শেষ হলো টরন্টো মাল্টিকালচারাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল

কানাডার দ্বিতীয় প্রাচীনতম প্রেক্ষাগৃহ ‘ফক্স থিয়েটার’ এ টরন্টো ফিল্ম ফোরাম আয়োজিত পঞ্চম মাল্টিকালচারাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের সমাপ্তি হয় শনিবার (২৩ জুলাই)।

শেষ দিনের চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয় বিকেল ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। শেষ দিনে কানাডার সাতটি, লেবাননের একটি, ইরানের একটি, আফগানিস্তানের একটি, সৌদি আরবের একটি এবং বাংলাদেশের একটি চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী হয়।

গত ১৮ জুলাই স্ক্যারবরোর ২২ লেবোভিক এভিনিউর সিনেপ্লেক্স ওডেনে টরন্টো ফিল্ম ফোরাম আয়োজিত পঞ্চম টরন্টো মাল্টিকালচারাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল ২০২২ শুরু হয়। ৬ দিনব্যাপী এই চলচ্চিত্র উৎসব অনুষ্ঠিত হয় টরন্টো শহরের তিনটি স্থানে।

স্ক্যারবরোর এগলিন্টন টাউন সেন্টারের ২২ লেবোভিক এভিনিউর সিনেপ্লেক্স ওডেনে সন্ধ্যা ৬টায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা মোরশেদুল ইসলাম আনুষ্ঠানিকভাবে এই চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

এক ঘণ্টার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত চলচ্চিত্র প্রদর্শনী হয়। চলচ্চিত্র উৎসবের প্রথম দিনে কানাডার চলচ্চিত্র নির্মাতা জসলিন জোরসের ‘দ্য লিভিং রুম’, সাইফুল ওয়াদুদ হেলালের ‘মুনিয়া’স স্টোরি’, সোফি রোমভারির ‘স্টিল প্রসেসিং’, ইউক্রেনের চলচ্চিত্র নির্মাতা ওলেহ ভালিদাজেহর ‘দ্য পাথ’, ইরানের চলচ্চিত্র নির্মাতা সাইয়িদ ভালিজাদেহর ‘সিক্সথ ওয়েভ’, ইতালির চলচ্চিত্র নির্মাতার ‘হোয়াট আ ড্রিম ইট উড বি আ ডিফারেন্ট ওয়ার্ল্ড, গ্রীসের এলিফথিয়েরিইয়া স্টেফানোউরির ‘মান্টো’, তিউনিসিয়ার রিম নাকহির ‘নুর’ এবং বাংলাদেশের চলচ্চিত্র নির্মাতা নুরুল আলম আতিকের ‘লাল মোরগের ঝুটি’ প্রদর্শিত হয়।

চলচ্চিত্র উৎসবের প্রথম দিনে টরন্টো ফিল্ম ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ও পঞ্চম টরন্টো মাল্টিকালচারাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল ২০২২-এর সমন্বয়ক মনিস রফিক উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন স্ক্যারবরো সাউথওয়েস্টের কাউন্সিলর গ্যারি ক্রাফোর্ড, বাংলাদেশের প্রখ্যাত কবি আসাদ চৌধুরী এবং টরন্টো ফিল্ম ফোরামের সভাপতি ও পঞ্চম টরন্টো মাল্টিকালচারাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের পরিচালক এনায়েত করিম বাবুল।

উদ্বোধনী দিনে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন টরন্টো ফিল্ম ফোরামের অনুষ্ঠান সম্পাদক সোলায়মান তালুত রবিন ও সদস্য শারমিন শর্মী। ১৯ জুলাই থেকে ২২ জুলাই উৎসবের চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয় টরন্টোর ৩০০০ এভিনিউর টরন্টো মাল্টিকালচারাল ফিল্ম স্ত্রীনিং সেন্টারে।

প্রতিদিন বিকাল ৫টা থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতাদের চলচ্চিত্র উপস্থিতি দর্শকদের মুগ্ধ করে।

এবারের চলচ্চিত্র উৎসবে ৪৯টি দেশের স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতাদের মোট ১৩৬টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়। ইন-পার্সনের সাথে সঙ্গে এই উৎসব অনলাইন এ উপভোগ করা হয়। টরন্টো ফিল্ম ফোরাম আয়োজিত টরন্টো মাল্টিকালচারাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল-২০২২ এ ৩৭ জন স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রী ভলান্টিয়ার হিসেবে কাজ করেছে। এ উৎসবের মিডিয়া পার্টনার অন্টারিও আর্ট কাউন্সিল, বাংলাদেশের ‘সময়’ টেলিভিশন ও টরন্টো থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক ‘বাংলা কাগজ’।

এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত স্পন্সরদের মধ্যে শুভেচ্ছা বক্তৃতা দেন রিয়াল স্টেট ব্রোকার শেখ হাসিব হোসেন, ব্যারিস্টার আরিফ হোসেন ও রিয়েলটর শারমিন আক্তার। চলচ্চিত্র উৎসবের শেষ দিনে উপস্থিত চার জন্য কানাডিয়ান চলচ্চিত্র নির্মাতা আসিফ রাশিদ, সাইফুল ওয়াদুদ হেলাল, জেসন লীন, এবং চেংয়ান ওয়াং দর্শকদের সঙ্গে পরিচিত হন এবং নিজেদের চলচ্চিত্র সম্পর্কে কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য রাখেন টরন্টো ফিল্ম ফোরামের সভাপতি এবং পঞ্চম টরন্টো মাল্টিকালচারাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের পরিচালক এনায়েত করিম বাবুল। তিনি ঘোষণা দেন, ২০২৩ সালে এই সময়ে ষষ্ঠ টরন্টো মাল্টিকালচারাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের আয়োজন করা হবে।

জেএস/জেআইএম