দেশজুড়ে

ভাঙা রাস্তায় ঝাঁকুনিতে ভ্যানেই সন্তান প্রসব

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় ভাঙা সড়কে ঝাঁকুনিতে ভ্যানেই সন্তান প্রসব করেছেন শেফালী বেগম (২৮) নামে এক প্রসূতি। শনিবার (৭ আগস্ট) দিবাগত রাত ১টার দিকে জামালপুর (নন্দীবাজার)-ধানুয়া কামালপুর-রৌমারী-দাঁতভাঙ্গা সড়কের কুড়িগ্রাম অংশের রৌমারী উপজেলা শহরের ইসলামী ব্যাংকের সামনে পৌঁছালে এ ঘটনা ঘটে।

Advertisement

প্রসূতি শেফালী খাতুন রৌমারী সদর ইউনিয়নের রৌমারী উত্তরপাড়া গ্রামে ফরিজল হকের স্ত্রী।

শেফালী খাতুনের শ্বশুর আজিমুদ্দিন জানান, প্রসবব্যথা উঠলে শেফালী খাতুনকে অটোভ্যানে করে হাসপাতালে নেওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়া হয়। উপজেলা শহরের ইসলামী ব্যাংকের সামনে সড়ক ভাঙাচোরা হওয়ায় গাড়িতে প্রচণ্ড ঝাঁকি লাগে। এ সময় একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন শেফালী খাতুন।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে সড়কটি বেহাল অবস্থায় পড়ে থাকলেও কারো নজর নেই। আমার পুত্রবধূ এখনও অসুস্থ।

Advertisement

রৌমারী উপজেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি সেলিম মিয়া বলেন, ২০১৮ সালে সাড়ে ৩১ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার ও সম্প্রসারণের জন্য সরকার ৩৩২ কোটি ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিলেও জনগণ এখনো এর কোনো সুফল পাচ্ছে না। দুর্ভোগ আরও বেড়ে গেছে। বিশেষ করে উপজেলা পরিষদ গেট থেকে থানা মোড় পর্যন্ত এই সড়কটির অবস্থা খুবই খারাপ। বেহাল এ সড়কে গাড়ি চলাতো দূরের কথা, হেঁটে চলাও মুশকিল। বিষয়টি ইউএনওকে জানালেও কোনো ফল হয়নি।

সড়কটির পাশে কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়কটি কাদা আর পানিতে তলিয়ে যায়। আবার বৃষ্টি না হলে ধুলাবালিতে ভরে যায় পুরো শহর। এ সময় যানবাহনের ছিটা কাদা এসে দোকানের মালামাল নষ্ট হয়ে যায়। এতে অনেক ক্ষতি হয়।

অটোভ্যান চালক আব্দুল খালেক বলেন, এ রাস্তায় গাড়ি চালাতে গেলেই গাড়ি নষ্ট হয়। দিনে যা আয় হয়, গাড়ি সারতেই (মেরামত) তা শেষ হয়। আমরা গরিব মানুষ। রাস্তা ভালো না। বাঁচবো কিভাবে।

রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, রাস্তার মাঝে সন্তান প্রসবের বিষয়টি জেনেছি। বিষয়টি খারাপ লেগেছে। সড়কের বেহাল দশার বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকসহ (সার্বিক) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে। এছাড়াও কুড়িগ্রাম সড়ক ও জনপদের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলীকেও অনেকবার বলা হয়েছে।

Advertisement

সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম বলেন, মাটি না পাওয়ার কারণে রাস্তার কাজ বন্ধ রয়েছে। ঠিকাদারকে তাগাদা দেওয়া হয়েছে। তারা জানিয়েছে চলতি মাসের ১৫ তারিখ থেকে কাজ শুরু করবেন।

এফএ/জেআইএম