যুদ্ধাপরাধীসহ যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত সংগঠনের সদস্য, ব্যক্তি, জঙ্গি তৎপরতায় জড়িতদের ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে ওয়ার্কার্স পার্টি। এছাড়া রোহিঙ্গাদের ভোটার তালিকা অন্তর্ভুক্ত করার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা, প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রয়োগের ব্যবস্থা করা, পার্বত্য অঞ্চলে শান্তিচুক্তি অনুযায়ী ভোটার তালিকা প্রণয়নের দাবি জানায় দলটি।
Advertisement
সোমবার (২৫ জুলাই) নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়ে লিখিত প্রস্তাবনায় এ কথা বলেছে ওয়ার্কার্স পার্টি। দলের সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশার নেতৃত্বে ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি ইসির সঙ্গে সংলাপ করে। সংলাপে দলটি মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ও ধর্মকে ব্যবহারকারী কোনো দল যাতে নিবন্ধন না পায় সেজন্য নির্বাচনী আইন সংস্কারের কথা বলেছে।
দলটি ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) চাপিয়ে না দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। নানা ধরনের ত্রুটি, অপূর্ণতা ও ভোগান্তি ইভিএম সম্পর্কে জনমনে অনাস্থা ও বিরূপ মনোভাব তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে সবধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও বিতর্ক দূর করে নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের কথা বলেছে। এছাড়া দলটি ইভিএম নিয়ে রাজনৈতিক বিরোধীতা রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলার কথা বলেছে।
ওয়ার্কার্সপার্টি মনে করে চলমান সংলাপ কেবল কথার কথা থাকবে না, সংলাপে উত্থাপিত বিষয়গুলো নির্বাচন কমিশন বিবেচনা করবে। সংলাপের সারসংক্ষেপ জনগণের সম্মুখে প্রকাশ করা হবে।
Advertisement
ওয়ার্কার্স পার্টির প্রস্তাবনাগুলো হলো— নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর সরকার দৈনন্দিন কার্যাবলী ছাড়া নীতিগত বা উন্নয়নমূলক কোনো কাজ না করা ও মন্ত্রী-এমপিদের প্রটোকল সুবিধা স্থগিত থাকা, নির্বাচনকালীন সময় স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় কমিশনের অধীন ন্যস্ত করা, ভোটার তালিকা ওয়েবসাইটে প্রকাশ ও ভোটারদের সংশোধন-সংযোজনের সুযোগ।
নির্বাচনী সীমানা পুনর্নির্ধারণের আগে আগেরকার নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাবসহ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা, নির্বাচনে টাকার খেলা বন্ধে- ব্যয়সীমা কমাতে পোস্টার, লিফলেট, ডিজিটাল প্রচার, রেডিও-টেলিভিশনে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার দৃঢ়ভাবে নিয়ন্ত্রণে বিধান রাখা, প্রার্থী বা তার হয়ে যে কেউই খরচ করুক না কেন সেটা প্রার্থীর ব্যয় হিসাবে গণ্য, প্রার্থীর নির্বাচনী ব্যয় মনিটর, নির্বাচনী আয়-ব্যয়ের বিবরণ উম্মুক্তকরণ, আয়-ব্যয়ের হিসাব না দেওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট সদস্যের শপথগ্রহণ স্থগিত রাখা, ইসির পক্ষ থেকে পোস্টার, লিফলেট, ব্যানার, মার্কা সম্বলিত হ্যান্ডবিল, তিনকপি ভোটার তালিকা (সিডিসহ) সরবরাহ ও রাষ্ট্রীয় প্রচার মাধ্যমে নির্বাচন ম্যানিফেস্টোর ও মার্কা প্রচারের ব্যবস্থা।
নির্বাচনকে সন্ত্রাস পেশীশক্তির প্রভাব ও দুর্বৃত্তমুক্ত করতে— বল প্রয়োগ, অস্ত্র বহন ও প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা এবং বল প্রয়োগের ঘটনার কঠোর শান্তিবিধান, ফৌজদারি দণ্ডাদেশ প্রাপ্ত ব্যক্তিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না দেওয়া, আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব, নির্বাচনে ধর্মের ব্যবহার, সাম্প্রদায়িক প্রচার-প্রচারণা ও ভোট চাওয়া নিষিদ্ধকরণ, মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ও ধর্মকে ব্যবহারকারী কোন দলকে নিবন্ধন না দেওয়ার বিষয় নির্বাচনী আইনে অন্তর্ভুক্তকরণ।
নির্বাচনে সবার সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে— নির্বাচনী এলাকায় সভার আয়োজন, রেডিও-টিভির সময় সমভাবে বণ্টন করা, নির্বাচনে সশস্ত্রবাহিনীকে নিযুক্ত করা হলেও ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা না দেওয়া এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে ইভিএম চাপিয়ে না দেওয়া।
Advertisement
এইচএস/এমএএইচ/এএসএম