রোহিঙ্গা গণহত্যার মামলায় মিয়ানমারের আপত্তি খারিজ করে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিজে) দেওয়া রায়কে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
Advertisement
শুক্রবার (২২ জুলাই) রাতে মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গাম্বিয়া বনাম মিয়ানমার মামলায় মিয়ানমারের চারটি আপত্তি আইনি ও পদ্ধতিগত কারণে খারিজ করে দিয়েছেন আন্তর্জাতিক আদালত। বাংলাদেশ মনে করে, রোহিঙ্গা সমস্যার টেকসই সমাধান খুঁজে পেতে আন্তর্জাতিক বিচার ও দায়বদ্ধতা অত্যন্ত জরুরি। এ রায়ে রোহিঙ্গাদের আইনি অধিকারসহ স্বদেশে প্রত্যাবাসনে আত্মবিশ্বাসী হতে সহায়তা করবে।
রাখাইনে রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে ২০১৯ সালের নভেম্বরে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করে গাম্বিয়া। ওই বছরের ১০-১২ ডিসেম্বর এই মামলায় প্রথমবার প্রাথমিক শুনানি হয়। এতে গাম্বিয়ার পক্ষে নেতৃত্ব দেন দেশটির আইন ও বিচারমন্ত্রী আবুবকর তামবাদু। আর মিয়ানমারের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি।
২০২০ সালে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার দলিল দাখিল করে গাম্বিয়া। সেখানে দেখানো হয়, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী কীভাবে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালিয়েছে।
Advertisement
তবে এ মামলায় আইসিজের এখতিয়ার নেই দাবি করে একপর্যায়ে চ্যালেঞ্জ জানায় মিয়ানমার সরকার। সু চি কারাবন্দি থাকায় গত ফেব্রুয়ারিতে এর শুনানিতে অংশ নেন মিয়ানমার জান্তার প্রতিনিধিরা। তাদের দাবি, যেহেতু আন্তর্জাতিক আদালতে কেবল দুই রাষ্ট্রের মধ্যকার মামলার শুনানি করে এবং ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) পক্ষ থেকে রোহিঙ্গা গণহত্যার মামলা দায়ের করেছে গাম্বিয়া, তাই এটি খারিজ করে দেওয়া উচিত।
মিয়ানমার আরও দাবি করে, রোহিঙ্গা ইস্যুতে গাম্বিয়ার যেহেতু সরাসরি কোনো যোগসূত্র নেই এবং মিয়ানমারের সঙ্গেও গাম্বিয়ার আগে কোনো আইনি দ্বন্দ্বও ছিল না, তাই পশ্চিম আফ্রিকার দেশটি আন্তর্জাতিক আদালতে এই মামলা করতে পারে না।
তবে শুক্রবারের রায়ে মিয়ানমারের প্রত্যেকটি দাবিই খারিজ করে দিয়েছেন দ্য হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত। আইসিজে সভাপতি বলেছেন, গণহত্যা কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী যেকোনো রাষ্ট্রপক্ষ আদালতের সামনে কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে অন্য রাষ্ট্রপক্ষের দায়িত্ব নিতে পারে।
গত ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত শুনানিতে গাম্বিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছিলেন, মামলাটি অবশ্যই এগিয়ে নেওয়া উচিত এবং এটি দায়ের করেছে তার দেশ, ওআইসি নয়। সেদিন তিনি জোর দিয়ে বলেন, আমরা কারও প্রক্সি (প্রতিনিধি) নই।
Advertisement
রোহিঙ্গা গণহত্যার মামলায় গাম্বিয়াকে সমর্থন করছে বাংলাদেশ, নেদারল্যান্ডস, কানাডাসহ বিভিন্ন দেশ। এছাড়া, আন্তর্জাতিক আদালতে আইনি লড়াই চালিয়ে যেতে গাম্বিয়াকে আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে ওআইসি।
এইচএ/ইএ