দেশজুড়ে

নতুন রূপ পাচ্ছে সিলেটের জল্লারখাল

দীর্ঘ ২০ বছর পর ২০১৫ সালের ২৯ অক্টোবর সিলেটের জল্লারখাল এর অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে কোটি টাকা মূল্যের জায়গা উদ্ধার করেছে সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক)। ওই দিন অবৈধভাবে জল্লারখাল এ গড়ে উঠা মিষ্টির কারখানা, গরুর খামার, টিনশেডের কলোনি, ব্যাচেলর নিবাস, আধাপাকা ঘর, শৌচাগারসহ সীমানা দেয়াল গুড়িয়ে দেয় সিসিক। উদ্ধারের পরপরই সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবীব জানান, এসব জমি দখলমুক্ত করে চারিদিকে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে দেয়া হবে। পাশাপাশি একটি দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে এবং লেক তৈরি করার চিন্তা-ভাবনাও করা হচ্ছে। জল্লারখালের সঙ্গে জিন্দাবাজার থেকে প্রবাহিত ছড়া এবং তালতলা দিয়ে প্রবাহমান বলরামের খালের সংযোগ স্থাপন করার কথাও জানিয়েছিলেন তিনি।এবার কথা মোতাবেক জল্লারখালকে নতুন রূপ দেয়ার কাজে নেমেছে সিটি কর্পোরেশন। চলতি সপ্তাহ থেকে শুরু হয়েছে জল্লারখালের খননকাজ। দখল ও ভরাটের কারণে বন্ধ হয়ে পড়া জল্লারখালটি ৫১২ ফুট দৈর্ঘ্যে এবং ১২ ফুট প্রস্থে সম্পূর্ণনতুনভাবে খনন করা হবে। ইতোমধ্যে রোববার পর্যন্ত এস্কাভেটর দিয়ে ১৫০ ফুট (দৈর্ঘ্য) খনন কাজ সম্পন্ন করেছে সিটি কর্পোরেশন। ফলে ধীরে ধীরে নতুন রূপ ফিরে পাচ্ছে জল্লারখালটি।সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) নুর আজিজুর রহমান জানান, দ্রুত জল্লারখালের উদ্ধারকৃত অংশের খননকাজ শেষ করা হবে। এই অংশের খননের ফলে জল্লারখালের সঙ্গে জিন্দাবাজার থেকে প্রবাহিত ছড়া এবং তালতলা দিয়ে প্রবাহমান বলরামের খালের সংযোগ স্থাপন করা হবে। ফলে এই এলাকার জলাবদ্ধতাও কমে যাবে। খননের পর উদ্ধারকৃত অংশে প্রাথমিকভাবে ৮ ফুট অন্তর অন্তর পিলার দিয়ে এবং কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে সংরক্ষিত করা হবে। এ ব্যাপারে ১৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম মুনিম বলেন, এলাকার জলাবদ্ধতা দূর করার স্বার্থে ছড়া খনন, প্রশস্ত এবং দখলমুক্ত করা জরুরি। নতুবা এই এলাকার জলাবদ্ধতার সমস্যা দূর হবে না। তিনি জল্লারখালকে পুরনো রূপে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সহযোগিতা করায় ওয়ার্ডবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এদিকে, জল্লারখালকে ঘিরে একটি দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে নির্মাণ করার জন্য সিটি কর্পোরেশনকে নির্দেশনা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। সম্প্রতি ঢাকায় এক বৈঠকে অর্থমন্ত্রী এই নির্দেশনা দেয়ার পাশাপাশি সিলেট নগরীর জলাশয়, ছড়া ও খাল যাতে দখল না হয় সেজন্য অচিরেই কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান।প্রসঙ্গত, গত বছরের ৬ নভেম্বর অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জল্লারখালের উদ্ধারকাজ সরেজমিন দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। জল্লারখালকে ঘিরে একটি দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে এবং লেক তৈরি করা হলে নগরবাসীর জন্য এটি একটি মনোরম লোকেশন হবে বলেও মতপ্রকাশ করেন। অর্থমন্ত্রী জল্লারখালকে সম্পূর্ণ রূপে দখলমুক্ত করার পর চারিদিকে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করার জন্যও তাগিদ দিয়েছিলেন সেদিন। ছামির মাহমুদ/এআরএ/আরআইপি

Advertisement