আন্তর্জাতিক

শিনজো আবের শেষকৃত্য আজ

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে মঙ্গলবার (১২ জুলাই)। শুক্রবার (৮ জুলাই) শহর নারায় নির্বাচনী প্রচারণার অনুষ্ঠানে ঘাতকের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন ৬৭ বছর বয়সী শিনজো আবে। তার এমন মৃত্যুতে হতবাক গোটাবিশ্ব।

Advertisement

এর আগে সোমবার (১১ জুলাই) প্রিয় নেতাকে শ্রদ্ধা জানান সর্বস্তরের মানুষ। জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের মরদেহ টোকিওতে তার বাড়িতে নেওয়া হয় গত ৯ জুলাই।

জানা গেছে, টোকিওতে তার পরিবার ও আবের সহযোগীরা ছোট পরিসরে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন করবেন। সম্প্রচার মাধ্যম এনএনএন জানিয়েছে, আবের মরদেহ বহনকারী গাড়িটি শেষবারের মতো বিদায়ের জন্য প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ও সংসদ ভবনের পাশ দিয়ে নেওয়া হবে।

রাজনীতিবিদ, কূটনীতিক ও ব্যবসায়ী নেতাসহ সর্বস্তরের মানুষ সোমবার রাতে রাজধানীর একটি বৌদ্ধ মন্দিরে আবের জন্য রাত জাগেন। টোকিওতে তার ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির সদর দপ্তর এবং যেখানে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল সেই স্থান ফুলেল শ্রদ্ধায় ভরে ওঠে। দীর্ঘ মেয়াদে ২০২০ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকাকালে দেশের অর্থনীতিকে আমূল বদলে দিয়েছেন শিনজো আবে। দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ককে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়।

Advertisement

প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী আবে যে বিষয়গুলো নিয়ে আবেগপ্রবণ ছিলেন, সেগুলো আমি তুলে ধরবো।’ এর মধ্যে রয়েছে জাপানের শান্তিবাদী সংবিধান পরিবর্তন করার চেষ্টা করা যাতে তার সামরিক বাহিনীর বৈধতা স্পষ্ট হয়।

দেশটির পুলিশ জানায়, হামলাকারী যুবকের নাম তেতসুয়া ইয়ামাগামি। তিনি ওই এলাকারই বাসিন্দা। ৪১ বছর বয়সী তেতসুয়া জাপানের সামুদ্রিক আত্মরক্ষা বাহিনীর সাবেক সদস্য।

তেতসুয়া ইয়ামাগামি বিশ্বাস করতেন, ‘তার মায়ের ঋণখেলাপির জন্য আবে দায়ী। এ কারণে কয়েক মাস ধরে পরিকল্পনা করে শুক্রবার জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের ওপর হামলা চালান তিনি।’

বেকার ছিলেন তেতসুয়া ইয়ামাগামী। তিনি শিনজো আবেকে পেছন থেকে গুলি করেন। গুলি চালানোর পর নির্বিকারও ছিলেন তিনি। তাকে পালাতে দেখা যায়নি।

Advertisement

ফ্যামিলি ফেডারেশন ফর ওয়ার্ল্ড পিস অ্যান্ড ইউনিফিকেশনের জাপানি অ্যাফিলিয়েট, যা পূর্বে ইউনিফিকেশন চার্চ নামে পরিচিত ছিল, নিশ্চিত করেছে যে সন্দেহভাজন ওই হামলাকারীর মা একজন সদস্য ছিলেন।

বিশ্বজুড়ে নেতারা আবেকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। ২০০৬ থেকে ২০০৭ এবং এরপর ২০১২ থেকে টানা ২০২০ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন তিনি। তার দুটি মেয়াদে অর্থনৈতিক স্থবিরতা থেকে রক্ষা পায় জাপান। তিনি একজন নিরাপত্তা বাজপাখি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জাপানের জোটের একজন রক্ষক এবং যুদ্ধোত্তর বিশ্বব্যবস্থা বজায় রাখার জন্য একজন উকিল ছিলেন।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন সোমবার টোকিওতে একটি সংক্ষিপ্ত যাত্রাবিরতি করেন। আবের পরিবারের কাছে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছ থেকে একটি সমবেদনাপত্র পৌঁছে দেন তিনি। তাইওয়ানের ভাইস প্রেসিডেন্টও তাকে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েছিলেন। আবে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়ার পর থেকে তাইওয়ানে চীনা আক্রমণের শঙ্কা নিয়ে ক্রমশ সোচ্চার ছিলেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তার পরিবার দীর্ঘদিন ধরে তাইওয়ানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কও বজায় রেখেছিলেন।

এদিকে, শিনজো আবের দল এলডিপি রোববারের উচ্চকক্ষের নির্বাচনে জয় লাভ করেছে। ফলে ফুমিও কিশিদাই প্রধানমন্ত্রী থাকছেন দেশটির।

সূত্র: ব্লুমবার্গ

এসএনআর/জেআইএম