আন্তর্জাতিক

কে এই সালমান রুশদি

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে হামলার শিকার সালমান রুশদি গত পাঁচ দশক ধরে তার সাহিত্য কর্মের জন্য বারবার হত্যার হুমকি পেয়েছেন।

Advertisement

তার অনেক উপন্যাসই ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে যার মধ্যে আছে ১৯৮১ সালে বুকার পুরষ্কার জেতা দ্বিতীয় উপন্যাস মিডনাইট চিলড্রেন।

তবে ১৯৮৮ সালে প্রকাশিত হওয়া তার চতুর্থ বই স্যাটানিক ভার্সেস হলো সবচেয়ে বিতর্কিত কাজ যা তাকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নজিরবিহীন বিপদে ফেলে দেয়।

বইটি প্রকাশের পর তাকে হত্যার হুমকি আসে যা তাকে আত্মগোপনে যেতে বাধ্য করে। ব্রিটিশ সরকার তখন তাকে নিরাপত্তার আওতায় নিয়ে আসে।

Advertisement

১৯৮৯ সালে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনি রুশদির মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করে ফতোয়া জারি করেন।

জানা গেছে, সালমান রুশদি ভারতের স্বাধীনতার দুই মাস আগে বোম্বেতে (বর্তমান মুম্বাই) জন্মগ্রহণ করেন।

১৪ বছর বয়সে তাকে ইংল্যান্ডে পাঠানো হয়। তখন ভর্তি হয়েছিলেন রাগবি স্কুলে। পরে ইতিহাসে অনার্স ডিগ্রি নেন ক্যামব্রিজের মর্যাদাপূর্ণ কিংস কলেজ থেকে।

এরপর ব্রিটেনের নাগরিকত্ব নেন ও তার মুসলিম বিশ্বাস থেকে সরে দাঁড়ান। কিছুদিন অভিনেতা হিসেবে কাজ করা ছাড়াও বিজ্ঞাপনের কপিরাইটিংয়ের কাজও করেছেন।

Advertisement

তার প্রথম প্রকাশিত বই গ্রিমাস খুব একটা সাফল্য পায়নি। তবে সমালোচকরা তখনই তার মধ্যে সম্ভাবনা খুঁজে পেয়েছিলেন।

এরপর দ্বিতীয় বই মিডনাইট চিলড্রেন লিখতে তিনি পাঁচ বছর সময় নেন। বইটি বুকার পুরষ্কার লাভ করে। এটি ছিল দারুণভাবে প্রশংসিত ও বিক্রি হয়েছিল প্রায় পাঁচ লাখ কপি। মিডনাইট চিলড্রেন ছিল ভারতকেন্দ্রিক।

এরপর তার তৃতীয় বই শেইম প্রকাশিত হয় ১৯৮৩ সালে। যার বিষয়বস্তু ছিল পাকিস্তানকেন্দ্রিক। এর চার বছর পর রুশদী লিখেছিলেন দ্যা জাগুয়ার স্মাইল যা ছিল নিকারাগুয়া ভ্রমণভিত্তিক। আর ১৯৮৮ সালে প্রকাশিত হয় দ্য স্যাটানিক ভার্সেস যা তার প্রাণনাশের হুমকি সৃষ্টি করে।

পরাবাস্তববাদী উত্তরাধুনিক এই বইটি তীব্র ক্ষোভের তৈরি করে মুসলিমদের অনেকের মধ্যে। তারা মনে করেন বইটিতে ধর্ম অবমাননা করা হয়েছে।

ভারতই প্রথম এই বইটি নিষিদ্ধ করে। পরে পাকিস্তানসহ অন্য বেশ কিছু মুসলিম দেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকাও একই পদক্ষেপ নেয়।

১৯৮৯ সালের জানুয়ারিতে ব্রাডফোর্ডের একদল মুসলিম বইটির একটি কপি পুড়িয়ে দেয় ও নিউজ এজেন্ট ডব্লিউএইচএস স্মিথ তাদের ডিসপ্লে থেকে বইটি সরিয়ে নেয়।

ফেব্রুয়ারিতে উপমহাদেশে রুশদি বিরোধী দাঙ্গায় অনেকে নিহত হন। তেহরানে ব্রিটিশ দূতাবাসে পাথর ছোড়া হয় আর রুশদির মাথার দাম ঘোষণা করা হয় তিন মিলিয়ন ডলার।

স্যাটানিক ভার্সেসের জাপানি অনুবাদককে টোকিওতে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় ১৯৯১ সালের জুলাইতে।

পুলিশ জানিয়েছিল যে তাকে কয়েক দফায় ছুরিকাঘাত করে তার অফিসের বাইরে ফেলে রাখা হয়।

এর আগে সেই মাসেই ইতালির অনুবাদককে তার অ্যাপার্টমেন্টেই ছুরিকাঘাত করা হয়েছিলো। যদিও তিনি প্রাণে বেঁচে যান।

সূত্র: বিবিসি

এমএসএম/এএসএম