‘সুনীল অর্থনীতি বাংলাদেশে বিনিয়োগের নতুন সম্ভাবনাময় খাত। প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করতে পারলেই এ খাত থেকে আগামী কয়েক বছরের মাঝে বিলিয়ন ডলার আয় করা সম্ভব। এ জন্য দরকার যথাযথ নীতিমালা প্রণয়ন ও বিদ্যমান নীতিগুলো দ্রুত সংস্কার করে সহজ বিনিয়োগবান্ধব নীতি তৈরি করা।’
Advertisement
সোমবার (১ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) সম্মেলন কক্ষে ‘ব্লু ইকোনমি: প্রসপেক্টিভ ইকোনমিক এনগেজমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করা হয়। সেখানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংস্থাটির নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম এসব মন্তব্য করেন।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্সের সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম।
মূল প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের মোট সমুদ্রসীমার মাত্র ৬০ কিলোমিটারের মাঝ থেকে মাছ আহরণ করা হয়। এমনকি, ২০১২ সালে সমুদ্রসীমায় মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হলেও, এখনো ধরা ছোঁয়ার বাইরে তেল, গ্যাসসহ সামুদ্রিক সম্পদগুলো। এ বিষয়ে বেশকিছু পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হলেও আলোর মুখ দেখেনি। অথচ বাংলাদেশের সমুদ্র ব্লকের পাশেই মিয়ানমার অনেক আগেই খনিজ সম্পদ উত্তোলন শুরু করেছে।
Advertisement
খুরশেদ আলম বলেন, শুধু মাছ কিংবা খনিজ সম্পদ নয়, নিজেদের সীমানার মধ্যকার সমুদ্র ব্যবহার করে দেশের অর্থনীতির চিত্র পাল্টে দেওয়া যেতে পারে। সমুদ্র অর্থনীতিকে কাজে লাগিয়ে পর্যটন, জাহাজ শিল্প, গভীর সাগরে মাছ ধরার উপযোগী জাহাজ নির্মাণ, কনটেইনার, ওষুধ, প্রসাধনীসহ নানান শিল্প বিকশিত হতে পারে।
বাংলাদেশের যে সমুদ্রসীমা আছে তা মূল ভূখন্ডের ৮১ ভাগের সমান উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, পুরো বিশ্বে আন্তর্জাতিক সমুদ্রপথে প্রায় দেড় লাখ জাহাজ চলাচল করে। সেখানে বাংলাদেশের জাহাজ মাত্র ৭০টি। অথচ এ পথে পণ্য পরিবহনে ৯০০ কোটি ডলারের অর্থনীতি রয়েছে। এছাড়া, কনটেইনার নির্মাণেও বাংলাদেশের সম্ভাবনা রয়েছে, কারণ ৭৪ শতাংশ কনটেইনার ব্যবহৃত হয় এশিয়া অঞ্চলে।
‘প্রতি বছর ১৫ শতাংশ হারে বাণিজ্যের প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। অর্থাৎ ভবিষ্যতে কনটেইনারের চাহিদা আরও বাড়বে। বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি সমুদ্র বন্দর থাকলেও তা মাদার ভেসেল ভিড়ানোর জন্য উপযোগী নয়। এমতাবস্থায় মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মিত হলে তা সুনীল অর্থনীতির সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সহায়তা করবে।’
ব্যবসায়ীদের সংগঠন মেট্রোপলিটন চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম সুনীল অর্থনীতি ব্যবহার সংক্রান্ত সরকারি নীতি তৈরির ক্ষেত্রে বেসরকারি খাতের বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে বলেন।
Advertisement
মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিট, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়, মৎস্য, তেল ও জ্বালানি মন্ত্রষালয়, পর্যটন মন্ত্রলানয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর কর্মকর্তারা সেমিনারে অংশ নিয়ে মতামত প্রকাশ করেন।
এসএম/এসএএইচ/এমএস