ইলিশের ভরা মৌসুমেও পটুয়াখালীতে জেলেদের জালে কাঙ্ক্ষিত ইলিশের দেখা মিলছে না। এ কারণে বাজারগুলোতে এখনও পর্যাপ্ত ইলিশের সরবরাহ নেই। যে কয়েকটি ইলিশ উঠছে তার দামও সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। এছাড়া বাজারে অনান্য সামুদ্রিক মাছের দামও আকাশছোঁয়া। এতে সাধ আর সাধ্যের সম্মিলন ঘটাতে ব্যর্থ হচ্ছেন মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তরা।
Advertisement
উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালী। নদ-নদী ও সাগরবেষ্টিত হওয়ায় এই এলাকার মানুষের পাতে সারা বছরই মাছের উপস্থিতি থাকে। আর সরকারি হিসাবেও এই জেলা মৎস্য উৎপাদনে উদ্বৃত্ত একটি জেলা। তবে বর্তমানে ইলিশের ভরা মৌসুমেও এই জেলার মানুষের পাতে ইলিশের উপস্থিতি নেই। বাজারে অপ্রতুল ইলিশের সরবরাহ এবং আকাশছোঁয়া দামে ইলিশের স্বাদ এখন অনেকে জাটকাতেই পূরণ করছেন।
পটুয়াখালী শহরের বিভিন্ন মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে ছোট সাইজের জাকটাও ৬শ টাকা কেজিতে কিনেতে হয়, আর বড় সাইজের ইলিশ ১৫শ থেকে ১৮শ টাকায় বিকিকিনি হচ্ছে।
শুধু ইলিশ নয়, অনান্য সামুদ্রিক মাছের দামও বেশি বলে জানান বিক্রেতারা। যে কারণে অনেকেই মাছ কিনতে হিমসীম খাচ্ছেন।
Advertisement
পটুয়াখালী শহরের নিউ মার্কেট মাছের বাজারের ক্রেতা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী আব্দুস সোবাহান বলেন, কোনো কিছুর দাম নিয়ন্ত্রণে নেই। মাছের বাজারে এই সময় ইলিশের আধিপত্য থাকার কথা, কিন্তু পুরো বাজারে বড় সাইজের ইলিশ আছে ৮ থেকে ১০টি। আর এসব মাছের যে দাম হাঁকা হচ্ছে তা আমাদের সাধ্যের বাইরে। সকল পণ্যের দাম দিনকে দিন বাড়ছে। বাকি ছিল মাছের দাম, তাও এখন আকাশচুম্বী।
বিগত বছরগুলোর থেকে এ বছর মাছের সরবরাহ কম বলেও জানান বিক্রেতারা। নিউ মার্কেটের মাছ বিক্রেতা আল আমিন জানান, মাছের সরবরাহ থাকলেও দাম চড়া। বর্তমানে জাটকা ইলিশের কেজি ৪শ থেকে সাড়ে ৪শ টাকা। ৭শ থেকে ৮শ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি ১ হাজার থেকে ১২ টাকা আর ১ কেজি সাইজের ইলিশের দাম ১৫ থেকে ১৮শ টাকা। যা গত বছর এই সময়ে ২শ থেকে ৩শ টাকা কম ছিল। এছাড়া বিভিন্ন পদের সামুদ্রিক মাছ আড়াইশ থেকে ৫শ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এসএম আজহারুল ইসলাম জানান, বাজারে ইলিশের পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকলেও জেলেদের জালে মোটামুটি ভালো ইলিশ ধরা পড়ছে। তবে সাম্প্রতিক সময় যেহেতু সকল পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে সে কারণে হয়তো ইলিশের দামও কিছুটা বেশি।
পটুয়াখালী জেলায় প্রতি বছর ১ লাখ ২৩ হাজার ৯৭৯ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদন হয়ে থাকে। এর মধ্যে জেলায় মাছের চাহিদা রয়েছে ৩৭ হাজার ৩৮৬ মেট্রিক টন। আর বাকি ৮৬ হাজার ৫৯৩ মেট্রিক টন মাছ অন্যান্য জেলার মানুষের আমিষের চাহিদা পূরণ করে।
Advertisement
আব্দুস সালাম আরিফ/এফএ/জেআইএম