম শুনলো কিন্তু তাঁর প্রতি দরূদ পাঠ করল না।’ (নাউজুবিল্লাহ)

নবিজির প্রতি সম্মান দেখানোর নির্দেশ

Advertisement

নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি সালাত ও সালাম প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন স্বয়ং আল্লাহ তাআলা। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সম্মান জানাতে বান্দার প্রতি নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ বলেন-

‘আমি আপনাকে (নবি করে) প্রেরণ করেছি (বিশ্ববাসীর জন্য) সাক্ষীরূপে, সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে। যাতে তোমরা (মানুষ) আল্লাহ ও তার রাসূলের প্রতি ঈমান আন এবং তোমরা রাসুলকে শক্তি যোগাও, তাঁকে সম্মান কর।’ ( সূরা ফাতাহ : আয়াত ৮ ও ৯)

নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি দরূদ পাঠের নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন-

‘নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা নবির প্রতি অনুগ্রহ করেন এবং তার ফেরেশতারাও নবির জন্য অনুগ্রহ প্রার্থনা করে। হে মুমিনগণ! তোমরাও নবীর জন্য অনুগ্রহ প্রার্থনা করো ও তাকে যথাযথভাবে সালাম জানাও।’ (সুরা আহজাব : আয়াত ৫৬)

দরূদ পড়ার ফজিলত

১. যে ব্যক্তি হাশরের ময়দানে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে থাকতে চান, সে যেন বেশি বেশি দরূদ পাঠ করেন।

২. যে ব্যক্তি নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মহব্বতে বেশি বেশি দরূদ পাঠ করবে, তাঁর জন্য  রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুপারিশ আবশ্যক হয়ে যায়।

৩. যে ব্যক্তি মহব্বতের সঙ্গে বেশি বেশি দরূদ পাঠ করবে, আল্লহ তাআলা দরূদের বরকতে ওই ব্যক্তিকে স্বপ্নযোগে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জিয়ারত নসিব করে দেন।

৪. বেশি বেশি দরূদ পাঠ করলে আল্লাহ তাআলা বান্দার সব চাওয়া-পাওয়া কবুল করেন।

সুতরাং যে ব্যক্তি নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাক্ষাত লাভ করবেন বা হাশরের ময়দানে তাঁর সুপারিশ লাভ করবেন। ওই ব্যক্তির জন্য জাহান্নামের আগুন হারাম হয়ে যায়।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে নামাজে পড়া দরূদে ইবরাহিম বেশি বেশি পড়ার তাওফিক দান করুন। হাটা-চলা, ওঠা-বসায়, অবসরে নবিজির প্রতি দরূদ পাঠের তাওফিক দান করুন। বিশেষ করে সবচেয়ে ছোট্ট দরূদ ‘সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।’ পড়ে নবিজির জিয়ারত ও সুপারিশ পাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/জেআইএম