নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা মেঘনা ও ধলেশ্বরী মোহনায় চর কিশোরগঞ্জ এলাকায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে নৌ-চাঁদাবাজরা। গত এক বছরে অসংখ্যবার নৌযান শ্রমিকরা হামলা ও লুটপাটের শিকার হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে হায়েনারূপী রাঘববোয়াল নৌ-চাঁদাবাজরা। এবার অভিযোগ উঠেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতেই অভিপ্রায় নামের একটি নৌযানের উপর হামলা চালিয়ে শ্রমিকদের মারধর করে লুটে নেয়া হয়েছে নৌযানের মালামাল। সোমবার বিকেলে ওই ঘটনার সময়ে ঘটনাস্থলের অদূরে পুলিশ উপস্থিত থাকলেও তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ নৌযান শ্রমিকদের। তবে পুলিশ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সবুজ শিকদার জাগো নিউজকে জানান, তিন নদীর মোহনায় দীর্ঘদিন ধরেই নৌ-চাঁদাবাজরা বালুমহালের ইজারার টোকেন কাটার নামে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। সোমবার দুপুরে শীতলক্ষ্যা মেঘনা ও ধলেশ্বরী মোহনায় চর কিশোরগঞ্জ এলাকায় নৌ-চাঁদাবাজরা অভিপ্রায় নামের একটি নৌযান শ্রমিকদের মারধর করে তাদেরকে একটি কক্ষে আটকে নৌযানটির মূল্যবান সামগ্রী লুটে নেয়। এসময় কাছাকাছি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক টিম উপস্থিত থাকলেও তারা কোনরূপ পদক্ষেপ নেয়নি। পরে গজারিয়া থেকে কোস্টগার্ডের একটি টিম ও মুক্তারপুর নৌ পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে এসে নৌযান শ্রমিকদের উদ্ধার করে। তবে এসময় নৌচাঁদাবাজরা পালিয়ে যায়। নৌযান শ্রমিকরা জানান, তিন নদীর মোহনায় আওয়ামী লীগ নামধারী নেতা নাসিরউদ্দিন মেম্বার, চাঁন মিয়া, আফসু চেয়ারম্যান, নান্নু মিয়া ও হারুন শেখসহ একাধিক গ্রুপের ক্যাডার বাহিনী শ্রমিকদের উপর হায়েনা রূপে হামলা চালিয়ে সর্বস্ব লুটে নিচ্ছে। নারায়ণগঞ্জ নৌ পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. শাহআলম জাগো নিউজকে জানান, পুলিশের উপস্থিতিতে ঘটনাটি ঘটেছে এমন অভিযোগ সত্য নয়। নৌযানে হামলার খবর পেয়ে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে নৌশ্রমিকদের উদ্ধার করে। হামলাকারী নৌ-চাঁদাবাজদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। নারায়ণগঞ্জ জেলাস্থ কোস্ট গার্ড স্টেশন পাগলা এর ভারপ্রাপ্ত স্টেশন কমান্ডার অনারারী লেফটেন্যান্ট নাছিরউদ্দিন জাগো নিউজকে জানান, খবর পেয়ে তাদের পাগলাস্থ একটি টিম ও গজারিয়া স্টেশনের অপর একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। তবে এর আগেই নৌ-চাঁদাবাজরা পালিয়ে যায়। দুর্বলের পক্ষে সবসময়ই তাদের অবস্থান। নৌ-চাঁদাবাজরা যত প্রভাবশালীই হোক না কেন তাদের ছাড় দেয়া হবে না। নৌ-চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে তাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। উল্লেখ্য, বিভিন্ন নৌযানের শ্রমিকদের উপর নৌ-চাঁদাবাজদের হামলার প্রতিবাদে দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন করে আসছে নৌযান শ্রমিকরা। মো. শাহাদাত হোসেন/এমজেড/পিআর
Advertisement