অভ্যন্তরীণ নৌপথে চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দর হতে কনটেইনার পরিবহনে সুবিধা এবং অন্যান্য কার্গো পরিবহনের জন্য মাল্টিপারপাস জেটিসহ ট্রানজিট শেড নির্মাণ করা হবে। এজন্য ‘আশুগঞ্জ অভ্যন্তরীণ কনটেইনার নদীবন্দর স্থাপন’ প্রকল্পের সময় ও ব্যয় বৃদ্ধি করা হয়েছে।
Advertisement
এই প্রকল্পের মাধ্যমে নদীপথে আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটানো হবে। এটিসহ ৬ প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।
এগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৫০৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ১ হাজার ৬২৮ কোটি ১৩ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক ঋণ সহায়তা থেকে ৮৭৬ কোটি ৬২ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।
মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এসব প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা।
Advertisement
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম।
‘আশুগঞ্জ অভ্যন্তরীণ কনটেইনার নদীবন্দর স্থাপন’ প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। মূল অনুমোদিত প্রকল্পের ব্যয় ছিল ১ হাজার ২৯৩ কোটি টাকা। একনেক সভায় প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ৭৫১ কোটি টাকা। এর মধ্যে ভারতীয় ঋণ ৭৩২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। বাকি অর্থ সরকারি কোষাগার থেকে মেটানো হবে।
মূল অনুমোদিত প্রকল্পটি জুলাই ২০১৮ হতে ডিসেম্বর ২০২২ মেয়াদে সম্পন্ন হওয়ার কথা। প্রকল্পের মেয়াদ ডিসেম্বর ২০২৪ সাল নাগাদ বৃদ্ধি করা হয়। প্রকল্প এলাকা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলা।
প্রকল্পের প্রধান কাজ
Advertisement
৩১ দশমিক ৭৭ একর ভূমি অধিগ্রহণ, চার লাখ ঘনমিটার ভূমি উন্নয়ন, ৩৮টি কার্গো হ্যান্ডলিং যন্ত্রপাতি কেনা, রেলপথ সংযোগ, পিজিসিবি টাওয়ার নির্মাণ। এছাড়া প্রকল্পের আওতায় ৪ হাজার ৫০০ বর্গমিটার পোর্ট ওয়ার্ক, ৪৩ হাজার ৩৭৫ বর্গমিটার কার্গো টার্মিনাল অবকাঠামো নির্মাণ এবং ৩১ হাজার ৬১৫ বর্গমিটার অভ্যন্তরীণ রাস্তা নির্মাণ করা হবে।
প্রকল্প সংশোধনের কারণ
সিডিউল দর পরিবর্তন এবং চূড়ান্ত ড্রইং-ডিজাইনের ফলে প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি, বিভিন্ন অবকাঠামোর লে-আউট পুনর্গঠন, ড্রইং-ডিজাইন ও গ্রাউন্ড ইমপ্রুভমেন্ট, বন্দরের অবকাঠামোগত সুবিধাসহ জেটি সুপারস্ট্রাকচার নির্মাণ করা হবে। পাইলিং, জেটি ফিটিং সংক্রান্ত কার্যক্রমের পরিধি বৃদ্ধি, কার্গো টার্মিনাল অবকাঠামো ও অন্যান্য অঙ্গের ব্যয় বৃদ্ধি, রেলসংযোগ সংক্রান্ত কার্যক্রম এলওসির পরিবর্তে জিওবি অর্থায়নের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে। কার্গো হ্যান্ডলিং ইক্যুইপমেন্টের পরিমাণ ও ব্যয় বৃদ্ধি, পূর্ত কাজের প্যাকেজ একত্রিতকরণ, ব্যক্তি মালিকানাধীন ভূমি অধিগ্রহণ ও ক্ষতিপূরণ খাতে ব্যয় কমানো হবে। জনবলের বেতন-ভাতা ও পরামর্শক সেবা খাতে ব্যয় বৃদ্ধি এবং প্রকল্পের বাস্তবায়ন মেয়াদ ২ বছর বৃদ্ধি করা হয়।
পরিকল্পনা কমিশনের মতামত
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রাম, মোংলা ও অন্যান্য পোর্ট হতে কনটেইনারসমূহ অভ্যন্তরীণ নৌপথ ব্যবহার করে দেশের বিভিন্ন স্থানে এবং প্রতিবেশী দেশে কনটেইনার পরিবহন সহজতর হবে। এর ফলে আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক বাণিজ্যিক সুবিধাদি সৃষ্টি হবে, যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এমওএস/ইএ/জিকেএস