জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির ব্যাপক প্রভাব পড়েছে পোলট্রি শিল্পে। নীলফামারীতে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ৬০ টাকা। ফার্মের মুরগির ডিমের হালি ১২ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। দেশি মুরগি ও হাঁসের ডিম বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭০ টাকায়।
Advertisement
দাম বৃদ্ধির ফলে ব্রয়লার মুরগি ও ডিম বিক্রি অনেকটাই কমে গেছে বলে জানিয়েছেন দোকানিরা। খামারিরা বলছেন, ফিডের মূল্যবৃদ্ধি আর যানবাহনের ভাড়া বেড়ে যাওযায় বেড়ে গেছে ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দাম।
রোববার (১৪ আগস্ট) ও সোমবার (১৫ আগস্ট) নীলফামারী জেলার বাজারগুলো ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
বেশিরভাগ পণ্যের দাম বাড়ার কারণে বেকায়দায় পড়েছেন নিম্নআয়ের মানুষ। তারা সাধ্যের মধ্যে খরচ করছেন। তবে কাঁচা মরিচের দাম কেজিতে ১০০ টাকা কমে ১৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে বেড়েছে চিনির দাম। প্রতি কেজি খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা দরে। প্যাকেট চিনি ৯৮ টাকা দরে বিক্রি করছেন দোকানিরা।
Advertisement
সৈয়দপুরের জিকরুল হক রোডে বাজার করতে আসা ভ্যানচালক আব্দুর রহিম বলেন, ‘বাড়িতে মেয়ে ও জামাই এসেছে। ব্রয়লার মুরগি কিনতে এসে দেখি ২৩০ টাকা কেজি চাচ্ছে দোকানি। অথচ এক সপ্তাহ আগেই ১৫০ টাকা করে কিনে নিয়ে গেছি। দাম বাড়ার কারণে বাধ্য হয়ে ছোট মুরগি কিনতে হচ্ছে।’
শিরিনা বেগম নামের এক নারী বলেন, ‘প্রতিদিন বাসায় ডিমের প্রয়োজন হয়। বাচ্চারা ডিমের তরকারি ছাড়া ভাত খেতে চায় না। বাজারে এসে দেখি ফার্মের মুরগির ডিমের হালি ৫০ টাকা করে। কয়েকদিন আগেই ৩৮ টাকা হালি হিসেবে এক ডজন ডিম নিয়ে গিয়েছিলাম। এভাবে দাম বাড়লে আমাদের পক্ষে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়বে।’
পৌর শহরের ডিম ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন বলেন, ‘আমরা ডিলারদের কাছ থেকে ১১৫০ টাকা শয়ে (১০০) ডিম কিনছি। আর পাইকারি বাজারে ১০ টাকা লাভে ১১৬০ টাকা দরে বিক্রি করছি। গত পরশু দাম কিছুটা কম থাকলেও আজ খাঁচায় ১০০ টাকা করে দাম বেড়েছে। দেশি মুরগির ডিম হালি ৬৫-৭০ টাকা ও ফার্মের ডিম ৪৮-৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।’
ব্রয়লার মুরগি কেজি ২২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে বলে জানান সৈয়দপুর শহরের ব্যবসায়ী মাহাবুব হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ডিলারদের কাছ থেকে ২০০ টাকা কেজিতে মাল কিনে আনি। দুই সপ্তাহ আগেও ১৫০-১৬০ টাকা দরে কিনেছি। তেলের দাম বৃদ্ধির ফলে যাতায়াত ভাড়া বেড়ে গেছে। এজন্য মুরগির অস্বাভাবিক দাম বেড়েছে।’
Advertisement
বাজারে সোনালি মুরগি ৩২০, দেশি মুরগি ৪০০-৪২০ ও লেয়ার ২৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তিনি।
মুরগির দাম বৃদ্ধির ফলে বিক্রি অর্ধেকে নেমেছে বলে জানান পৌর শহরের ব্যবসায়ী তোফাজ্জল হোসেন। তিনি বলেন, আগে দিনে যেখানে দুই মণের মতো মুরগি বিক্রি করতাম দাম বাড়ার পর বিক্রি এক মণে নেমে এসেছে। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ব্রয়লার মুরগি সাধারণত নিম্নআয়ের মানুষেরা কিনে থাকেন। দাম বাড়ার কারণে তারা এখন কম করে কিনছেন।
এদিকে সরকারিভাবে চিনির দাম না বাড়লেও বাজারে প্রতি কেজি চিনিতে ১০ টাকা বেড়ে ৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্যাকেটজাত চিনি বিক্রি হচ্ছে ৯৮ টাকা করে।
এসআর/এমএস