বগুড়ার গাবতলীতে প্রবাসী স্বামীর টাকা আত্মসাৎ করতে মেয়েকে লুকিয়ে রেখে অপহরণ ও মুক্তিপণের নাটক সাজানোর অভিযোগ উঠেছে এক নারীর বিরুদ্ধে। বগুড়ার শেরপুর থেকে মেয়েটিকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
Advertisement
গাবতলী উপজেলার দুর্গাহাটা এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) শিশুটিকে উদ্ধার করে পুলিশ। বর্তমানে শিশু ও তার মা পুলিশ হেফাজতে।
দুপুরে গাবতলী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম জানান, বুধবার (১০ আগস্ট) বিকেল ৩টায় একজন ফোনে তাকে জানান, দুর্গাহাটা বাজারে অবস্থিত সার্ক মডেল কেজি স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী মঞ্জিলা খাতুনকে (উঞ্জিলা) কৌশলে স্কুল থেকে অপহরণ করে পরিবারের কাছে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়েছে।
খবর পেয়ে গাবতলী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হাফিজ উদ্দিনসহ সঙ্গীয় ফোর্স দ্রুত ঘটনাস্থল দুর্গাহাটা সার্ক মডেল কেজি স্কুলে যায়। স্কুলের হিসাবরক্ষক রাসেল মাহমুদ ও প্রধান শিক্ষক আনিছুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, শিক্ষার্থী উঞ্জিলা সকাল ১০টায় অসুস্থতার কারণে ছুটি নিয়ে বাড়ি গেছে।
Advertisement
পুলিশ স্কুলের সিসিটিভি ক্যামেরায় দেখতে পায়, উঞ্জিলা তার নিজ বাড়ি দুর্গাহাটা লাল খাঁ পাড়া না গিয়ে উল্টো পূর্ব দিকে যাচ্ছে। তার পেছনে বোরকা পরিহিত একজন মধ্যবয়সী নারীও যাচ্ছেন। একপর্যায়ে উঞ্জিলা দুর্গাহাটা ঘোষপাড়া সড়ক দিয়ে অটোরিকশায় উঠে উত্তর দিকে সারিয়াকান্দি উপজেলার ফুলবাড়ির দিকে রওয়ানা হয়।
পুলিশ সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে অটোরিকশার চালককে শনাক্ত করে। চালক জানান, ফুলবাড়িতে উঞ্জিলা খাতুনের নানি নাজমা বেগম (৫০) অপেক্ষায় ছিলেন। পরে তার কাছ থেকে উঞ্জিলাকে নিয়ে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার উলিপুর গ্রামে খালার বাড়ি রেখে আসেন মা ফারজানা (৩২)।
পরে গাবতলী থানায় এসে ফারজানা জানান, তার মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে। তার কাছ থেকে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হচ্ছে। পরে অভিযান চালিয়ে উলিপুর গ্রাম থেকে উঞ্জিলাকে উদ্ধার করে পুলিশ। উঞ্জিলাসহ তার মা ফারজানা ও নানিকে গাবতলী থানায় আনা হয়। সেখানে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাসে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
ওসি সিরাজ জানান, উঞ্জিলার বাবা উকিল মিয়া দীর্ঘদিন ধরে ইরাকে থাকেন। এর আগে তিনি ১৫ লাখ টাকা পাঠান। তখন ফারজানা জানিয়েছিলেন সেই টাকা হারিয়ে গেছে। বিষয়টি তার স্বামী মেনে নেন।
Advertisement
পরে উকিল মিয়া দু-একদিনের মধ্যে দেশে আসবেন বলে স্ত্রী ফারজানাকে ফোনে জানান। এ খবর শোনার পর স্ত্রী ফারজানা ও তার মা নাজমা বেগম টাকা আত্মসাতের নাটক সাজান। উঞ্জিলাকে মিথ্যা কথা শিখিয়ে তাকে ব্যবহার করেন।
ওসি সিরাজুল ইসলাম আরও জানান, ফারজানা, তার মা নাজমা বেগম ও শিশু উঞ্জিলাকে গাবতলী মডেল থানা ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার হেফাজতে রাখা হয়েছে। তাদের আরও জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
এসআর/এএসএম