একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার এখন পর্যন্ত রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের ছয়টি নিষ্পত্তি এবং দণ্ড কার্যকর হয়েছে চারটি। আপিলের সপ্তম মামলায় নিজামীর বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার এখন পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের অপেক্ষা। এবার আরেক জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর আপিল নিস্পত্তির পালা।মৃত্যুদণ্ডের বিরেদ্ধে মীর কাসেম আলীর দায়ের করা আপিলের শুনানি আগামী ২ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের বিশেষে বেঞ্চে এ মামলার আপিল শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ গত ৬ জানুয়ারি এই দিন ধার্য করে দেন। সে হিসেবে চলতি সপ্তাহে শুরু হতে যাচ্ছে এই মামলার শুনানি। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আপিল বিভাগ পেরিয়ে চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হতে এ মামলায় আরো সময় লাগবে।এর আগে আপিল বিভাগে আবদুল কাদের মোল্লা, মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী ও মতিউর রহমান নিজামীর আপিলের রায় ঘোষণা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত যেসব আসামির আপিল নিষ্পত্তি হয়েছে তার মধ্যে একমাত্র সাকা চৌধুরী ছাড়া বাকি সবাই জামায়াতে ইসলামীর নেতা। একমাত্র সাকা চৌধুরী ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য।কাদের মোল্লা ও কামারুজ্জামান জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং সেক্রেটারি জেনারের ছিলেন মুজাহিদ। তাদের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালের দেয়া মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। জামায়াতের আমির নিজামীর আপিলের রায় হলেও এখনো পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হয়নি। জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মামলা রিভিউ শুনানির অপেক্ষায়। দিন ক্ষণ ঠিক হলেই রিভিউ শুনানি শুরু হবে।একাত্তরে মানবতাবিরোধী ঘাতক সংগঠন আলবদর বাহিনীর চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রধান, বর্তমানে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মীর কাসেম আলীকে ২০১৪ সালে মৃত্যুদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সর্বোচ্চ দণ্ড দেওয়া হয় মীর কাসেম আলীকে।জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের এই সাবেক সভাপতির বিরুদ্ধে মোট ১৪ অভিযোগের মধ্যে ১০টি প্রমাণিত হয় ট্রাইব্যুনালে। প্রমাণ না হওয়ায় বাকি চারটি অভিযোগ থেকে খালাস দেয়া হয় তাকে। রায়ের বিরুদ্ধে একই বছরের ৩০ নভেম্বর আপিল করেন তার আইনজীবীরা।এর আগে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ২০১২ সালের ১৭ জুন গ্রেফতার করা হয় মীর কাসেমকে। তখন থেকেই তিনি ট্রাইব্যুনালের নির্দেশে কারাগারে রয়েছেন। ২০১৩ সালের ১৬ মে ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের মধ্য দিয়ে বিচার শুরু হয় সেপ্টেম্বর মাসে। ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর রায় দেন ট্রাইব্যুনাল।এফএইচ/আরএস/এমএস
Advertisement