দেশজুড়ে

আন্তর্জাতিক ফোরামে ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার দাবি

তিস্তাসহ সকল অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্যহিস্যা আদায়ে ভারত সরকার সাড়া না দিলে আন্তর্জাতিক ফোরামগুলোতে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল বাসদ (মার্কসবাদী)।মঙ্গলবার দুপুরে তিস্তার পানির ন্যায্যহিস্যা আদায়ের দাবিতে আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি রংপুর থেকে তিস্তা ব্যারেজ অভিমুখে রোডমার্চ সফল করার লক্ষ্যে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তারা।এসময় লিখিত বক্তেব্য বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় বর্ধিত ফোরামের সদস্য ও রংপুর বিভাগীয় সংগঠক কমরেড মঞ্জুর আলম মিঠু বলেন, দুই দেশের সচিব পর্যায়ের বৈঠক হচ্ছে। বৈঠকে তিস্তাসহ সকল অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্যহিস্যা প্রসঙ্গে কার্যকর আলোচনা উত্থাপন করা হোক। ভারত সরকার এক্ষেত্রে সাড়া না দিলে আন্তর্জাতিক ফোরামগুলোতে ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার দাবি জানাচ্ছি।লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, দেশে এখন বোরো মওসুম শুরু হয়েছে। রংপুর, দিনাজপুর ও নীলফামারী জেলার এক লাখ ১১ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষের জন্য যতটুকু পানি প্রয়োজন, তার পুরোটাই নির্ভরশীল ছিল তিস্তা সেচ প্রকল্পের উপর। অথচ বর্তমানে সেই সেচ প্রকল্প প্রায় অচল। পানি না থাকায় এ বছর মাত্র ১০ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সেচ প্রকল্প থেকে জমিতে সেচ দিতে বিঘা প্রতি খরচ হয় ১৫০-২০০ টাকা, তার বাইরে ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহার করে সেচ দিতে বিঘা প্রতি খরচ হয় ২৫০০-২৭০০ টাকা। ফলে পানি না পাওয়ায় গত বছর চাষিদের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা। এ বছরও ভয়াবহ সঙ্কটে পড়বে চাষিরা। কারণ এখনই বাংলাদেশ এলাকায় তিস্তার পানির পরিমাণ ১ হাজার কিউসেক এর নিচে নেমে এসেছে। আগামী দিনগুলোতে সেটা আরও কমে যাবে।পানি উন্নয়ন বোর্ডের হিসেব মতে এক সময় শুষ্ক মওসুমে বাংলাদেশ অঞ্চলে তিস্তা নদীতে ১৪ হাজার কিউসেক পানি প্রবাহিত হতো। ভারত তিস্তার উজানে গজল ডোবায় বাঁধ দিয়ে এবং তারও উজানে বেশ কিছু জলবিদ্যুৎ প্রকল্প ও ক্যানেল করে একতরফা পানি প্রত্যাহার করায় তা কমতে কমতে আজ শুষ্ক মওসুমে ৩০০/৪০০ কিউসেকে দাঁড়িয়েছে। ভারত কর্তৃক বে-আইনিভাবে পানি প্রত্যাহার করায় একদিকে যেমন সেচ প্রকল্প অচল হয়ে কৃষি বিপর্যস্ত হচ্ছে অন্যদিকে নদী শুকিয়ে যাওয়ায় মাছসহ অন্যান্য জলজপ্রাণি বিলুপ্ত হচ্ছে। হাজার হাজার জেলে পরিবার বেকার হয়ে পেশা পরিবর্তনে বাধ্য হচ্ছে। শুষ্ক মৌসুমে ভারত সেচের সময় পানি দিচ্ছে না আবার বর্ষা মওসুমে ব্যাপক পানি ছাড়ার ফলে নদী ভাঙন ও বন্যা সমস্যায় সর্বস্ব হারাচ্ছে তিস্তা অঞ্চলের মানুষ। তাই তিস্তার পানির ন্যায্যহিস্যা আদায়ের দাবিতে আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি রংপুর থেকে তিস্তা ব্যারেজ অভিমুখে রোডমার্চ সফল করার লক্ষ্যে সর্বস্তরের মানুষের প্রতি আহ্বান জানান হয়।সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় কার্য পরিচালনা কমিটির সদস্য কমরেড শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তী, কেন্দ্রীয় কার্য পরিচালনা কমিটির সদস্য ও রাজশাহী বিভাগীয় সংগঠক কমরেড ওবায়েদুল্লাহ মুসা, কেন্দ্রীয় বর্ধিত ফোরামের সদস্য ও গাইবান্ধা জেলা আহ্বায়ক কমরেড আহসানুল হাবিব সাঈদ, রংপুর জেলা সমন্বয়ক কমরেড আনোয়ার হোসেন বাবলু, পঞ্চগড় জেলা সমন্বয়ক অধ্যাপক তরিকুল আলম, বগুড়া জেলা সমন্বয়ক সামছুল আলম দুলু, দিনাজপুর জেলা সমন্বয়ক রেজাউল ইসলাম সবুজ, ঠাকুরগাঁও জেলা সমন্বয়ক মাহবুব আলম রুবেল, রংপুর জেলা কমিটির সদস্য পলাশ কান্তি নাগ প্রমুখ।  জিতু কবীর/এমএএস/আরআইপি

Advertisement