শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার বুরুঙ্গা কালাপানি সীমান্ত থেকে আজ (মঙ্গলবার) আরো ৫ হাজার ২০০ পিস গুলি উদ্ধার করা করেছে র্যাব-৫। এ নিয়ে দুই দিনে মোট ৪৮ হাজার ২০০ পিস গুলি ও ৬০টি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এসব গুলির মধ্যে বিমান বিধ্বংসী কামানের গুলি, মেশিনগান, পিস্তল ও বিভিন্ন ধরনের রইফেলের গুলি রয়েছে।উদ্ধারকৃত অস্ত্রের মধ্যে বিমান বিধ্বংসী স্পেয়ার ব্যারেল ১টি, হেভী মেশিনগান ২টি, মেশিনগানের স্পেয়ার ব্যারেল ৫টি, স্লাইপার রাইফেল ২টি, একে-৫৬ রাইফেল ১টি, ৭.৬২ এমএম পিস্তল ২টিসহ মোট ৬০টি অস্ত্র রয়েছে। এছাড়া উদ্ধারকৃত সামরিক সরঞ্জামের মধ্যে রয়েছে- ম্যাগাজিন ৩৭টি, ওয়াটিটকি ৬টি, ক্লিন সেন্টার ক্যানভাস, ক্রানভাস ২টি, কম্পাস ৩টি, ডিসি চার্জার ১ ভোল্টের ২টি, স্যাটেলাইট ফোন ৫টি, টেলিস্কোপিক সাইট ৫টি, এইচএফ সেট ৪টি, ড্রাম ম্যাগাজিন ৭টিসহ আরো বিভিন্ন সামরিক সরঞ্জামাদি।অভিযানে নেতৃত্ব দানকারী র্যাব-৫ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মাহবুব আলম মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে জাগো নিউজকে জানান, বুরুঙ্গা সীমান্তে অস্ত্র উদ্ধার অভিযান প্রায় শেষের দিকে। এদিন (মঙ্গলবার) আরো ৫ হাজার ২০০টি গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। এর ফলে গতকাল ও আজ দুইদিনে ৪৮ হাজার ২০০ পিস গুলি উদ্ধার হল। তবে আজ (মঙ্গলবার) আর কোনো অস্ত্র উদ্ধার হয়নি।এখন উদ্ধারকৃত অস্ত্র ও গোলাবারুদের সিজার লিস্ট তৈরির কাজ চলছে বলে জানান তিনি।গতকাল সোমবার ভোর ৩টা থেকে র্যাব-৫ ও র্যাবের ইন্টিলিজেন্স উইং এ গোলাবরূদ ও অস্ত্র অভিযান পরিচালনা করে। পরে বিকেলে ঘটনাস্থলে র্যাবের লিগ্যাল এইড অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক উইং কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, সারাদেশেই র্যাব অস্ত্র ও গালাবারুদ উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করছে। তারই অংশ হিসেবে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার বুরুঙ্গা সীমান্তের কালাপানি এলাকার চেংবান্ধা রিজার্ভ ফরেস্টের পাহাড়ি টিলায় অভিযান চালানো হয়।তিনি আরো বলেন, দুই দিন ধরে গোয়েন্দা তৎপরতা শেষে পাহাড়ি টিলা এলাকা সুইপিং করে চারটি স্পটে নিশ্চিত হয়ে এ অভিযান চালায় র্যাব-৫। অভিযানকালে প্রায় ৪৩ হাজার গোলাবারুদসহ ৬০টি অস্ত্র ও নানা ধরনের বিপুল পরিমাণ সামরিক সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়। ভোর ৩টা থেকে অভিযান পরিচালনা করা হয়।অস্ত্র ও গোলবারুদগুলো কাদের হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে মামলা হবে। মামলার পর তদন্তে সেটা বেরিয়ে আসবে। এখনই এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা যাচ্ছে না।অভিযানকে কেন্দ্র করে বিজিবি ও পুলিশ এলাকাটি ঘেরাও করে রাখে। জনগণের চলাচলের উপরও আরোপ করা হয় বিধি-নিষেধ। র্যাব সদস্যরা উদ্ধারকৃত অস্ত্র ও গুলি কাদের হতে পারে তা নিশ্চিত করে না বললেও স্থানীয় অধিবাসীরা বলেছেন, এসব অস্ত্র-সস্ত্র ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার হতে পরে। এক সময় ওই এলাকায় উলফাদের বিচরণ ছিল বলেও তারা জানান।উল্লেখ্য, এর আগেও ২০০৭ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে ঝিনাইগাতীতে ভারত সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে অন্ততঃ ৫০ হাজার গুলি, রকেট, মাইন ও বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র উদ্ধার হয়। ২০১০ সালে ঝিনাইগাতির বাকাঁকুড়া গুচ্ছগ্রাম থেকে উদ্ধার করা হয় ১৩ হাজার রাইফেলের গুলি। ২০১২ সালে নালিতাবাড়ীর এক গ্রাম থেকে উদ্ধার করা হয় একে-৪৭ রাইফেল ও গুলি। মাইন উদ্ধারের পর ২০১০ সালে বিজিবির পক্ষ থেকে ধারণা করা হয়েছিল, সেগুলো ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ‘সংযুক্ত মুক্তি বাহিনী অসম’ বা ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসামের (উলফার) এর ফেলে যাওয়া গোলাবারুদ।হাকিম বাবুল/আরএস/এমএস
Advertisement