দেশজুড়ে

নারায়ণগঞ্জে রাত জেগে গার্মেন্টস পাহারা দিচ্ছেন শ্রমিকরা

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার বিসিক শিল্পনগরীর একটি রফতানিমুখী পোশাক কারখানায় শ্রমিকদের বেতন না দিয়ে মালিক আত্মগোপনে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধ না করে বৃহস্পতিবার রাতের আধারে কারখানার মালামাল নিয়ে যাওয়ার সংবাদে রাত জেগে গার্মেন্টস পাহারা দিয়েছেন শ্রমিকরা। এদিকে শ্রমিকদের চাকরিচ্যুত করার উদ্দেশ্যে সাড়ে ১১ লাখ টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় কারখানার বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন।কারখানা বন্ধ রেখে মালিক আত্মগোপনে চলে যাওয়ায় কর্মকর্তারা শ্রমিকদের রাখছে না কোনো খোঁজখবর। এতে করে কারখানার দুই শতাধিক শ্রমিক তাদের পাওনা বুঝে পেতে বিদ্যুৎবিহীন কারখনায় অন্ধকারে রাত পার করেছেন বলে শ্রমিকরা জানান।   শ্রমিকদের অভিযোগ, ফতুল্লার শিল্পাঞ্চল বিসিক নগরীর ২নং রোডে অবস্থিত ‘আনার কলি গার্মেন্টসের মালিক মালিক আশরাফুল হক সোহেল গত ৪দিন পূর্বে বিদ্যুতের লাইন কেটে দেয়ার পর শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ না করে আত্মগোপনে চলে যান। এছাড়াও বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করে কারখানাটি অন্যত্র সড়িয়ে নিতে নানা পরিকল্পনা করেন তিনি। এমনকি শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধ না করে রাতের আধারে কারখানায় থাকা মেশিনপত্রসহ মালামাল নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। শ্রমিকদের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত না নিয়ে মালিকপক্ষের লোকজন বৃহস্পতিবার দুপুরে কারখানায় আসলেও কোনো সিদ্ধান্ত না দিয়ে কারখানার পেছনের গেইট দিয়ে পালিয়ে যায়। এতে করে ফুসে উঠে শ্রমিকরা। পরে বৃহস্পতিবার রাতে কারখানার দারোয়ানের হাত পা বেঁধে মালামাল নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করার সংবাদে শ্রমিকরা ছুটে আসে। এসময় শ্রমিকদের তোপের মুখে মালিকের লোকজন পালিয়ে যায়। আর মালিকের লোকজন রাতের আধারে গার্মেন্টসের মালামাল বের করে নিয়ে যেতে না পারে সেই জন্য রাত জেগে গার্মেন্ট পাহারায় আছেন নারী-পুরুষ দুই শতাধিক শ্রমিক। শ্রমিকরা জানান, ঢাকার শ্যামপুর এলাকায় তাদের আরেকটি গার্মেন্টস কারখানা রয়েছে। এক মাস যাবৎ মালিক কৌশলে আনারকলি গার্মেন্টস থেকে মূল্যবান মেশিন ও শিপমেন্টের অধিকাংশ মালামাল নিয়ে গেছেন ওই কারখানায়। এর মধ্যে গত ২৪ জানুয়ারি বকেয়া বিল না পেয়ে কারখানার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন। এরপর থেকে কারখানায় আসেন না মালিক ও ম্যানেজারসহ মালিক পক্ষের লোকজন। আর শ্রমিকরা ৫দিন যাবত সকালে কারখানায় এসে অন্ধকারে বসে থেকে দিন কাটিয়ে রাতে বাসায় ফিরে। এরমধ্যে বৃহস্পতিবার দিনগত রাত ১টার পর থেকে মালিক পক্ষ চেষ্টা করেছেন রাতের অন্ধকারে কারখানার মালামাল বের নিয়ে যাওয়ার। আমরা খবর পেয়ে রাত থেকে সকাল পযর্ন্ত কারখানার সামনেই বসে আছি। একাধিকবার থানায় ফোন করেও পুলিশের কোনো সহযোগিতা পাইনি।এ ব্যাপারে মালিকপক্ষের বক্তব্য নিতে কারো মোবাইল নম্বর বা ঠিকানা পাওয়া যায়নি।ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুর রাজ্জাক জানান, কারখানার মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা চলছে। মালিক বা ম্যানেজার কাউকে পেলে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে।গার্মেন্টস মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ এর সহ-সভাপতি (অর্থ) ও লেবার স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান জিএম ফারুক জানান, এ বিষয়ে আমাদের কাছে কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই আলোচনা সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তারপরেও আমরা নিজেরা খোঁজ খবর নিচ্ছি। শাহাদাত/এমএএস

Advertisement