আদালতের আদেশ সত্ত্বেও পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া এলাকার অ্যাডভোকেট মো. শাহজাদার মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্তির আবেদন নিষ্পত্তি না করায় জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) চেয়ারম্যান ও মহাপরিচালককে তলব করেছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে আগামী ২ আগস্ট তাদের সশরীরে আদালতে উপস্থিত হতে বলা হয়েছে।
Advertisement
এ সংক্রান্ত শুনানি নিয়ে বুধবার (২০ জুলাই) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ হাইকোর্ট এ আদেশ দেন।
ওইদিন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম খান দাউদ। তিনি নিজেই বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, গত বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্তিসহ গেজেটে নাম প্রকাশের জন্য জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও মহাপরিচালকের কাছে আবেদন করেন মো. শাহজাদা।
Advertisement
ওই আবেদনে শাহজাদা বলেন, আমি ৯ নম্বর সেক্টরের অধীনে একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালে এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলাম। পাক সেনাদের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হলে পরীক্ষায় অংশ না নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে চলে যাই। আমরা চার ভাইয়ের মধ্যে তিন ভাই মুক্তিযোদ্ধা। অন্য ভাই ছোট থাকার কারণে যুদ্ধে অংশ নিতে পারেনি।
তিনি আরও বলেন, উল্লেখ্য যে, আমার চাচাতো ভাইয়ের বড় ছেলে ক্যাপ্টেন পরবর্তীতে (মেজর) মেহেদী আলী ইমাম ৯ নম্বর সেক্টরের সাব-সেক্টর কমান্ডার। তার অধীনে আমি যুদ্ধে অংশ নিয়েছি। আমার ১) সাব-সেক্টর কমান্ডারের অধীনে যুদ্ধ করার মূল সনদপত্র, ২) সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক আতাউল গণি ওসমানী সাহেবের দেওয়া স্বাধীনতা সংগ্রামের সনদপত্রের মূল কপি, ৩) ন্যাশনাল মিলিশিয়া স্কিমের অধীন অস্ত্র জমা দেওয়ার মূল সনদপত্র, ৪) ন্যাশনাল মিলিশিয়া ক্যাম্প থেকে প্রাপ্ত মুভমেন্ট অর্ডারের মূল কপি ৫) পিরোজপুর সাব-ডিভিশনাল অফিস থেকে রিলিজ সার্টিফিকেটের মূল কপি, ৬) সরকার নির্ধারিত ২০০৪ সালে যাচাই বাছাইতে অংশগ্রহণ করি এবং প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বিবেচিত হওয়ার ফটোকপি জমা দিয়েছি।
শাহজাদা বলেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে সরকারি গেজেটে আমার নাম প্রকাশ হয়নি। তারপর বর্তমান সরকার আবারও প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাইয়ের জন্য অনলাইনে আবেদন করতে নির্দেশনা জারি করলে আমি উপরোল্লেখিত কাগজপত্র ও ডকুমেন্টসহ আবেদন করি।
জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল শাহজাদার এ আবেদন নিষ্পত্তি না করায় গত বছরের ১৯ জুলাই হাইকোর্টে রিট করেন মো. শাহজাদা। রিটের শুনানি নিয়ে আদালত এক মাসের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তাকে তালিকাভুক্তির আবেদন নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেন।
Advertisement
আদেশের কয়েক মাস পেরিয়ে গেলেও শাহজাদার আবেদন নিষ্পত্তি না করায় গত ৩০ মে জামুকা চেয়ারম্যান ও মহাপরিচালকের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেন হাইকোর্ট। আদালত অবমাননার রুল জারির পরও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্তির মো. শাহজাদার আবেদন নিষ্পত্তি না করায় এবার জামুকা চেয়ারম্যান ও মহাপরিচালককে তলব করলেন হাইকোর্ট।
এফএইচ/এমকেআর/এএসএম