ক্যাম্পাস

স্কুল ও মাদরাসায় স্টুডেন্টস কেবিনেট নির্বাচনের নির্দেশ

শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিত্ব ও নেতৃত্বের বিকাশ, গণতন্ত্রের চর্চা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে দেশের সকল মাধ্যমিক ও দাখিল মাদরাসায় ‘স্টুডেন্টস কেবিনেট’ নির্বাচন আয়োজনের নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় বলা হয়, মাধ্যমিক ও দাখিল মাদরাসায় ২০১৫ সালে স্টুডেন্টস কেবিনেট ম্যানুয়াল-২০১৫ ও কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এ প্রেক্ষিতে ২০১৬ সালেও দেশের সকল মাধ্যমিক ও দাখিল মাদরাসায় স্টুডেন্টস কেবিনেট নির্বাচন আয়োজনের জন্য স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও মাদরাসা সুপারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। স্টুডেন্টস কেবিনেট নির্বাচনের ফোকাল পয়েন্ট হিসেবে ব্যানবেইসের পরিচালককে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।  শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘স্টুডেন্টস কাউন্সিল’ ধারণা সফল হওয়ায় গত বছর দেশের প্রতিটি উপজেলায় একটি করে হাইস্কুল, মাদরাসা ও টেকনিক্যাল স্কুলকে ‘স্টুডেন্টস কেবিনেট’ নির্বাচনের জন্য মনোনীত করা হয়েছিল। যেসব উপজেলায় টেকনিক্যাল স্কুল নেই সেখানে একাধিক হাই স্কুলকে মনোনীত করা হয়। সারা দেশের প্রায় এক হাজার ৪৩ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্টুডেন্টস কেবিনেট গঠিত হয়েছিল। গত ডিসেম্বরের এর পর্যালোচনা শেষে এবার সকল স্কুল মাদরাসায় নির্বাচন অনুষ্ঠানের নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রণালয়। নির্দেশনা অনুসারে শিক্ষার্থীদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হবে আট সদস্যের স্টুডেন্টস কেবিনেট। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো ছাত্রছাত্রী নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবে। একজন ভোটার সর্বোচ্চ আটটি ভোট দেবে। এর মধ্যে প্রতি শ্রেণিতে একটি করে এবং যেকোনো তিন শ্রেণিতে সর্বোচ্চ দুটি করে ভোট দিতে পারবে। প্রতি শ্রেণি থেকে একজন করে প্রতিনিধি নির্বাচিত হবে। পাঁচ শ্রেণিতে পাঁচজন নির্বাচনের পর তাদের মধ্য হতে সর্বোচ্চ ভোটপ্রাপ্ত তিনজন নির্বাচিত হবে। নির্বাচনী প্রচারের জন্য কোনো রকম ছাপানো পোস্টার, ফেস্টুন, লিফলেট ব্যবহার ও দেয়াল লিখন করা যাবে না। তবে শিক্ষার্থীদের হাতে লেখা পোস্টার, ফেস্টুন, লিফলেট ব্যবহার করতে পারবে। তবে প্রতিষ্ঠানের সীমানা বা চত্বরের বাইরে প্রচার করা যাবে না। নির্বাচন পরিচালনার জন্য শিক্ষার্থীদের নিয়েই তিন সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে। প্রতিষ্ঠান প্রধান এবং সহকারী শিক্ষকরা দশম শ্রেণির একজন শিক্ষার্থীকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অষ্টম ও নবম শ্রেণির একজন করে দুজন শিক্ষার্থীকে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে মনোনীত করবেন। নির্বাচন ও এ-সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রতিষ্ঠান প্রধান প্রয়োজনে একজন সহকারী শিক্ষককে সমন্বয়কারী হিসেবে নিয়োগ দিতে পারবেন। প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোট কক্ষ স্থাপন করে গোপনীয়তার সঙ্গে ভোট প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে। স্টুডেন্টস কেবিনেটের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা প্রথম সভায় একজন প্রধান প্রতিনিধি মনোনীত করবে। একই সঙ্গে প্রত্যেকের দায়িত্ব বণ্টন এবং সারা বছরের কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করবে। পাশাপাশি প্রতিটি শ্রেণি থেকে দুজন করে সহযোগী সদস্য মনোনীত করতে হবে, যারা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সহায়তা করবে। তাদের ভোটাধিকার থাকবে না। প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ সংরক্ষণ (বিদ্যালয়, আঙিনা ও টয়লেট পরিষ্কার এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পুস্তক ও শিখন সামগ্রী, স্বাস্থ্য, ক্রীড়া, সংস্কৃতি ও সহপাঠ কার্যক্রম, পানিসম্পদ, বৃক্ষ রোপণ ও বাগান তৈরি ইত্যাদি দিবস ও অনুষ্ঠান উদ্যাপন, অভ্যর্থনা ও আপ্যায়ণ এবং আইসিটি) এই ৮টি প্রধান দায়িত্বে আটজন প্রতিনিধি দায়িত্ব পালন করবেন। স্টুডেন্টস কেবিনেট প্রতি মাসে কমপক্ষে একবার সভা করবে। ছয় মাস পর সাধারণ ছাত্র ছাত্রীদের উপস্থিতিতে সাধারণ সভা করতে হবে। কেবিনেটের মেয়াদ হবে এক বছর। স্টুডেন্টস কেবিনেটের জন্য কোনো বাজেটের ব্যবস্থা রাখা হয়নি। তবে তাদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটি ও স্থানীয় জনগণের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা নেয়া যাবে বলে নির্দেশনায় বলা হয়েছে।শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব অসীম কুমার কর্মকার জানান, ছাত্র-ছাত্রীদের ব্যক্তিত্ব ও নেতৃত্বের বিকাশ; গণতন্ত্রের চর্চা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল করে গড়ে তোলা; বিদ্যালয়ের পরিবেশ উন্নয়ন, ক্রীড়া, সাহিত্য-সংস্কৃতিসহ সহশিক্ষা কার্যক্রম জোরদার করার লক্ষ্যে এই স্টুডেন্টস কেবিনেট নির্বাচনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।এনএম/এসকেডি/আরআইপি

Advertisement