সরকার পতনের ঐক্যে একমত বিএনপি-জেএসডি

সরকার পতনে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করে সম্মিলিতভাবে আন্দোলনে নামতে একমত হয়েছে বিএনপি ও আ স ম আবদুর রবের নেতৃত্বাধীন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি)।

রোববার (২৪ জুলাই) বিকেলে জেএসডির সঙ্গে দেড় ঘণ্টার সংলাপ শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, আমরা জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে সম্মিলিত আন্দোলন করে এ সরকারের পতন ঘটাতে একমত হয়েছি। শুধু তাই নয়, আমরা একসঙ্গে, একজোটে কাজ করে এ সরকারকে পরাজিত করে সত্যিকার অর্থেই জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন করতে চাই। আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে আমরা কোনো নির্বাচনে অংশ নেব না।

তিনি আরও বলেন, আমাদের এ ঐকমত্য শুধু নির্বাচন নয়, আমরা যেন রাষ্ট্রের আমূল পরিবর্তন করতে পারি, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আমরা যে স্বপ্ন দেখেছিলাম তা বাস্তবায়ন করার জন্য আমরা যৌথভাবে কাজ করে যাওয়ার চিন্তা করেছি। আমরা মনে করি, আন্দোলনের মধ্য দিয়েই জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠবে। ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি ও আমাদের জনগণ বলে দেবে, আমাদের কোন পথে আগানো উচিত, আন্দোলনের ধারা-গতি কী হবে।

আ স ম আবদুর বর বলেন, এবারের আন্দোলনের লক্ষ্য হবে একই সঙ্গে স্বৈরাচারী সরকারের পতন, নিপীড়নমূলক অগণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার উচ্ছেদ, শাসনতন্ত্র পরিবর্তন, দলীয় সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। এসব দাবিতে আমরা মাঠে নামবো। আন্দোলনের মাঠে জনগণ আমাদের পক্ষে থাকবে, জনগণই আমাদের পরিচালিত করবে।

তিনি বলেন, আন্দোলনের কৌশল ঠিক হবে মাঠে। আজকের এ আলোচনায় আমরা ২১ দফা দাবি নিয়ে কথা বলেছি। জাতীয় রাজনীতির প্রয়োজনে, আন্দোলনের স্বার্থে আমাদের এ আলোচনা অব্যাহত থাকবে। ২০১৮ সালেও আমরা একসঙ্গে আন্দোলন করেছি, এবার পরিস্থিতি বিবেচনায় জাতীয় সরকার নিয়ে কর্মসূচি ঘোষণা করেছি।

আ স ম আব্দুর রব আরও বলেন, আজ দেশের মালিকানা জনগণের কাছে নেই। এবার আমরা স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষিত রাষ্ট্র নির্মাণ শুরু করবো। এ আন্দোলনই হবে আমাদের দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ।

সংলাপে জেএসডির চার সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন আ স ম আবদুর রব। অন্যরা হলেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ছানোয়ার হোসেন তালুকদার, কার্যকরী সাধারণ সম্পাদক শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন ও সহ-সভাপতি তানিয়া রব।

বিএনপির প্রতিনিধিদলে ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, ইকবাল হাসান মাহমদু টুকু ও মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহিরউদ্দিন স্বপন।

সরকারবিরোধী আন্দোলনে বৃহত্তর প্ল্যাটফর্ম গড়তে তুলতে বিএনপি মহাসচিব গত ২৪ মে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করে। প্রথম দফায় মাহমুদুর রহমান মান্নার নাগরিক ঐক্য, জোনায়েদ সাকির গণসংহতি আন্দোলন, সাইফুল হকের বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সঙ্গে সংলাপ করেন তিনি।

এছাড়া বিএনপি মহাসচিব এখন পর্যন্ত বিএনপির ২০ দলীয় জোটের শরিক জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর), জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা), বাংলাদেশ লেবার পার্টি, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ-ভাসানী), মুসলিম লীগ, ইসলামী ঐক্যজোট, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, সাম্যবাদী দল, ডেমোক্রেটিক দলের সঙ্গেও সংলাপ করেছেন।

কেএইচ/এসএএইচ/জিকেএস