অবশেষে পুলিশি নিরাপত্তায় এসএসসি পরিক্ষায় অংশ নিয়েছে বগুড়া শহরতলীর গোকুল মধ্যপাড়া গ্রামের ট্রাকচালক জিন্নাহ মিয়ার মেয়ে। রোববার রাতে বগুড়ার পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে পালিয়ে থাকা ওই পরিক্ষার্থীকে পুলিশের উদ্যোগে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। নিরাপত্তার জন্য ওই রাত থেকেই সেখানে সার্বক্ষণিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। গত প্রায় ২০ দিন ধরে এলাকার বখাটে যুবলীগ ক্যাডারের অত্যাচারে ঘর ছাড়া ছিলো তিনটি পরিবার। সোমবার পুলিশি নিরাপত্তায় গোকুল তছলিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এসএসসি পরিক্ষায় অংশ নেয় ওই পরিক্ষার্থী। এছাড়াও পুলিশের উদ্যোগেই রোববার রাতে যুবলীগ ক্যাডার আকুল ও রাব্বীসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে বগুড়া সদর থানায় মামলা রেকর্ড করা হয়। এ ঘটনায় রাতেই পুলিশ এজাহারভূক্ত ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে। এরা হলেন, যুবলীগ ক্যাডার রাব্বির বোন সোহাগী, ভগ্নিপতি আতিকুর রহমান বাবু, সহযোগী জিএম এবং সনি। ঘটনার মূল দুই আসামি আকুল ও রাব্বিকে সোমবার পর্যন্ত পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি।আতিকুর রহমান ওরফে আকুল এবং রাব্বি মিয়া নামের দুই চিহ্নিত সন্ত্রাসী পরিবারগুলোর দুই মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল। তা প্রত্যাখ্যাত হওয়ায় সশস্ত্র বাহিনী নিয়ে তারা মেয়ে দুটিকে অপহরণের চেষ্টা করে। এরই মধ্যে বসতবাড়িতে হামলাও চালিয়েছে তারা। পরিবারগুলোর দুই সদস্য ছিল এসএসসির পরীক্ষার্থী। নিরাপত্তাহীনতায় তাদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ অনেকটাই অনিশ্চিত। বগুড়ার পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান জানান, ঘটনাটি জানতে পেরে রোববার রাতেই তিনি পালিয়ে থাকা পরিবারের সদস্যদের পুলিশি প্রহরায় গ্রামে ফিরে নিয়ে আসেন। এরপর তার নির্দেশে অত্যাচারের শিকার পরিবারগুলোর নিরাপত্তা দিতে সেখানে দিনরাত সার্বক্ষণিক সশস্ত্র পুলিশি পাহারা মোতায়েন করা হয়।বগুড়া সদর থানার পুলিশের ওসি আবুল বাশার জানান, রোববার রাতে ট্রাকচালক জিন্নাহর ভাই আব্দুস সালাম বাদী হয়ে যুবলীগ কর্মী আকুল ও রাব্বিসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করে। মামলা দায়ের হওয়ার পরপরই পুলিশ এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৪ জনকে গ্রেফতার করে। ঘটনায় মূল অভিযুক্তদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। তিনি বলেন, হামলার ঘটনায় ৮ জনের নামে মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।গোকুল তমিসরুননেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম সোবাহান সবুজ জানান, নিপীড়নের শিকার মেয়েটিসহ অন্যজন তাদের পাশ্ববর্তী তসলিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। তার পরিবারের নিরাপত্তার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। ট্রাকচালক জিন্নাহ মিয়া জানান, তিনি এখন অনেকটাই চিন্তামুক্ত। তবে সন্ত্রাসীরা গ্রেফতার হলে আরো নিশ্চিন্ত হবেন। পুলিশ এখন সার্বক্ষণিক তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে বলে জানান তিনি।লিমন বাসার/ এমএএস
Advertisement