দিনে মানুষের পদচারণায় মুখরিত থাকলেও রাতে মিরপুরের ফুটওভার ব্রিজটির চিত্র পাল্টে যায়। রাত হলেই ওই ব্রিজটি চলে যায় পতিতা আর ছিনতাইকারীদের দখলে। তাই রাতে অনিরাপত্তার কারণে এই ফুটওভার ব্রিজটির ব্যবহার কমিয়ে দেন পথচারীরা। গত বৃহস্পতিবার সরেজমিনে ঘুরে এমনই চিত্র দেখা গেছে। সরেজমিনে দেখা যায়, দিনভর মানুষের পদচারণায় মুখরিত মিরপুর ফুটওভার ব্রিজটি রাতে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এর প্রধান কারণ পতিতাদের আহ্বানে সম্মান হারানো আর ছিনতাইকারীদের হাতে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র খোয়া যাওয়ার ভয়। রাত সাড়ে ৮টায় দেখা যায়, চৌ কোনাকার এই ফুটওভার ব্রিজের মাঝে কিছু বখাটের আড্ডা চলছে। এসময় বাবা কিংবা স্বামীর সঙ্গে ওই ওভার ব্রিজ দিয়ে যাওয়ার সময় অনেক নারীই হচ্ছেন অশালীন ভঙ্গি ও আহ্বানের শিকার। ফলে অনেকে ওই ফুটওভার ব্রিজে উঠেও ভয়ে নেমে যাচ্ছেন। এদিকে, ফুটওভার ব্রিজটির পশ্চিম পার্শ্বে ও উত্তর পার্শ্বেই মূলতঃ পতিতারা অবস্থান নিয়ে থাকে। যুবক ও তরুণদের সামনে পেলেই অঙ্গভঙ্গিতে প্রকাশ করে সে পতিতা। এসব কারণেই রাতে ফুটওভার ব্রিজটির ব্যবহার ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, ওই সময়ের মধ্যে মাত্র ১৮ জন পথচারী ব্যবহার করেছে ফুটওভার ব্রিজটি। এক ঘণ্টা পর ব্রিজটির পাশে অবস্থানরত ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, প্রয়োজনের তাগিদেই এটা নির্মাণ করা হয়েছে। অথচ রাতে অনিরাপত্তাহীনতা ও পতিতাদের দ্বারা ভোগান্তির ভয়েই ফুটওভার ব্রিজটি ব্যবহার করছেন না পথচারীরা। এতে ব্যবসাতেও বিঘ্ন ঘটছে বলে জানান তারা। আফসার উদ্দিন নামে মিরপুর-১০ এর এক ব্যবসায়ী জানান, প্রতিদিন আমি মিরপুর-১ এ নেমে ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করে ওপারে যাই। যাওয়ার পথে গত সোমবার ১০ হাজার টাকাসহ স্মার্টফোন খোয়া যায় ছিনতাইকারীদের হাতে। এরপর থেকে আর ওই ওভার ব্রিজে উঠি না। বাংলা কলেজের শিক্ষার্থী মনির হোসেন জানান, সন্ধ্যার পর থেকেই এখানে পতিতাদের আনাগোনা বাড়তে থাকে। বান্ধবী নিয়ে ফুটওভার ব্রিজ পাড় হতে গিয়ে পতিতাদের আহ্বানে বড় লজ্জাজনক পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে। সে কারণে আর ওই ওভার ব্রিজ ব্যবহার করি না। এব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ভূইয়া মাহবুব হোসেন বলেন, ফুটওভার ব্রিজটি কিছুদিন আগেও হকার ব্যবসায়ীদের দখলে ছিল। তা সিটি কর্পোরেশনের সহযোগিতায় দখলমুক্ত করা হয়েছে। তবে রাতের অবজারভেশন পাইনি। যেহেতু এখন জানলাম সেহেতু তড়িৎ ব্যবস্থা নেয়া হবে।জেইউ/একে/আরআইপি
Advertisement