ঈদুল আজহার তৃতীয় দিন সাভারের আমিনবাজারে পশুর চামড়ার সরবরাহ ও কেনাবেচা কম বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। কোরবানির গরুর চামড়া কেনাবেচা হলেও বিক্রি হচ্ছে না ছাগলের চামড়া।
Advertisement
মঙ্গলবার (১২ জুলাই) বাজার ঘুরে দেখা যায়, ব্যাপারীরা কেনার অপেক্ষায় থাকলেও পর্যাপ্ত গরুর চামড়া আসছে না। আগে কেনা চামড়া লবণ দিয়ে শেডের নিচে ফেলে রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত রিকশা-ভ্যানে করে ২৫-৩০টি চামড়া এসেছে বলে জানা যায়।
আরও দেখা যায়, অনেকে দূর-দূরান্ত থেকে এসে বিনামূল্যে ছাগলের চামড়া দিয়ে যাচ্ছেন। অনেক ব্যাপারী বিনামূল্যেও চামড়া নিতে রাজি হচ্ছেন না। তবে, বড় ভেড়ার চামড়া বিক্রি হতে দেখা যায়।
ব্যাপারীরা বলছেন, ছাগলের চামড়া কিনে প্রক্রিয়াজাত থেকে বিক্রি করা পর্যন্ত যে খরচ হবে, ট্যানারিতে বিক্রি করে তা উঠবে না।
Advertisement
এদিকে সরকার নির্ধারিত মূল্য কিংবা মাপজোখ ছাড়াই চামড়া বিক্রি করতে দেখা যায় অনেককে। ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ই এবার চামড়ার দামে সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন।
গতবছরের তুলনায় এবার প্রতি বর্গফুটে সাত টাকা বাড়িয়ে কোরবানির গরু ও খাসির চামড়ার দাম নির্ধারণ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
এবার ঢাকায় কোরবানির গরুর প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৭-৫২ টাকা। গতবছর ঢাকায় গরুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪০-৪৫ টাকা। আর ঢাকার বাইরে প্রতি বর্গ ফুট গরুর চামড়ার দাম ধরা হয়েছে ৪০-৪৪ টাকা, যা গতবছর ছিল ৩৩-৩৭ টাকা।
এবার সারাদেশে প্রতি বর্গফুট খাসির চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮-২০ টাকা। গতবছর এ দাম ছিল ১৫-১৭ টাকা।
Advertisement
চামড়া ব্যাপারী মোহাম্মদ সোহেল জাগো নিউজকে বলেন, প্রথম দিন অনেক চামড়া পেয়েছি, কিন্তু আজ (মঙ্গলবার) বাজারে চামড়ার সরবরাহ একেবারেই কম। দুপুর ১২টা পর্যন্ত মাত্র দুই-তিন ভ্যান চামড়া এসেছে। ঈদের তৃতীয় দিন পশু কোরবানি কম দেওয়া হয় বলেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
চোখের আন্দাজে চামড়া কেনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আজ ক্রেতা কম। ঈদের দিন প্রচুর চামড়া এসেছে, মাপামাপির সময় ছিল না। কেউ মাপতেও চাননি। চামড়ার দাম ভালো হওয়ায় এ নিয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। এবার চামড়া ৮০০ থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে।
তিনি বলেন, এবার ছাগলের চামড়ার দাম নেই। অনেকেই আমাদের কাছে বিনামূল্যে ছাগলের চামড়া দিয়ে গেছেন। আমরা বিক্রি করতে না পেরে রাস্তার পাশে ফেলে রেখেছি। কোথাও কোথাও চার-পাঁচটা বিক্রি হয়েছে বলে শুনেছি। চামড়া কিনে যে টাকার লবণ দেওয়া লাগে, সেটাও এবার ছাগলের চামড়া বিক্রি করে উঠবে না।
আরেক ব্যবসায়ী আশাদুল বলেন, আজ আমরা চামড়া কেনা বন্ধ রেখেছি। যেগুলো কিনেছি, সেগুলোই প্রক্রিয়াজাত করছি। তবে, এবার সবাই ভালো দাম পেয়েছে। গরুর চামড়া কোথাও ফেলে দেওয়ার ঘটনা ঘটেনি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবার পুরান ঢাকার পোস্তা বাজারের চেয়ে আমিনবাজারে বেশি চামড়া এসেছে। এর প্রধান কারণ, সাভারে ট্যানারি শিল্পকেন্দ্রিক বাণিজ্য। অন্যদিকে আমিনবাজারের যাতায়াত সহজ, পোস্তা যাওয়ার পথে প্রচুর যানজট থাকে। তাছাড়া মিরপুর, টেকনিক্যাল, শ্যামলী, আশুলিয়া, হেমায়েতপুরসহ ঢাকার চারপাশ থেকে চামড়া আমিনবাজারে ঢুকেছে।
এসএম/এসএএইচ/এএসএম