পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, ‘জলবায়ু প্রভাবিত অভিবাসন গুরুতর নিরাপত্তাঝুঁকি তৈরি করছে, যা দেশের সীমানা ছাড়িয়ে যেতে পারে।’
Advertisement
মন্ত্রী বলেন, ‘সামগ্রিকভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাস্তুচ্যুত বাংলাদেশিদের সংখ্যা ২০৫০ সালের মধ্যে ১৩ দশমিক ৩ মিলিয়ন অর্থাৎ প্রায় এক কোটি ৩৩ লাখে পৌঁছাতে পারে। বিশ্বব্যাংকের মতে, এটি দেশের অভ্যন্তরীণ অভিবাসনের প্রধান কারণ হয়ে উঠেছে। এ ধরনের বাস্তুচ্যুতি ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য বড় শহরের ওপর ভারি বোঝা তৈরি করছে।’
সোমবার (২৫ জুলাই) ‘হিউম্যান মোবিলিটি ইন দ্য কনটেক্সট অব ক্লাইমেট চেঞ্জ: টুওয়ার্ডস অ্যা কমন ন্যারেটিভ অ্যান্ড অ্যাকশন পাথওয়ে’ শীর্ষক নীতিবিষয়ক সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) যৌথভাবে এ সংলাপের আয়োজন করে।
Advertisement
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ মনে করে যে, জলবায়ু প্রভাবিত লাখ লাখ অভিবাসীদের দুর্দশা অবশ্যই যথাযথ ফোরামে তুলে ধরতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক আলোচনায় নারী ও শিশু-সংবেদনশীল বিষয়গুলোকেও গুরুত্ব দিতে হবে।’
সংলাপে জলবায়ু অভিবাসনের বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ ও জরুরি পদক্ষেপ কামনা করে আবদুল মোমেন বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে সংবেদনশীল যে, জলবায়ু প্রভাবিত জোরপূর্বক অভিবাসন দেশের সীমানার বাইরে ছড়িয়ে পড়ার পাশাপাশি গুরুতর নিরাপত্তাঝুঁকি তৈরি করতে পারে।’
মোমেন বলেন, ‘গ্লাসগোতে গত কপ২৬ সম্মেলনের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, লবণাক্ততা বৃদ্ধি, নদী ভাঙন, বন্যা ও খরার কারণে বাস্তুচ্যুত জলবায়ু অভিবাসীদের জন্য বিশ্বব্যাপী দায়িত্ব ভাগ করে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কক্সবাজারে ব্যাপক পরিবেশগত ক্ষতি জেনেও বাংলাদেশ মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিচ্ছে। সরকার এ দুটি বাস্তুচ্যুতি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। পাশাপাশি আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের গতিপথকে ত্বরান্বিত করছে। এমন পরিস্থিতিতে জলবায়ু অভিবাসী ইস্যুটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উপেক্ষা করতে পারে না।’
Advertisement
এ সংলাপের উদ্দেশ্য ছিল- জলবায়ু পরিবর্তন-অভিবাসন সংক্রান্ত বৈশ্বিক অ্যাজেন্ডাকে আরও এগিয়ে নেওয়ার জন্য বাংলাদেশের জন্য সম্ভাব্য উপায়গুলো চিহ্নিত করা।
এ লক্ষ্যে সব স্টেকহোল্ডারদের একত্রিত করা, যাতে চলতি বছরের নভেম্বরে মিশরে জাতিসংঘের ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ক্লাইমেট চেঞ্জের জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলন (কপ২৭) উপস্থাপন করা যায়।
সংলাপটি সরকার, সুশীল সমাজ, বেসরকারি খাত ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পাশাপাশি মিডিয়ার বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরার একটি ফোরাম হিসাবে কাজ করেছে।
এএএইচ