শীত তো যাই যাই করছে। শুকনো পাতারা স্মৃতির টানে ঘরছাড়া। প্রকৃতি আবার সেজে উঠবে বর্ণালী রূপে। ঋতুরাজ বসন্তের উৎসবে সাজবে ফ্যাশনপ্রেমী নারীরাও। নয়নজুড়ানো প্রকৃতির এই উৎসবে শামিল হতে কে না চায়! বসন্ত বরণের প্রস্তুতি কম-বেশি সবার মাঝেই থাকে। সেই প্রস্তুতি যেন পরিপূর্ণরূপে সম্পূর্ণ হয়, তাই নিয়েই আমাদের আজকের আয়োজন-বসন্তে শুধু বাসন্তি কিংবা হলুদ-সবুজ রঙের পোশাক পরতে হবে- এমন ধারণা পাল্টে গেছে। পয়লা ফাগুনে আপনি চাইলে পরতে পারেন যে কোনো রঙিন পোশাক। তবে সালোয়ার-কামিজের থেকে শাড়ি পরেই বসন্তকে বরণ করে নিতে বেশি উৎসাহী থাকেন তরুণীরা। শাড়ি পরতে চাইলে এক প্যাঁচেই বেশ মানাবে পহেলা ফাগুনে। অথবা পরতে পারেন নিজস্ব যে কোনো স্টাইলে। ব্লাউজে বিশেষত্ব নিয়ে এসেছে ঘটি হাতার ব্লাউজ বা থ্রি কোয়ার্টার হাতা, গলায় কুচি দিয়েও তৈরি করতে পারেন।বসন্তের সাজে মেকআপ খুব গাঢ় নয়, হাল্কা করে সাজতে হবে। কারণ দিনের রোদে মেকআপ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। মেকআপ নেয়ার আগে মুখমণ্ডলটাকে মেকআপ উপযোগী করে তুলতে ভালোভাবে ক্লিনজিং করে নিন। এবার ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম লাগিয়ে নিন। ১০ মিনিট পর ফাউন্ডেশনের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা পানি মিশিয়ে মুখমণ্ডলে লাগিয়ে নিন। ফাউন্ডেশন মসৃণভাবে ত্বকে মিশিয়ে নিন। তারপর হাল্কা ফেসপাউডার বুলিয়ে নিন। ত্বকের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে শেড নির্বাচন করুন। এবার চোখ দুটিকে সাজিয়ে নিন একটু গাঢ় করে মাসকারা, আইলাইনার, কাজল আর হালকা আইশ্যাডো দিয়ে। অবশেষে লিপস্টিক আর কপালে একটি লাল রঙের বড় টিপ। হাল্কা লিপগ্লস বুলিয়ে নিতে পারেন ঠোঁটে। লিপলাইনার একটু গাঢ় রঙের বেছে নিন।বসন্ত বরণে যেহেতু সারাটা দিনই বাইরে কাটবে, তাই চুলের দিকটায় একটু বিশেষ নজর রাখতে হবে। যেভাবেই সাজুন না কেন, চুলের সাজটা যেন তার সঙ্গে মানানসই হয়। চুল খোলা রাখতে পছন্দ করেন অনেকেই। এ ক্ষেত্রে এক পাশে ক্লিপ আটকে তার ওপর ফুল গুঁজে দিতে পারেন। অথবা কানের পাশ দিয়ে হাল্কাভাবে গুঁজে দিতে পারেন কয়েকটি ফুল। ফুল বড় হলে একটি, ছোট হলে তিন-চারটি। চাইলে সামনের দিকের কিছুটা চুল ব্যাককোম্ব করে নিতে পারেন। পেছনে চুল আটকানোর জায়গাটিতে আটকে দিতে পারেন পছন্দের ফুলটি। দুই পাশ থেকে চুল পেঁচিয়ে এনেও পুরো চুল খোলা রাখতে পারেন। এ ক্ষেত্রে দুল ও মেকআপের সঙ্গে মিলিয়ে সঠিক জায়গায় ফুলটিকে আটকে নিন। খোঁপার চারপাশ দিয়ে মালা না পেঁচিয়ে একটু অন্যভাবেও পরতে পারেন। খোঁপার চারপাশ দিয়ে পরপর ছোট ফুল গেঁথে নিন অথবা একটি বড় ফুল খোঁপা ও কানের মধ্যে আটকে নিন। বেণিতেও অন্যভাবে ফুল আটকে তৈরি করতে পারেন ভিন্ন লুক। সামনে দুই পাশ থেকে চুল টুইস্ট করে টেনে পেছনে নিয়ে আটকে নিন ক্লিপ দিয়ে। এবার সাধারণভাবে বেণি করে মাঝে মধ্যে ফুল আটকে নিতে পারেন। সামনের টুইস্ট করা অংশেও ছোট ফুল আটকে নিতে পারেন।ফাগুন দিনের সাজ আর তাতে ফুল থাকবে না- তাই কী হয়! পয়লা ফাগুনের সাজের মূল আকর্ষণই হল ফুলকে ঘিরে। রঙ মিলিয়ে শাড়ি কিংবা সালোয়ার-কামিজ সবকিছুর সঙ্গেই পরতে পারেন ফুল। পোশাকের রঙের সঙ্গে হুবহু না মিলিয়ে সব রঙের পোশাকের জন্য সাদা ফুল বেছে নিতে পারেন। অথবা লালরাঙা ঠোঁট আর লাল টিপের সঙ্গে মিলিয়ে পরতে পারেন লাল ফুল। পাশ্চাত্য পোশাক অথবা চাইলে শাড়ির সঙ্গে সুতা বা ফিতায় পেঁচিয়ে একপাশ করে গলায় পরতে পারেন ফুল। হাতে ক্লাচ ব্যাগের সঙ্গে খুব ভালো মানিয়ে যাবে সাজটা। সে ক্ষেত্রে চুল বাঁধায় আনুন বৈচিত্র্য। দিনের বেলায় ফুল কম পরুন। বড় হলে একটা ফুলই থাক। ছোট ফুল হলে দুটি বা তিনটি নিন। রাতের সাজে গ্লিটারসহ ফুল বেছে নিন জমকালো কোনো পোশাকের সঙ্গে। যখন বড় ফুল পরবেন, তখন গলা ও কানের গয়নাটা একটু হাল্কা বেছে নিন। এবার রঙিন ফুলের বর্ণিল সাজে রঙিন হয়ে ওঠার পালা। হলুদ গাঁদা মন কাড়াবেই। কিন্তু অন্য ফুলগুলোও নজর কাড়তে কম যায় না। মেরুন, হলুদ, সাদা, নীল রঙের চন্দ্রমল্লিকা, ক্যালানডুলা ফুলগুলোরও চাহিদা অনেক বেশি। এ ছাড়া হলুদ-লাল রঙের চায়নিজ চেরিও তাল মেলাচ্ছে অন্যদের সঙ্গে। বসন্ত উৎসবে আরও পরতে পারেন গ্ল্যাডিওলাস, রজনীগন্ধা, জারবারা। এ ছাড়া গাঁদা, গোলাপ আর অর্কিড তো থাকছেই।এইচএন/এমএস
Advertisement