জাতীয়

আইডেনটিটি ছাড়া ডিজিটাল ব্যবসা নয়; নিবন্ধন একমাসের মধ্যে

জাতীয় ডিজিটাল কমার্স নীতিমালা ২০১৮ এবং জাতীয় ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা ২০২১-এর আলোকে ২৯ জুন ডিজিটাল বিজনেস আইডেনটিটি (ডিবিআইডি) নিবন্ধন নির্দেশিকা জারি করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এতে বলা হয়-নির্দেশিকা জারির ৯০ দিন অর্থাৎ ২৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ডিবিআইডি নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে হবে। নিবন্ধন ছাড়া ডিজিটাল মাধ্যমে ব্যবসা পরিচালনা করা যাবে না।

Advertisement

মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) অনলাইনে ‘ডিজিটাল বিজনেস আইডেনটিটি (ডিবিআইডি) নিবন্ধন’ কর্মশালার আয়োজন করে এসএমই ফাউন্ডেশন। সেখানে নিবন্ধনের বিষয়ে তাগিদ দেওয়া হয়।

ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন অধ্যাপক ড. মো. মাসুদুর রহমান। গেস্ট অব অনার ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. হাফিজুর রহমান।

এসময় মফিজুর রহমান বলেন, ডিবিআইডি নিবন্ধন নির্দেশিকা জারির ৯০ দিনের মধ্যে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে হবে। এরপর ডিবিআইডি ছাড়া বিদ্যমান ই-কমার্স উদ্যোক্তারা অনলাইন ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবে না। নতুন উদ্যোক্তাকে ওয়েবসাইট বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পেজ চালু করে আবেদন করতে হবে।

Advertisement

এসএমই ফাউন্ডেশন জানায়, ডিবিআইডি নম্বরটি হবে ইউনিক ও অটো-জেনারেটেড। ডিবিআইডি নিবন্ধনের লক্ষ্য ডিজিটাল কমার্স প্রতিষ্ঠানসমূহের স্বচ্ছতা, দায়বদ্ধতা, জবাবদিহীতা নিশ্চিত করা। এছাড়া ডিজিটাল কমার্স ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রকারভিত্তিক তালিকা প্রস্তুত করা, প্রচলিত আইন ও বিধিবিধান মেনে চলা, ডিজিটাল কমার্স প্রতিষ্ঠানসমূহকে স্বীকৃতি দেওয়া।

ডিবিআইডি নিবন্ধনের জন্য অনলাইনে আবেদন করতে হবে। এজন্য আবেদনকারীকে এনআইডি দাখিল করতে হবে। প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে চেয়ারম্যান বা পরিচালকদের এনআইডি, ট্রেড লাইসেন্স ও আরজেএসসি নিবন্ধন নম্বর থাকলে দাখিল করতে হবে। সেই সঙ্গে ভ্যাট নিবন্ধন ও টিআইএন থাকলে সেগুলিও দাখিল করতে হবে।

ভাড়া অফিস হলে বাড়ি ভাড়ার চুক্তি ও বাড়ির মালিকের এনআইডির কপি দিতে হবে। তবে ডিজিটাল মাধ্যমে এমএলএম বা নেটওয়ার্কিং ব্যবসা, নেশা সামগ্রী, বিস্ফোরক সামগ্রী এবং জুয়া, অনলাইন বেটিং বা গেম্বলিং প্রতিষ্ঠান ডিবিআইডির জন্য আবেদন করতে পারবে না।

আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানের একই নামের একাধিক প্রতিষ্ঠান বা একই প্রতিষ্ঠানের একাধিক নামে আবেদন, সক্রিয় ওয়েবসাইট বা সামাজিক মাধ্যমে পেজ এবং সেখানে বাংলায় ক্রয়-বিক্রয় বা অন্যান্য শর্তাবলী আছে কি না, তা যাচাই-বাছাই শেষে সনদ প্রদান করবে রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ’ (আরজেএসসি)।

Advertisement

আর তথ্য যথাযথ না হলে আবেদন নামঞ্জুর করে আবেদনকারীকে জানিয়ে দেওয়া হবে। ডিবিআইডি নম্বর বাধ্যতামূলকভাবে ওয়েবসাইট বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পেজে প্রদর্শন করতে হবে। কোন কারণে ডিবিআইডি বাতিল হলে সেটি প্রদর্শন করা যাবে না।

ডিবিআইডি নিতে ভুল তথ্য দিলে ডিজিটাল কমার্স পলিসি, নির্দেশিকা, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট ২০১৮ বা দেশে প্রচলিত অন্যান্য আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় ডিজিটাল কমার্স সেল পুরো বিষয়টি তদারকি করবে।

এছাড়া ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং ইউনিট, বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেম ডিপার্টমেন্ট ও বিএফআইইউ প্রযোজ্য ক্ষেত্রে তদারকি করতে পারবে। www.roc.gov.bd ওয়েবসাইটে লগ-ইন করে রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ-এর দপ্তরে ডিবিআইডির জন্য অনলাইনে আবেদন করা যাবে।

সেমিনারে মফিজুর রহমান ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ওয়েবিনারে অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে প্রায় ২১জনের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

এ সময় হাফিজুর রহমান বলেন, দেশে আড়াই হাজারের বেশি ওয়েবসাইট এবং প্রায় ৩ লাখের কাছাকাছি ফেসবুক পেজের মাধ্যমে অনলাইন ব্যবসা পরিচালিত হচ্ছে। যাদের বেশির ভাগ নারী উদ্যোক্তা। সব ব্যবসাকে একটি ডেটাবেজের আওতায় আনার লক্ষ্যে এ উদ্যোগ। অতিক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের পক্ষে ট্রেড লাইসেন্স, আরজেএসসি নিবন্ধন, ইটিআইএন বা ভ্যাট নিবন্ধন নেওয়া সম্ভব হয় না। সে কারণে ডিবিআইডি থাকলে ক্রেতাদের আস্থা অর্জন সহজ হবে।

তিনি আরও বলেন, এক বছর পর্যন্ত বিনামূল্যে নিবন্ধন করা যাবে। এরপর থেকে নিবন্ধন ফি নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। ডিজিটাল কমার্স নীতিমালা না মানলে ডিবিআইডি দেওয়া হবে না বলেও জানান তিনি। ডিবিআইডি নিবন্ধনের বিষয়ে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে এ আয়োজনের জন্য এসএমই ফাউন্ডেশনকে তিনি ধন্যবাদ জানান।

এনএইচ/এমআইএইচএস/এমএস