‘সিলেজ ইনভেস্টমেন্ট’ নামে একটি ওয়েবসাইটে বিনিয়োগ করে বেশি টাকা লাভের আশায় একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে গত তিন মাসে ৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে একটি চক্র। এ চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
Advertisement
সিআইডি জানায়, বিনিয়োগকারীরা প্রথমে লাভ পেলেও পরে বেশি লাভের আশায় মোটা অঙ্কের টাকা সিলেজ সাইটে বিনিয়োগ করে প্রতারণার শিকার হন।
গ্রেফতাররা হলেন- রনি খান (৩২), আরজু আক্তার (২৭) ও তাসনিম রহমান (২৫)। বুধবার (৩ আগস্ট) রাতে বরিশালে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার।
তাদের কাছ থেকে ৪টি মোবাইল, ৩টি বিকাশ/নগদ এজেন্ট সিম, বিভিন্ন ব্যাংকের কয়েকটি চেকবই ও নগদ ১ লাখ ২৮ হাজার ৬৩০ টাকা জব্দ করা হয়।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগ সিআইডি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার এস এম আশরাফুল আলম।
তিনি বলেন, সিলেজ সাইট নামক অনলাইন ইনভেস্টমেন্ট ব্যবসায় সাধারণ মানুষদের বেশি আয়ের লোভ দেখিয়ে চক্রটি প্রথমে প্রলুব্ধ করে। প্রথম দিকের ছোট অংকের ইনভেস্টমেন্টের কিছু মুনাফও চক্রটি মানুষকে দেয়। পরে এতে উদ্ভুদ্ধ হয়ে লাভের আশায় বড় অঙ্কের টাকা সিলেজ সাইটে বিনিয়োগ করে অনেকেই।
গ্রাহকদের মোটা অঙ্কের টাকা ডিপোজিট হওয়ার পর সিলেজ সাইট নামক ওয়েবসাইটটি বন্ধ করে দেয় চক্রটি। এছাড়া তাদের কথিত অফিসে তালা লাগিয়ে গ্রাহকদের কোটি কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যায় তারা।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার বলেন, চক্রটি তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এজেন্ট নিয়োগ দেয়। এজেন্টদের মাধ্যমে নগদ/বিকাশ/ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে তারা টাকা সংগ্রহ করত। এসব কর্মকাণ্ডের বিষয়ে সিআইডির সাইবার পুলিশের কাছে ৩টি অভিযোগ আসে।
Advertisement
এছাড়া গত ২৭ জুলাই জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সিলেজ সাইটের মাধ্যমে প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগীরা মানববন্ধন করেন। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে চক্রটির বিষয়ে নজরদারি শুরু করে সিআইডির সাইবার পুলিশ। নজরদারির এক পর্যায়ে তাদের বরিশাল থেকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, চক্রটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট/নগদ/বিকাশ এজেন্টের মাধ্যমে টাকা সংগ্রহ করে সেই টাকা ক্যাশ করে গ্রেফতাররা দুবাই প্রবাসী সানজিদা ও তার স্বামী আশিকের নির্দেশে বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করত।
তাদের কাছ থেকে জব্দ হওয়া মোবাইলে বিভিন্ন ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার তথ্য পাওয়া যায়। মূলত চক্রটি দুবাই থেকে সানজিদা-আশিক দম্পতি নিয়ন্ত্রণ করে আসছিল। গত ৩-৪ মাসে তারা প্রায় ৪ কোটির টাকার বেশি বিভিন্ন ব্যাংকে টাকা জমা করেছে।
টিটি/এমআরএম/এমএস