বরিশালের আগৈলঝাড়ায় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম মোর্তুজা খানের ছেলে ও শ্যালকদের নেতৃত্বে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে এক উপ-পরিদর্শকসহ (এসআই) চারজনকে আহত করা হয়েছে। এ ঘটনায় হামলাকারী দুই শ্যালককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার সদরের নগবাড়ি এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় এসআই আ. হক, এএআই মিজানুর রহমান, কনস্টেবল মজিদ ও পুলিশের সঙ্গে থাকা কিবরিয়া নামে এক ব্যক্তি আহত হন। এসময় গুরুতর আহত এএসআই মিজানকে আগৈলঝাড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরে হামলার সঙ্গে জড়িত উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের দুই শ্যালক নুরুল হোসেন ও কাওছারকে আটক করে পুলিশ।আহত পুলিশ সদস্যরা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জাগো নিউজকে জানান, উপজেলার নগড়বাড়ি গ্রামের ঠিকাদার ও ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন হাওলাদার ওরফে উমেদ আলী গিয়াসের মেয়ে সাথীর সঙ্গে একই উপজেলার নিমারপাড় গ্রামের ঠিকাদার ব্যবসায়ী সেকেন্দার আলী মিয়ার ছেলে শফিকুল ইসলামের পারিবারিকভাবে বিয়ের দিন ধার্য হয়। ওই বিয়েতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে উপজেলার নগড়বাড়ি গ্রামের মোবাশ্বর আলী হাওলাদার ওরফে মফসের ডলারের ছেলে ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যার গোলাম মোর্তুজা খানের শ্যালক আমিন আহম্মেদ। মেয়ে বিয়ের জন্য সাথীর বাবা গিয়াস হাওলাদারের কাছে বড় অঙ্কের চাঁদা দাবি করে আমিন। একইভাবে ছেলের বাবা সেকেন্দারের পরিবারের কাছেও অনুরূপ চাঁদা দাবি করেন আমিন। উভয় পরিবারকে অব্যাহত হুমকির মুখে রাখেন আমিন। এ ঘটনায় আমিনকে আসামি করে গিয়াস হাওলাদার ও সেকেন্দার মিয়া সোমবার আগৈলঝাড়া থানায় চাঁদাবাজির অভিযোগে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন। যার নং-১ এবং ২ (১.২.১৬)। পুলিশ অভিযুক্ত আমিনকে সোমবার গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত আমিন গৌরনদী রাসেল হত্যা মামলার অন্যতম আসামী। বর্তমানে সে উচ্চ আদালত থেকে জামিনে রয়েছে।আমিন গ্রেফতারের পর আমিনের ভাগ্নে ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম মোর্তুজা খানের ছেলে শাহবাজ খান ও আটক আমিনের ভাই নুরুল হোসেন ও কাওছারসহ তাদের সহযোগিরা সকালে মামলার বাদী উমেদ আলীকে মামলা প্রত্যাহারের জন্য তার বাড়িতে খুঁজতে থাকে। গিয়াসের পরিবার বিষয়টি থানায় জানালে থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আ. হক, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মিজানুর রহমান ও কনস্টেবল মদিজকে ঘটনাস্থলে পাঠান। তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে শাহবাজ খানের নেতৃত্বে পুলিশের উপর হামলা চালানো হয়। এতে পুলিশের দুই অফিসার এক সদস্যসহ চারজন আহত হন।আগৈলঝাড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম জাগো নিউজকে জানান, চাঁদাবাজি মামলার তদন্তে এসআই মিজানুর রহমান নগরবাড়ি এলাকার উপজেলা চেয়ারম্যানের বাড়ির সামনে পৌঁছালে তার ছেলে শাহাবাজ খান, দুই শ্যালক কাওসার ও নুর হোসেন হাওলাদার প্রকাশ্যে অতর্কিতভাবে হামলা চালিয়ে পিটিয়ে পুলিশের দুই অফিসার এক সদস্যসহ চারজনকে আহত করে। খবর পেয়ে থানার অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে এসেই মিজানুরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। তাৎক্ষণিক পুলিশ ঝটিকা অভিযান চালিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যানের দুই শ্যালক কাওসার ও নুর হোসেন হাওলাদারকে আটক করে। হামলার প্রধান হোতা শাহবাজ খানকে গ্রেফতারে জোর প্রচেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় আটককৃতসহ অন্যদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। সাইফ আমীন/এমজেড/এমএস
Advertisement