স্কটল্যান্ড এবং নামিবিয়া যুবাদের ম্যাচ দিয়ে অভিষেক হলো কক্সবাজার শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের। প্রথমবারের মত এ স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে কেন্দ্র করে ভেন্যু, হোটেল ও জেলা শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো ঢেকে ফেলা হয়েছে নিরাপত্তার চাদরে। পোশাকধারী পুলিশ ছাড়াও র্যাব, বিজিবি এবং সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। এমনকি নিরাপত্তা রক্ষায় জিপিএস পদ্ধতি, ভেহিকেল স্ক্যানার, ডগ স্কোয়াড, ভেন্যু অপারেশন কমান্ড স্থাপনসহ ব্যবহার করা হচ্ছে বিভিন্ন আধুনিক প্রযুক্তি।যুব বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে পুরো স্টেডিয়ামকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গত এক সপ্তাহ ধরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ‘নিরাপত্তা মহড়া’ দিয়ে জানান দেয় নিজেদের উপস্থিতি। এ প্রসঙ্গে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলী চৌধুরী জানান, জেলা শহরে পোশাকধারী ৭৫১ জন পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে। এছাড়া দায়িত্ব পালন করছেন র্যাব, বিজিবি এবং সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন বলেন, “আমরা কোনো ঝুঁকি নিতে চায়নি। যুব বিশ্বকাপের কক্সবাজার ভেন্যুতে চলমান খেলাগুলো সুষ্টুভাবে সম্পন্ন করতে পারার উপর নির্ভর করছে ভেন্যুটির আগামীর ভবিষ্যত। এ আসরের সফলতা উপরই এখানে অনুষ্ঠিত হবে বড়দের আন্তর্জাতিক খেলাও। তাই জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় রেখে কক্সবাজার ভেন্যু, খেলোয়াড়দের নির্ধারিত হোটেল ও জেলা শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বিপুল সংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।”এছাড়া নিরাপত্তা রক্ষায় জিপিএস পদ্ধতি, ভেহিকেল স্ক্যানার, ডগ স্কোয়াড, ভেন্যু অপারেশন কমান্ড স্থাপনসহ বিভিন্ন আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।তিনি আরো জানান, খেলার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা বজায় থাকবে। নিরাপত্তার প্রয়োজনে সেনাবাহিনীর সহায়তাও পাওয়া যাবে, সেভাবে প্রস্তুতি রয়েছে। কক্সবাজার জেলা ক্রিড়া সংস্থা (ডিএসএ)’র সাধারণ সম্পাদক অনুপ বড়ুয়া অপু বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সু-দৃষ্টির কারণে আজ ক্রিকেট বিশ্বের খাতায় আন্তর্জাতিক ভেন্যু হিসেবে কক্সবাজার স্থান করে নিয়েছে। যুব বিশ্বকাপ আসরের মধ্য দিয়ে পূর্ণতা লাভ করলো দরিয়াপাড়ের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম। এটি কক্সবাজারবাসীর জন্য বিশাল পাওয়া।”বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কক্সবাজার কাউন্সিলর ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল করিম মাদু বলেন, “ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও কক্সবাজারের এ নতুন ইতিহাসে অংশিদার বানাতে সবাইকে সুযোগ করে দিতে পারিনি। এরপরও প্রশাসন ও ডিএসএ’সহ সর্বস্তরের আন্তরিক সহযোগিতা পাচ্ছে আয়োজকরা। সাগর পাড়ের নয়ানিভিরাম এ স্টেডিয়াম ক্রিকেট বিশ্বে একদিন অন্যতম সেরা ভেন্যুতে পরিণত হবে। বড়দের বিশ্বকাপ খেলাও এখানে অনুষ্ঠিত হবে, সেদিন বেশি দূরে নয়।”উল্লেখ্য, অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ দেশের আটটি ভেন্যুতে মোট ৪৮টি ম্যাচ হবে। এর মধ্যে সাগর পাড়ের কোল ঘেষে দৃষ্টিনন্দন পরিবেশে গড়ে তোলা কক্সবাজার ভেন্যুতে থাকছে ১৭টি ম্যাচ। গ্রুপ পর্বের ৫টি ম্যাচ এবং প্লেট পর্বের সবগুলো ম্যাচ অর্থাৎ ১২টি ম্যাচ হবে কক্সবাজারে। মূল মাঠে ম্যাচ গড়াবে ৯টি, একাডেমি মাঠে ৮টি। কক্সবাজারে অনুষ্ঠিতব্য গ্রুপ পর্বের ম্যাচের সূচি:২৯ জানুয়ারি : স্কটল্যান্ড বনাম নামিবিয়া (মূলমাঠ)৩১ জানুয়ারি : বাংলাদেশ বনাম স্কটল্যান্ড (মূল মাঠ), দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম নামিবিয়া (একাডেমি মাঠ),০২ ফেব্রুয়ারি : বাংলাদেশ বনাম নামিবিয়া (মূলমাঠ), দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম স্কটল্যান্ড (একাডেমি মাঠ)।প্লেট পর্বের সময়সূচি:০৪ ফেব্রুয়ারি : প্লেট কোয়ালিফাই-১ (মূল মাঠ), প্লেট কোয়ালিফাই-৩ (একাডেমি মাঠ)০৫ ফেব্রুয়ারি : প্লেট কোয়ালিফাই-২ (মূল মাঠ), প্লেট কোয়ালিফাই-৪ (একাডেমি মাঠ)০৭ ফেব্রুয়ারি : প্লেট পে-অফ-১ (মূল মাঠ)০৮ ফেব্রুয়ারি : প্লেট সেমিফাইনাল-১ (মূল মাঠ), প্লেট পে-অফ-২ (একাডেমি মাঠ)০৯ ফেব্রুয়ারি : প্লেট সেমিফাইনাল-২ (একাডেমি মাঠ)১০ ফেব্রুয়ারি : প্লেট ১৩তম স্থান নির্ধারণী (মূল মাঠ)১১ ফেব্রুয়ারি : প্লেট ১৫তম স্থান নির্ধারণী (একাডেমি মাঠ)১২ ফেব্রুয়ারি : প্লেট ১১তম স্থান নির্ধারণী (একাডেমি মাঠ), প্লেট ফাইনাল (মূল মাঠ)।আরটি/আরএস/পিআর
Advertisement