প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মে পৃথিবী থেকে বিলীন হয়েছে অনেক প্রাণি। এখনো অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে প্রতিকূল পরিবেশের সঙ্গে সংগ্রাম করছে অনেক পশুপাখি। মুক্ত আকাশ জুড়ে অসংখ্য শকুন দল বেঁধে উড়ে বেড়ানোর অতি সাধারণ দৃশ্য আজকাল আর চোখে পড়ে না। মৃত পঁচা পশুপাখির গোশত আর চারপাশের নোংরা আবর্জনা ভক্ষণের মাধ্যমে পরিবেশের আজন্ম বন্ধু হয়ে আছে বিশালাকৃতির পাখি শকুন। তাই শকুনকে পরিবেশ বন্ধু পাখিও বলা হয় । কথিত আছে, যদি কোথাও মৃত গরু বা অন্য কোনাে পশু পড়ে থাকে, তাহলে দুই/তিনশত কিলোমিটার দূর থেকেও শকুন তা দেখতে পায় এবং দল বেধেঁ এসে ভক্ষণ করে। দেশের জনসংখ্যা অত্যাধিক বৃদ্ধিজনিত নেতিবাচক প্রভাবের কারণেই হয়তো খাদ্য ও আবাস সঙ্কটে শকুন নামক পরিবেশ বন্ধুরা বর্তমানে অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়েছে। তীব্র শীতে বিপর্যস্ত, ক্ষুধার্ত একটি শকুন বুধবার কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলা সদরের বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন গুচ্ছগ্রাম এলাকায় দেখা যায়। পরে স্থানীয় জনতার হাতে ধরা পড়া বিশালাকার ওই শকুনটিকে আবু সাঈদ ও রাজীব নামের দুই ব্যক্তি ভূরুঙ্গামারী থানায় জমা দেন। কৌতুহলী জনতার ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। ব্রয়লার মুরগির গোশতসহ অন্যান্য খাবার খাইয়ে তাকে আদর যত্নে কিছুটা সুস্থ্য করে থানা পুলিশ। ইতোমধ্যেই খবর পেয়ে স্থানীয় বন বিভাগ শকুনটির যত্ন নেয়ার পাশাপাশি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তরের পদক্ষেপ হিসেবে পঞ্চগড়ের বন্য প্রাণি সংরক্ষণকারী বেসরকারি সংস্থেকে (IUCL) খবর দেয়। সুস্থ্যতার সঙ্গে সঙ্গে স্বভাবসুলভ উড়ে বেড়ানোর সক্ষমতা অর্জনের প্রত্যাশায় অবশেষে রোববার বিকেলে প্রশাসন ও গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে শকুনটিকে পঞ্চগড়ের বন্য প্রাণি সংরক্ষণ সংস্থা আইইউসিএল কর্তৃপক্ষের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেন ভূরুঙ্গামারী সামাজিক বনায়ন নার্সারি কেন্দ্রের বন কর্মকর্তা সেকেন্দার আলী বাদশা। পুরোপুরি সুস্থ হলে শকুনটিকে ছেড়ে দেয়া হবে মুক্ত আকাশে।নাজমুল হোসেন/এমজেড/পিআর
Advertisement