তেজপাতা শুধু রান্নায় মসলা হিসেবেই নয়, এটির অনেক ঔষধী গুণও রয়েছে। মুখের অরুচি দূর করা থেকে শুরু করে, মাড়ির ক্ষত সারাতে এবং চর্মরোগ দূর করতেও এর গুরুত্ব অপরিসীম। প্রসাধনী দ্রব্য তৈরিতেও তেজপাতা ব্যবহার করা হয়। এছাড়া তেজপাতা গাছের বাকল থেকে সুগন্ধি তেল ও সাবানও তৈরি করা হয়।
Advertisement
অনেক কৃষক বেশি লাভের আশায় বর্তমানে তেজপাতার চাষ করছেন। বাজারে প্রচুর পরিমাণে তেজপাতার চাহিদা থাকায় কেউ কেউ এটি বাণিজ্যিকভাবে চাষ করছেন। তবে বেশি পরিমাণে লাভ করতে হলে তেজপাতা চাষের সঠিক নিয়ম মেনে চাষ করতে হবে।
তেজপাতা চাষের জন্য বেলে দো-আঁশ মাটি ভালো। এটি যেখানে চাষ হবে সেই জমি অবশ্যই উঁচু হতে হবে। বেলে দো-আঁশ ছাড়াও প্রায় সব ধরনের মাটিতেই তেজপাতার চাষ করা যায়। বৈশাখ থেকে আষাঢ় মাসের মধ্যবর্তী সময় তেজপাতা চাষের জন্য আদর্শ।
তেজপাতার চারা জমিতে মাদা করে চারা রোপণ করা উচিত। জমিতে যখন ছায়া অবস্থান করবে তখন তেজপাতার চারা লাগানোর উপযুক্ত সময়। চারা রোপণ করার সবসময় সোজাভাবে রোপণ করা উচিত। চারা যদি মারা যায় তাহলে সেই চারা সরিয়ে নতুন করে চারা লাগাতে হবে। মূলত বীজ থেকে তেজপাতার চারা তৈরি হয়। তেজপাতার চারা লাগানোর পর সেই অঞ্চলে ছায়ার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজন হলে সেখানে বড় গাছ লাগাতে হবে। চারা লাগানোর পর জমিতে পানি দিতে হবে।
Advertisement
জমিতে উপযুক্ত পরিমাণে সার প্রয়োগ হলে তেজপাতার ফলনও স্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাবে। জমিতে ৫০ কেজি গোবর সার, ইউরিয়া ১৫০ গ্রাম, টিএসপি ১৫০ গ্রাম, এমওপি ১৫০ গ্রাম প্রয়োগ করতে হবে। এছাড়াও চারা যখন রোপণ করা হবে তখন প্রত্যেকটি মাদায় ১০০ গ্রাম টিএসপি এবং ১০ গ্রাম ছাই দেওয়া উচিত।
শুকনো মৌসুমে জমিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে সেচ দিতে হবে। পানির অভাবে যাতে গাছ না মারা যায় তার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। পানি নিকাশের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখা প্রয়োজন।
তেজপাতার জমিতে আগাছা হলে তা সঙ্গে সঙ্গে পরিষ্কার করে দিতে হবে। আগাছা গাছের পুষ্টি নষ্ট করে দিতে পারে, এর জন্যই আগাছা দেখা দিলে এই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। কোনো তেজপাতা গাছ ৮ থেকে ৯ বছর হলে তা কেটে ফেলতে হবে।
তেজপাতা গাছের মূলত পাতা পোড়া এবং পাতায় গল রোগ দেখা যায়। ছত্রাকের কারণে এই পাতা পোড়া রোগ হয়ে থাকে তেজপাতা গাছের। কচি পাতায় প্রধানত এই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। তেজপাতায় এই রোগ দেখা দিলে, পানিতে টিল্ট মিশিয়ে গাছে স্প্রে করা উচিত।
Advertisement
এমএমএফ/জিকেএস