সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা। বিষয়টি সমাধানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে প্রশাসনের দুই ঘণ্টা বৈঠকের পরও ফলপ্রসূ কোনো সমাধান না হওয়া এ ঘোষণা দেন তারা।
Advertisement
মঙ্গলবার (২ আগস্ট) বিকেল ৫টা থেকে ফের কর্মবিরতি শুরু করেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়া মূল অভিযুক্তদের গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন এবং ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে।
এদিকে, দুই শিক্ষার্থীর ওপর হামলা ও নারী ইন্টার্ন চিকিৎসকের শ্লীলতাহানির চেষ্টার ঘটনায় ১১ জনকে আসামি করে দুটি মামলা করেছে ওসমানী হাসপাতাল ও কলেজ কর্তৃপক্ষ। একটি মামলায় সাতজন এবং অন্য মামলায় একজনের নাম উল্লেখ করে ও তিনজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
Advertisement
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ মিঞা। তিনি বলেন, আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের একাধিক দল মাঠে রয়েছে।
জানা যায়, মঙ্গলবার (২ আগস্ট) দুপুর আড়াইটার দিকে হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে আন্দোলনরত ইন্টার্ন চিকিৎসক ও মেডিকেল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ, হাসপাতাল ও পুলিশ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা। বিকেল সাড়ে ৪টায় বৈঠক শেষ হলেও মূল আসামি গ্রেফতার না হওয়ায় বিষয়টির কোনো সমাধান হয়নি। ফলে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন এবং কর্মবিরতি পালনের মাধ্যমে আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের দাবি, বহিরাগতরা এখনো তাদের হুমকি দিচ্ছে। ফলে তারা নিরাপত্তা চান।
ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডা. মতিউর রহমান বলেন, মামলার এজাহারভুক্ত আসামিদের গ্রেফতার এবং শিক্ষার্থী ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের নিরাপত্তায় দৃশ্যমান উদ্যোগ নেওয়ার আগ পর্যন্ত আমরা ধর্মঘট চালিয়ে যাবো। সেবা দিতে এসে আমরা হামলা ও হয়রানির শিকার হতে রাজি নয়।
অন্যদিকে, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাজনিত সব দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে বলে জানান বৈঠকে উপস্থিত মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. ময়নুল হক ও হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া।
Advertisement
গত ৩১ জুলাই ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে স্থানীয় কাজলশাহ এলাকার এক রোগীর স্বজনদের সঙ্গে নারী ইন্টার্ন চিকিৎসকের হাতাহাতি হয়। এরপর মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীরা হামলাকারীদের পুলিশের হাতে হস্তান্তর করেন। পরে পুলিশ তাদের ছেড়ে দেয়।
এর জের ধরে সোমবার (১ আগস্ট) রাত ৯টার দিকে কলেজ ক্যাম্পাসে বহিরাগতরা ঢুকে অস্ত্র নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। এতে মেডিকেল কলেজের দুই শিক্ষার্থী আহত হন। আহতরা হলেন- তৃতীয় বর্ষের ছাত্র রুদ্র নাথ (২২) ও পঞ্চম বর্ষের ছাত্র নাঈমুর রহমান ইমন (২৪)।
এর প্রতিবাদে ওইদিন রাত ১০টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশ হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আবদুল হান্নানের ছেলে এহসান আহম্মদ (২২) ও মৃত রানা আহমদের ছেলে মো. সাহিদ হাসান রাব্বিকে (২৭) আটক করে।
পরে দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে মঙ্গলবার দুপুর ২টা পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত রাখার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
ছামির মাহমুদ/আরএডি