বান্দরবান জেলায় বেড়েছে ওলকচুর চাষ। বেশ কয়েক বছর ধরে এমনটাই দেখা যাচ্ছে। এর কারণ এ জেলার মাটি ওলকচু চাষের উপযোগী ও কম খরচে বেশি ফলন পাওয়া যায়। তাই নতুন চাষিরাও উৎসাহিত হচ্ছেন এ কচু চাষে। কয়েক প্রজাতির ওলকচু থাকলেও বান্দরবানে জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে স্থানীয় উন্নত জাতের ওলকচু।
Advertisement
ওলকচুতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালোরি, ফ্যাট, কার্বস, প্রোটিন, পটাসিয়াম, দ্রবণীয় ফাইবার পাশাপাশি ভিটামিন বি ৬, ভিটামিন বি ১, রাইবোফ্লাভিন, ফলিক অ্যাসিড, নিয়াসিনসহ বিভিন্ন পুষ্টি গুণ। এ ছাড়া ভিটামিন এ, বিটা ক্যারোটিন জাতীয় পুষ্টি পাওয়া যায় যা মানবদেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
বান্দরবান মারমা বাজার এলাকার অস্থায়ী সবজি ব্যবসায়ী প্রুমে চিং মারমা জানান, বাজারবার উপলক্ষে অন্যান্য সবজির পাশাপাশি ৫০ কেজি ওলকচু নিয়ে বিক্রির উদ্দেশ্যে পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন। সকাল থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে প্রায় ৪০ কেজি ওল বিক্রি করেছেন তিনি।
বান্দরবান সদর উপজেলার জামছড়ি এলাকার ওলকচু চাষি মংসিংনু মারমা জানান, গত কয়েক বছর ধরে ওলকচু চাষ করে আসছেন। সর্বশেষ গত বছর ৪০ শতক জমিতে ওলকচুর আবাদ করেছেন তিনি। ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে পাইকাররা বাড়ি থেকে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
Advertisement
কম খরছে ভালো ফলন পাওয়ায় এবছর আবার ৫০ শতক জমিতে ওলকচুর চাষ করেছেন তিনি।
বাঘমারা এলাকার সুনিল তঞ্চগ্যা জানান, গতবছর ৪০ শতক জমিতে ওলকচু চাষ করেন। ফলন ও বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় এবছর ৮০ শতক জমিতে ওলকচুর চাষ করেন তিনি। গত বছর মণ প্রতি ১২০০ টাকা করে বাড়ি থেকেই কিনে নিয়ে গেছে পাইকারেরা।
কম খরচে ও তেমন পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না এই ওল কচু চাষে। একটা ওলকচু ৪০০ গ্রাম থেকে ৫ কেজি পর্যন্ত হয় ফলে ভালো মুনাফা পাওয়া যায়। তাকে দেখে এলাকার অনেকেই এখন নতুন করে এ কচু চাষ করেছেন।
বান্দরবান সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ওমর ফারুখ জানান, সাধারণত চৈত্র-বৈশাখ মাসে ওল লাগানো হলেও ভালো দাম পেতে হলে আগাম চাষের জন্য মাঘ-ফাল্গুন মাসে লাগানোর উত্তম সময়। সব ধরনের মাটিতেই ওল চাষ করা যায়, তবে বেলে দো-আঁশ মাটিতে ভালো ফলন হয়।
Advertisement
বান্দরবানের পাহাড়ি মাটি স্থানীয় উন্নত জাতের ওলকচু চাষের জন্য যথেষ্ট উপযোগী। ফলে ওলকচু চাষ করে যথেষ্ট সফলতা পাচ্ছেন চাষিরা। গত বছর উপজেলায় ৬ হেক্টর জমিতে ওলকচুর চাষ হয়েছিল এবং হেক্টর প্রতি ৭ টন ওলকচু উৎপাদন হয়েছিল।
চাষিরা ভালো ফলন পাওয়ায় এবছর ১৬ হেক্টর জমিতে ওল কচু চাষ হয়েছে এতে হেক্টর প্রতি ৯ টন ফলন পাওয়া যাবে বলে আশা করা যায়।
নয়ন চক্রবর্তী/এমএমএফ/জেআইএম