বিশেষ প্রতিবেদন

ফুটপাতে হাঁটারও অধিকার নেই রাজধানীবাসীর

দুঃসহ যানজটে নাকাল হয়ে পড়েছে নগরজীবন। রাজধানীর রাজপথ, সড়ক, অলিগলি কোনো কিছুই এখন আর যানজট থেকে  মুক্ত নয়। ক্রমবর্ধমান যানবাহন ও জনসংখ্যার চাপে  জনজীবন চরমভাবে বিপর্যস্ত হচ্ছে। আর এই দুর্ভোগ নগরবাসীর নিত্যদিনের। যানজটে নাকাল রাজধানীবাসী অতিরিক্ত যানজটের কারণে বাধ্য হয়ে গণ পরিবহন থেকে নেমে হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছাতে চাইলেও তা পারছেন না।

Advertisement

পরিবেশবিদদের মতে, হাঁটার নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় পরিবেশ না থাকায় সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত ও আহতদের মধ্যে পথচারীদের সংখ্যাই বেশি। অপর্যাপ্ত, নিম্নমানের হাঁটার অনুপযোগী ফুটপাত এবং রাস্তা পারাপারের তেমন কোনো ব্যবস্থা না থাকায় পথচারীদের আগ্রহ থাকার পরও তারা হাঁটতে পারছেন না। তাই বাধ্য হয়েই তাদেরকে রাস্তা ব্যবহার করতে হচ্ছে।ফুটপাত দখল করে দোকান ছাড়াও রাজধানীর প্রেসক্লাব, পুরানা পল্টন, মতিঝিল, কাকরাইল, মালিবাগ, মগবাজার, বাংলামোটর, শাহবাগ, ফার্মগেট, শ্যামলী, মিরপুর, গাবতলী, সায়েদাবাদ, বনানীসহ অনেক এলাকায়ই রয়েছে বাসের টিকিট কাউন্টার। এসব কাউন্টারের জন্য পথচারীরা ফুটপাত দিয়ে ঠিকমতো হাঁটাচলা করতে পারেন না।জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে পল্টন মোড় পর্যন্ত যানজট দেখে বাস থেকে নেমে মতিঝিলের দিকে হাঁটতে শুরু করেন রফিকুল ইসলাম। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, রাস্তায় গাড়ির ভিড়ে পথচারীদের নিরাপদে হাঁটার জায়গা ফুটপাত। কিন্তু রাজধানীর ফুটপাতগুলোর বেশির ভাগেই আমাদের মত পথচারীদের অধিকারে নেই। নানাভাবে বেদখল হচ্ছে এইসব ফুটপাত। যানজোটে অস্থির হয়ে গাড়ি থেকে নেমে পায়ে হেঁটে পথচলারও পরিস্থিতি নেই এই শহরে।

একই রকম সমস্যায় পড়া বেসকারি ব্যাংক কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেন,  আদর্শ একটি নগরে ফুটপাতের ব্যবস্থা থাকে, যাতে জনগণ হেঁটে পথ চলতে পারে। স্বল্প দূরত্বের পথ এবং পরিস্থিতি অনুকূল থাকলে আরও দূরত্ব অতিক্রম করা যায় ফুটপাথ দিয়ে। কিন্তু আমাদের এই রাজধানীর চিত্র পুরো উল্টো।চলাচলের পথরুদ্ধ করে ফুটপাথে ব্যবসায় অনুমোদন কোনভাবেই সমর্থনীয় হতে পারে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঢাকা নগর কর্তৃপক্ষের উচিত ফুটপাতকে হাঁটার উপযোগী করা।

বিশেষজ্ঞদের মতে,নগরীর পায়ে হাঁটার পথগুলো পথচারীবান্ধব না হওয়ায়  স্বল্পদূরত্ব পাড়ি দিতে অনেকেই গণপরিবহন ব্যবহারে বাধ্য হন। অথচ ফুটপতগুলো পথচারীবান্ধব হলে পায়ে হেঁটে স্বাচ্ছন্দে এই পথ অতিক্রম করতেন অনেকেই । আর তাতে করে সড়কের উপর যানবাহনের চাপও কমতো অনেক।র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সরওয়ার আলম ইতোমধ্যে ঢাকার ফুটপাত দখলমুক্ত করতে বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করেন। প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলা হলে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ফুটপাটত নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারা নাগরিকের মৌলিক অধিকার। কিন্তু রাজধানীর অধিকাংশ ফুটপাতই বেদখল হয়ে আছে। এতে নাগরিক অধিকার প্রতিনিয়ত ক্ষুণ্ন হচ্ছে। অভিজ্ঞতার আলোকে তিনি আরো বলেন, মূলত প্রভাবশালী মহলকে চাঁদা দিয়ে ফুটপাতে দোকান বসানো হয়। ফলে এসব গরীব দোকানদারদের পুনর্বাসন না করে শুধু আইন আর শাস্তি দিয়েই ফুটপাত দখলমুক্ত করা যাবে না।এএস/এসকেডি

Advertisement