লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় মোহাম্মদ উল্যা (৬০) নামে এক বৃদ্ধকে হাত-পা শিকল দিয়ে বেঁধে গুম করার অভিযোগ উঠেছে। তার চার ছেলে মাসুদ আলম, আলমগীর হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম ও উজ্জ্বল হোসেনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ আনা হয়েছে।
Advertisement
তবে অভিযুক্তরা বলছেন, মোহাম্মদ উল্যা মানসিকভাবে অসুস্থ। এজন্য তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কিন্তু কোথায় আছেন তিনি, তা বলছেন না কেউই।
এদিকে মোহাম্মদ উল্যা অসুস্থ নন বলে জানিয়েছেন তার বৃদ্ধ মা হালিমা খাতুন, বোন ফাতেমা খাতুন ও মেয়ে রাবেয়া সুলতানা। তাকে ফিরে পেতে ও অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।
অন্যদিকে শুক্রবার (২২ জুলাই) বিকেলে মোহাম্মদ উল্যাকে অমানবিক নির্যাতন ও রাতের অন্ধকারে হাত-পা শিকল দিয়ে বেঁধে গুম করার প্রতিবাদে স্থানীয়রা সংবাদ সম্মেলন করেন। উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে এ আয়োজন করা হয়। এসময় মোহাম্মদ উল্যার মা, বোন ও মেয়েসহ অর্ধশতাধিক এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন।
Advertisement
মোহাম্মদ উল্যাহ উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের চরবংশী গ্রামের স্টিল ব্রিজ এলাকার বাসিন্দা ছিলেন।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মোহাম্মদ উল্যাহ ২২ বছর প্রবাস জীবন কাটিয়েছেন। প্রায় চার বছর আগে তিনি দেশে ফেরেন। এসেই স্ত্রী ও চার ছেলের কাছে বিদেশ থেকে পাঠানো টাকার হিসাব চান তিনি। ২২ বছর ধরে পাঠানো টাকার হিসাব না দিলেও তার ওপর ছেলেদের নির্যাতন চলতো প্রতিনিয়ত। এর জেরে শুক্রবার ভোরে তার হা-পা শিকল দিয়ে বেঁধে ঘর থেকে বের করেন ছেলেরা। তার চিৎকারে পাশের আনোয়ার হোসেন সবুজ ও ইব্রাহিম ঘর থেকে বের হয়ে ঘটনাটি দেখতে পান। বাধা দিতে গেলে সবুজ ও ইব্রাহিমকে মারধর করেন ওই চারজন। একপর্যায়ে মোহাম্মদ উল্যাকে বাড়ি থেমে নিয়ে গুম করে রাখেন ছেলেরা।
সংবাদ সম্মেলনে মোহাম্মদ উল্যার মা হালিমা খাতুন, বোন ফাতেমা খাতুন ও মেয়ে রাবেয়াসহ এলাকাবাসী জানান, মোহাম্মদ উল্যা সুস্থ ও ভালো মানুষ ছিলেন। তিনি অসুস্থ ছিলেন না। ছেলেদের নামে সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় তাকে গুম করা হয়েছে। ছেলেরাই তাকে গুম করেছে। মোহাম্মদ উল্যাকে ফেরত ও অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।
তবে অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর আলমের দাবি, তার বাবা মানসিকভাবে অসুস্থ। বাবার কাছ থেকে তারা অনেক অত্যাচার সহ্য করেছেন। এজন্য মানসিকভাবে অসুস্থ বাবাকে তারা চিকিৎসার জন্য একটি সংস্থার কাছে দিয়েছেন। তারা তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। তবে সেই সংস্থার নাম জানতে চাইলে তিনি বলতে রাজি হননি। একপর্যায়ে তিনি সাংবাদিকদের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।
Advertisement
অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) পলাশ কান্তি নাথ সাংবাদিকদের বলেন, বিষয়টি জেনেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পুলিশ অভিযুক্ত ও অভিযোগকারীদের সঙ্গে কথা বলেছে। ঘটনাটি তদন্ত চলছে। বৃদ্ধকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
কাজল কায়েস/এমআরআর/জেআইএম